ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

রেল ধ্বংসের পেছনে বাস মালিকদের সিন্ডিকেট কাজ করছে

প্রকাশিত: ০০:৪৩, ২ এপ্রিল ২০১৬

রেল ধ্বংসের পেছনে বাস মালিকদের সিন্ডিকেট কাজ করছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দাতাগোষ্ঠীর প্রেসক্রিপশনে রেল খাতকে ধ্বংস করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। শনিবার সিপিবি ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)-এর উদ্যোগে ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ ‘রেল রক্ষা অভিযাত্রা’র সূচনা-সমাবেশে সেলিম একথা বলেন। তিনি বলেন, সাশ্রয়ী, পরিবেশবান্ধব, নিরাপদ বলে পণ্য পরিবহন ও যাতায়াতের জন্য রেলের বিকল্প কেবল রেল। সাধারণ মানুষ এখনো রেলের ওপর নির্ভর করেন। কিন্তু সরকার রেলের উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন না করে পরিকল্পিতভাবে রেলকে ধ্বংস করছে। রেলের ক্ষেত্রে গণবিরোধী ও ভুল নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে। বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবিসহ দাতাগোষ্ঠীর প্রেসকিপশন অনুসরণ করে রেলকে ধ্বংস করা হচ্ছে। কমলাপুর রেলস্টেশনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বাসদ-এর সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কাফি রতন, টিইউসি’র নেতা আসলাম খান। সমাবেশে সেলিম আরো বলেন, নানামুখী সংকটে রেল এখন নিমজ্জিত। রেল ধ্বংসের পেছনে বাসমালিকদের সিন্ডিকেটও কাজ করছে। সরকার বাসমালিকদের এই সিন্ডিকেটকে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে। রেলের বরাদ্দ লুটপাট হয়ে যাচ্ছে। রেলের জায়গা দখল হয়ে যাচ্ছে। প্রতি বছর রেলের ভাড়া বাড়ানো হচ্ছে। আর রেলের ভাড়া বৃদ্ধির সাথে সাথে লোকসানও বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারণ লাফিয়ে লাফিয়ে লুটপাট-দুর্নীতি বেড়েই চলেছে। রেল বাঁচাতে প্রয়োজন তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা। সমাবেশে খালেকুজ্জামান বলেন, রেলে অভিজ্ঞ জনবল ক্রমশ কমে যাচ্ছে। দক্ষ কর্মী গড়ে তোলা হচ্ছে না। কারখানাগুলো অকার্যকর করে ফেলে রাখা হয়েছে। স্টেশন, ইঞ্জিন এবং কর্মচারী কমলেও রেলের ব্যয় বেড়েছে দ্বিগুণ। যাত্রীসবার মান কমে যাচ্ছে। রেলের রেলের লোকসান চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে যাত্রীদের ওপর। অথচ রেলের বর্তমান ভাড়া কমিয়েই রেলকে লাভজনক করা সম্ভব। ফ্লাইওভারের পেছনে কোটি কোটি টাকা খরচ করলেও, রেলে ডবল লাইন চালু করা হচ্ছে না। রেল বাঁচাতে দেশবাসীকে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানাই। সমাবেশ শেষে সিপিবি-বাসদ-এর নেতা-কর্মীরা কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ট্রেনে করে নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশে যাত্রা করেন। রেলের মধ্যে তাঁরা যাত্রীদের সঙ্গে রেল রক্ষার আন্দোলন গড়ে তোলার ব্যাপারে মতবিনিময় করেন। যাত্রাকালে সিপিবি-বাসদ-এর নেতৃবৃন্দ গে-ারিয়া, ফতুল্লা, পাগলা, চাষাড়া রেলস্টেশনে যাত্রীদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন। সবশেষে নারায়ণগঞ্জ রেলস্ট্রেশনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। রেলস্ট্রেশনগুলোতে উপস্থিত সিপিবি-বাসদ-এর নেতাকর্মীরা এবং সাধারণ যাত্রীরা ‘রেল রক্ষা অভিযানে’ অংশগ্রহণকারী নেতা-কর্মীদের শুভেচ্ছা জানান। উল্লেখ্য, আগামী ৯ এপ্রিল পর্যন্ত সিপিবি-বাসদ-এর ‘রেল রক্ষা অভিযাত্রা’ চলবে। ঈশ্বরদী থেকে সৈয়দপুর, ময়মনসিংহ থেকে কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ থেকে নেত্রকোণা, সিলেট থেকে শায়েস্তাগঞ্জ, চট্টগ্রাম থেকে কুমিল্লা, চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী, চট্টগ্রাম থেকে হাটহাজারী, রাজশাহী থেকে ঈশ্বরদী, রাজশাহী থেকে চাপাইনবাবগঞ্জ, খুলনা থেকে ঈশ্বরদী, লালমনিরহাট থেকে গাইবান্ধা, বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ, দিনাজপুর থেকে জয়পুরহাট, ফরিদপুর থেকে রাজবাড়ীসহ বিভিন্ন রুটে সিপিবি-বাসদ-এর ‘রেল রক্ষা অভিযাত্রা’ অনুষ্ঠিত হবে।
×