ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

উচ্চ আদালতের নির্দেশ ৩ বছরেও বাস্তবায়ন করেনি লক্ষ্মীপুর চীফ জুডিশিয়াল আদালত

প্রকাশিত: ০২:২৬, ২ এপ্রিল ২০১৬

উচ্চ আদালতের নির্দেশ ৩ বছরেও বাস্তবায়ন করেনি লক্ষ্মীপুর চীফ জুডিশিয়াল আদালত

নিজস্ব সংবাদদাতা, লক্ষ্মীপুর ॥ লক্ষ্মীপুর চীফ জুডিশিয়াল আদালতে বিভিন্ন শাখায় বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে নয় জনকে নিয়োগের জন্য উচ্চ আদালতের নির্দেশ দিলেও তা তিন বছরে বাস্তবায়ন করেনি লক্ষ্মীপুর চীফ জুডিশিয়াল আদালত। সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছেন নিয়োগ প্রার্থীরা। তিন বছরেও নিয়োগ না পাওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতন জীবন যাপন করেছেন তারা। অনতিবিলম্ভে আদালতের নিদের্শ বাস্তবায়ন করার দাবী জানান ভূক্তভোগীরা। শনিবার বিকেলে জেলা শহরের বাগবাড়ি এলাকায় স্থানীয় একটি পত্রিকায় কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মফিজুল ইসলাম, আবদুল মান্নান ও আনোয়ার হোসেন জানান, ২০১১ সালের ১০ অক্টোবর লক্ষ্মীপুর চীফ জুডিশিয়াল আদালতে ষ্টেনোগ্রাফার, ষ্টেনো টাইপিষ্ট, তুলনা সহকারী, বেঞ্জ সহকারী, অফিস সহকারী (কাম-কম্পিউটার) অপারেটর, ড্রাইভার, প্রেসস সার্ভার ও এমএলএস পদে লোক নিয়োগ করা হবে বলে বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন লক্ষ্মীপুর চীফ জুডিশিয়াল আদালতের তাৎকালীন বিচারক মোঃ আওলাদ হোসেন ভূইঁয়া। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর বিভিন্ন পদে আবেদন করি। ২০১২ সালের ৮ ও ৯ জুন লিখিত, মৌখিক এবং ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করি। একই বছরের ৯জুন আমাদেরসহ অন্যদের নিয়োগের জন্য চুড়ান্ত করে জেলা ও দায়রা জজের কার্যালয়ের নোটিশ বোর্ডে তালিকা প্রকাশ করা হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে আদালত নিয়োগ না দেয়ায় ২০১৩ সালে সুপ্রীমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে মোঃ মাইন উদ্দিন একটি রীট পিটিশন দায়ের করে। রীট পিটিশনের ওপর আদালত দীর্ঘ শুনানী করে একই বছরে ২৫ সেপ্টেম্বর ৬০দিনের মধ্যে রিট পিটিশন কারীদেরকে সুপ্রীমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ নিয়োগ দেয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। এরপরও আদালতের নির্দেশে বাস্তবায়ন না করায় ২০১৪ সালের ৯ ফেব্রুয়ারী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের তাৎকালীন বিচারক মঞ্জুরুল বাসেদ ও চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আওলাদ হোসেন ভূইঁয়ার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়। পরে আদালত উক্ত দুই বিচারকের বিরুদ্ধে রুল জারী করে। বর্তমানে এই দুই বিচারক রংপুর ও কিশোরগঞ্জ আদালতে কর্মরত রয়েছেন। এরপর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মঞ্জুরুল বাসেদ আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে ২০৩দিন পর ২০১৪ সালে সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগে লিভ টু আপীল দায়ের করেন। ২০১৫ সালের ২৭ এপ্রিল সুপ্রীমকোর্টের প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার (এস কে সিনহা) নেতৃত্বে চার সদস্যের বেঞ্চ লিভ টু আপীল খারিজ করে দেন। এরপরও আদালতের নিদের্শ বাস্তবায়ন না করায় উক্ত মামলাটি পুনরায় চালু করলে হাইকোর্টের বিচারক সৈয়দ মোঃ দস্তগীর এবং একেএম শহিদুল হকের সমন্বয়ে বেঞ্চ চলতি বছরের ৩মার্চ শুনানীক্রমে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আখতার হোসেন ও চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মহিদুজ্জামানকে উক্ত রীট পিটিশনে আওতাভূক্ত করে রুল জারি করেন। বর্তমানে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আখতার হোসেন(অবসর গ্রহন করেন) এবং চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মহিদুজ্জামান বদলি হয়ে মেহেরপুর আদালতে কর্মরত রয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, নিয়োগ প্রার্থী মাইন উদ্দিন, আবদুল মান্নান, মফিজুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, সুদেব চন্দ্র ভৌমিক ও আশরাফুল ইসলাম। বর্তমানে তাদের সরকারী চাকুরীর নতুন আবেদনের বয়সও পাও হয়ে যাওয়ায় মানুষিক যন্ত্রনায় অস্থির হয়ে পড়েছেন এ নিয়োগ প্রার্থীরা। কীভাবে যাবে আগামী দিনের ভবিষ্যৎ ভেবে দিশেহারা।
×