ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কাল এসএসসির ফল ॥ কলেজে ভর্তি নীতিমালা চূড়ান্ত

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ১০ মে ২০১৬

কাল এসএসসির ফল ॥ কলেজে ভর্তি নীতিমালা চূড়ান্ত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগামীকাল প্রকাশ করা হচ্ছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল। সকালে প্রধানমন্ত্রীর কাছে কপি হস্তান্তরের পর দুপুর একটায় সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিকভাবে সারাদেশের ফল প্রকাশ করবেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এদিকে আগামী ২৬ মে থেকে সারাদেশে শুরু হচ্ছে কলেজ ভর্তি কার্যক্রম। ভর্তি আগের মতোই হবে অনলাইনে। তবে এবার একজন শিক্ষার্থী পাঁচটির পরিবর্তে ১০ কলেজে এক সঙ্গে পছন্দক্রম দিয়ে আবেদন করতে পারবে। সোমবার সচিবালয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ভর্তি নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগামীকাল প্রকাশ করা হচ্ছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল। সকালে প্রধানমন্ত্রীর কাছে শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানদের নিয়ে ফলের কপি হস্তান্তর করবেন শিক্ষামন্ত্রী। এরপর দুপুর একটায় শিক্ষামন্ত্রী সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিকভাবে ফল প্রকাশ করবেন। এরপরই স্ব স্ব কেন্দ্র, বিদ্যালয়, শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট, মোবাইলে এসএমএস পাঠিয়ে ফল জানতে পারবে পরীক্ষার্থীরা। যে কোন মোবাইল অপারেটর থেকে এসএমএস করে ফল জানা যাবে। এসএসসি লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০১৫ লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠালে ফিরতি এসএমএসে ফল জানা যাবে। শিক্ষা বোর্ডগুলোর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট (িি.ি বফঁপধঃরড়হনড়ধৎফৎবংঁষঃং.মড়া.নফ) থেকেও পরীক্ষার্থীরা ফল জানতে পারবে। ওয়েবসাইট থেকে ফলাফল ডাউনলোড করেও নেয়া যাবে। গত ১ ফেব্রুয়ারি সারাাদেশে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়। লিখিত পরীক্ষা শেষ হয় ১০ মার্চ। পরীক্ষায় ১৬ লাখ ৫১ হাজার ৫২৩ শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে ৮টি বোর্ডের অধীনে এসএসসিতে ১৩ লাখ ৪ হাজার ২৭৪ জন, মাদ্রাসা বোর্ডের অধীন দাখিলে দুই লাখ ৪৮ হাজার ৮৬৫ ও কারিগরি বোর্ডের এসএসসি ভোকেশনালে (কারিগরি) ৯৮ হাজার ৩৮৪ শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছে। এবার তিন হাজার ১৪৩টি কেন্দ্রে ২৮ হাজার ১১৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। এদিকে ফল প্রকাশের পর ২৬ মে থেকে সারাদেশে শুরু হচ্ছে কলেজ ভর্তি কার্যক্রম। ভর্তি আগের মতোই হবে অনলাইনে। এবার একজন শিক্ষার্থী ১০টি কলেজে এক সঙ্গে পছন্দক্রম দিয়ে আবেদন করতে পারবে। গতবার পাঁচটি কলেজে পছন্দক্রম দেয়ার সুযোগ ছিল। শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়। সভা শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের সভার সিদ্ধান্তের কথা জানান। সভায় বিভিন্ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ও কয়েকটি কলেজের অধ্যক্ষরা উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ভর্তির আবেদন অনলাইনের পাশাপাশি নির্ধারিত পদ্ধতিতে মুঠোফোনে খুদেবার্তার মাধ্যমেও করা যাবে। আবেদন করা যাবে ২৬ মে থেকে। আবেদন করার শেষ তারিখ ৯ জুন। ভর্তি ফিসহ অন্য বিষয়গুলো গতবারের মতই থাকছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ১৬ জুন মেধাতালিকা প্রকাশ করা হবে। ১৮ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা কলেজে ভর্তি হতে পারবে। পরের সপ্তাহ ঈদের বন্ধ থাকবে, বন্ধের পর ১০ জুলাই ক্লাস শুরু হবে। তবে বিলম্ব ফি দিয়ে ১০ থেকে ২০ জুলাই ভর্তি হওয়া যাবে। তিনি বলেন, এবার প্রবাসীদের সন্তানদের জন্য শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ এবং বিকেএসপির শিক্ষার্থীদের জন্য শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ কোটা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। কারিগরি জটিলতায় নির্ধারিত সময়ের তিন দিন পর গত বছর একাদশ শ্রেণীতে ভর্তিচ্ছুদের মেধা তালিকা প্রকাশ করে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব কমিটি। শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ বলেন, সবাই একমত হয়েই সিদ্ধান্তে এসেছি। এবার বড় ধরনের কোন পরিবর্তন নেই। গতবারের পদ্ধতিই অনুসরণ করা হবে। ভর্তি ফি ও অন্য বিষয় গতবারের মতোই রাখা হয়েছে। গত বছর বেশ কিছু ভুয়া আবেদন পড়েছিল জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কিছু কলেজ শিক্ষার্থীদের নামে নিজেরাই আবেদন করেছিল। এটা যেন কেউ করতে না পারে সেই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। মাধ্যমিক উত্তীর্ণ সব শিক্ষার্থীকে বোর্ড থেকে একটি গোপন পিন নম্বর দেয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এবার আগে টাকা জমা দিয়ে ভর্তির আবেদন করতে হবে, আর আবেদন করার সময় ওই পিন নম্বর লাগবে। শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, কলেজে যে আসন আছে তাতে এবারও আসন ফাঁকা থাকবে। আসনের জন্য কেউ ভর্তি হতে পারল না এমন হবে না। এরপরও যদি কেউ মনে করে সিস্টেমের কারণে তার পছন্দ হয়নি এমন কোন কলেজে ভর্তি হতে হয়েছে কিন্তু তার সুবিধাজনক কলেজে সিট ফাঁকা আছে তাহলে সে কলেজ পরিবর্তন করতে পারবে। বাধ্য হয়ে ভর্তি হওয়ার পর আসন খালি থাকলে পছন্দের কলেজে বদলি হতে কোন বাধা থাকবে না। বেনামি কোন কলেজ যেন শিক্ষার্থীরা পছন্দক্রমে না রাখে সেজন্য বোর্ডগুলো কলেজের তালিকা আগেই জানিয়ে দেবে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একটি ওয়ার্ডেই আইডিয়াল নামধারী ৭টি কলেজ রয়েছে। অনেকেই কনফিউজড হবেন, এটা দূর করতে আমরা ব্যবস্থা নেব। সভায় উপস্থিত সরকারী কলেজের অধ্যক্ষরা জানিয়েছেন, গত বছর অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়ায় সরকারী কলেজে তেমন কোন সমস্যা হয়নি। তারপরও দু’একটি কলেজ সমস্যার মুখে পড়েছিল। ভর্তির জন্য কোন ধরনের চাপ বা তদবির ছিল না। তবে পাশাপাশি বেসরকারী কলেজগুলোর ক্ষেত্রে পছন্দের কলেজে ভর্তি হতে না পারা এবং বিভাগ না থাকলেও অন্য বিভাগের মনোনয়ন নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। এমনকি ছেলেদের কলেজে মেয়েদের এবং মেয়েদের কলেজে ছেলেদের ভর্তির জন্য মনোনয়ন দেয়ার ঘটনাও ঘটেছিল। শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসাইন বলেছেন, গত বছর যে সমস্যগুলো হয়েছিল সে বিষয়ে আমরা বুয়েটের এক্সপার্টদের সঙ্গে আলোচনা করেছি, তারা আমাদের নিশ্চয়তা দিয়েছেন এবার কোন সমস্যা হবে না। সব শিক্ষার্থীর ভর্তির সুযোগ থাকবে জানিয়ে সচিব বলেন, ভর্তি হওয়া না হওয়া তার বিষয়।
×