ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

যুদ্ধাপরাধী বিচার

কিশোরগঞ্জ ও বি’বাড়িয়ার দুই রাজাকারের বিচার শুরুর নির্দেশ

প্রকাশিত: ০৬:০১, ১০ মে ২০১৬

কিশোরগঞ্জ ও বি’বাড়িয়ার দুই রাজাকারের বিচার শুরুর নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে কিশোরগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দুই রাজাকার সৈয়দ মোঃ হোসাইন ও মোঃ মোসলেম প্রধানের বিচার শুরুর নির্দেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্য শোনা ও সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ট্রাইব্যুনাল ৫ জুন দিন নির্ধারণ করেছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ সোমবার এ আদেশ প্রদান করেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সৈয়দ মোঃ হোসাইন (৬৪) ও কিশোরগঞ্জের মোঃ মোসলেম প্রধানের (৬৮) বিরুদ্ধে হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের ছয়টি অভিযোগ আনা হয়েছে। দুই আসামির মধ্যে কারাবন্দী মোসলেমকে এদিন অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য আদালতে হাজির করা হয়। অন্য আসামি সৈয়দ হোসাইন পলাতক। তিনি যুদ্ধাপরাধে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত পলাতক আসামি হাসান আলীর ছোট ভাই। অভিযোগ গঠনের শুনানিতে অভিযোগ পড়ে শুনিয়ে বিচারক মোসলেমের কাছে জানতে চান তিনি দোষী না নির্দোষ। এ সময় মোসলেম নিজেকে নির্দোষ দাবি করে সুবিচার চান। শুনানি শেষে আদালত দুই আসামিকে অভিযুক্ত করে বিচার শুরুর সিদ্ধান্ত দেন। আসামিপক্ষে শুনানি করেন আবদুস সাত্তার পালোয়ান। ২০১৪ সালের ১৩ নবেম্বর থেকে গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ দুই আসামির বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগের তদন্ত করেন প্রসিকিউশনের তদন্ত কর্মকর্তা হরি দেবনাথ। পরে তিনি ট্রাইব্যুনালে যে অভিযোগপত্র দেন, তাতে দুই আসামির বিরুদ্ধে ছয় ঘটনায় ৬২ জনকে হত্যা, ১১ জনকে অপহরণ ও আটকে রাখা, ২৫০টি বাড়িঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ আনা হয়। এ মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে মোট ৪৭ জনকে। ট্রাইব্যুনাল গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে গত বছর ৭ জুলাই কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার কামারহাটি গ্রাম থেকে মোসলেমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। হুসাইন-মোসলেমের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগে হত্যা-গণহত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, আটক, অপহরণ ও নির্যাতনের ছয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হরি দেবনাথ গত বছরের ১৩ নবেম্বর থেকে গত ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দীর্ঘ নয় মাস ২৫ দিন তাদের অপরাধের তদন্ত শেষ করেন। ৭ অক্টোবর তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ ও পরে প্রসিকিউশনের কাছে হস্তান্তর করেন তদন্ত সংস্থা। তদন্ত চলাকালে ৬০ জনের জবানবন্দী গ্রহণ করা হয়েছে। আর দুই আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবেন ৪০ জন সাক্ষী। ৭ জুলাই রাজাকার কমান্ডার সৈয়দ মোঃ হুসাইন ও তার সহযোগী মোহাম্মদ মোসলেম প্রধানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল-২। এ মামলার প্রধান আসামি পলাতক সৈয়দ মোঃ হুসাইন মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত কিশোরগঞ্জের তাড়াইল থানার রাজাকার কমান্ডার পলাতক সৈয়দ মোঃ হাসান আলী ওরফে হাছেন আলীর ছোট ভাই। হাসান আলীকে গত ৯ জুন ফাঁসি অথবা ফায়ারিং স্কোয়াডে মৃত্যুদ-াদেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল-১। তার বিরুদ্ধে আনা ছয়টি মানবতাবিরোধী অভিযোগের মধ্যে পাঁচটিই প্রমাণিত হওয়ায় তাকে সর্বোচ্চ এ দ- দেয়া হয়েছে।
×