ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পঞ্চগড়ের বিলুপ্ত ছিটে ১২ জন ভারতে যাবেন না

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ১৪ মে ২০১৬

পঞ্চগড়ের বিলুপ্ত  ছিটে ১২ জন ভারতে  যাবেন না

স্টাফ রিপোর্টার, পঞ্চগড় ॥ ভারতে যাওয়ার অপশন দিয়ে ভারতীয় ট্রাভেল পাস নিয়েও বিলুপ্ত ছিটমহলের ১৩ নারী-পুরুষ ও শিশু ভারতে যায়নি। দীর্ঘদিনেও কেন তারা ভারতে গেল না এ বিষয়ে মতামত জানতে ভারতীয় হাইকমিশনের একটি প্রতিনিধি দল পঞ্চগড় সার্কিট হাউসে শুক্রবার সকালে ভারতে না যাওয়া ১১ জনের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। বোদা উপজেলার বিলুপ্ত ছিটমহল নাজিরগঞ্জ, দেবীগঞ্জ উপজেলার কোর্টভাজিনি ও দহলাখাগড়াবাড়ির ১৩ নারী-পুরুষ ও শিশুর মধ্যে একজন ঢাকায় অবস্থান করছেন এবং অন্য একজন কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে ভারতে চলে যান। ফলে ভারতীয় প্রতিনিধি দল ১১ জনের সঙ্গে কথা বলেন। তারা কেউই ভারতে যাবেন না মর্মে ভারতীয় প্রতিনিধি দলকে জানিয়ে দেন। মতবিনিময় শেষে সার্কিট হাউসের বারান্দায় কথা হয় বিলুপ্ত কোর্টভাজিনি ছিটমহলের নিত্যানন্দ রায়ের সঙ্গে। তিনি তার স্ত্রী দিপালী রানী ও মেয়ে বর্ষা (৪) জনগণনার সময় ভারতে যাওয়ার অপশন দিয়ে আবেদন করেন এবং তারা ভারতে যাওয়ার ট্রাভেল পাসও নেন। কিন্তু জন্মভূমির মায়া ত্যাগ করে ভারতে যেতে মন না চাইলে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে এ দেশেই থেকে যান। শুক্রবারও তিনি ভারতীয় প্রতিনিধি দলকে ভারতে যাবেন না মর্মে জানিয়ে দিয়েছেন বলে জানান। তার স্ত্রী দিপালী রানীও বলেন, বাংলাদেশে অনেক সুখে-শান্তিতে আছি। দেশ ছেড়ে কোথাও যাব না। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, পঞ্চগড়, বোদা ও দেবীগঞ্জ উপজেলার ৩৬টি বিলুপ্ত ছিটমহল থেকে গত বছরের ৬ জুলাই থেকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত চলা জনগণনায় ৯৮ পরিবারের ৪৮৭ জন স্থায়ীভাবে ভারতে যাওয়ার অপশন দিয়ে আবেদন করেন। কিন্তু তালিকার পর এসব পরিবারে আরও চার নবজাতকের জন্ম হয়। ওই ৪ নবজাতকসহ ৪৭৪ জন স্থায়ীভাবে ভারতে চলে যান। শেষদিন পর্যন্ত নাজিরগঞ্জ, কোর্টভাজিনি ও দহলাখাগড়াবাড়ির তিনটি পরিবারে মোট ১৩ জন ভারতে যাননি। তবে, পরবর্তীতে আরও একজন চোরাপথে ভারতে চলে গেলে ১২ জন বাংলাদেশেই থেকে যান। মতবিনিময় অনুষ্ঠানে ভারতীয় প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন, ভারতের রাজশাহীস্থ সহকারী হাইকমিশনার অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায়, ভারতীয় জনগণনার অতিরিক্ত নিবন্ধক এস কে চক্রবর্তি, ভারতীয় সহকারী স্বরাষ্ট্র সচিব ইফশিতা শাহা পাল, কলকাতা সচিবালয়ের শাখা প্রধান কাজরি বিশ^াস, ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনের প্রথম সচিব রমাকান্ত গুপ্ত এবং বাংলাদেশের পক্ষে পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাহামুদুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
×