ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সিএইচসিপির দুর্নীতি তদন্তে এমআরএ ॥ মিলেছে সত্যতা

প্রকাশিত: ২৩:১০, ১৪ মে ২০১৬

সিএইচসিপির দুর্নীতি তদন্তে এমআরএ ॥ মিলেছে সত্যতা

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার সেচ্ছাসেবী সংস্থা (এনজিও) কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রজেক্ট (সিএইচসিপি)’র ফান্ড থেকে চেয়ারম্যান, পরিচালক ও অর্থ সমন্বয়কারীর যোগসাজশে ছয় কোটি টাকা আত্মসাতসহ ভূয়া সীল ও জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারের কয়েক লাখ টাকার রাজস্ব ফাঁকি, জাল ষ্ট্যাম্প ব্যবহার, সংস্থার নারী কর্মকর্তাদের যৌণ নিপিড়নের অভিযোগের সত্যতা মিলেছে মাইক্রো ক্রেডিট রেগুলেটরী অথরিটি (এমআরএ)’র তদন্ত রিপোর্টে। সূত্রমতে, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের অপর এক তদন্তেও অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। এবার এমআরএ তদন্ত কমিটি অর্থ সমন্বয়কারী জেমস মহানন্দ মন্ডলকে অব্যাহতির সুপারিশ করলেও থলের বেড়াল বেড়িয়ে যাওয়ার ভয়ে মহানন্দর অব্যাহতি কার্যকর করছেন না সংস্থার চেয়ারম্যান সুধীর অধিকারী ও পরিচালক ড. সঞ্জিব কুন্ডু। কার্যনির্বাহী পরিষদের দুর্নীতি ও অনিয়মের কারনে বন্ধ রয়েছে দাতা সংস্থার অর্থ। ফলে এর খেসারত দিতে হচ্ছে দেশের ২৯টি অফিসে কর্মরত প্রায় দু’শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে। সিএইচসিপি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৩ সালে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রমের মধ্যদিয়ে যাত্রা শুরু হয় সংস্থাটির। জানা গেছে, দুর্নীতি পরায়ন ওই নির্বাহী কমিটির হাত থেকে সংস্থাটিকে বাঁচাতে গত বছরের আগস্ট মাসে দাতা সংস্থা দুর্নীতিবাজ পরিচালক সুধীর অধিকারীকে সরে যেতে বললেও তিনি পদ থেকে সরে না যাওয়ায় দাতা দেশ ফান্ড দেয়া বন্ধ করে দেন। চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি লরেন্স বাড়ৈ সংস্থার ৬ কোটি টাকা আত্মসাত, সরকারের রাজস্ব ফাঁকিসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও কর্মকর্তাদের যৌণ নিপিড়নের ১০টি অভিযোগ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, দুর্নীতি দমন কমিশন ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে এনজিও ব্যুরোর ভারপ্রাপ্ত মহা-পরিচালক কেএম আব্দুস সালাম তদন্তের জন্য এনজিও ব্যুরোর পরিচালক গোলাম মেজবাহ উদ্দিনকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করেন। ৭ এপ্রিল তদন্ত কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে ২১২ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওই প্রতিবেদনে কর্মকর্তারা “পল্লী শ্রী”নামক ফান্ডের নাম মুছে ৬ কোটি টাকা আত্মসাত, নারী কেলেংকারী, সরকারের বিপুল পরিমান রাজস্ব ফাঁকি, স্বেচ্ছাচারিতাসহ উল্লেখিত ঘটনার বাইরেও ব্যাপক অনিয়মের সত্যতা পান মেজবাহ উদ্দিন। এর পর তদন্তে নামেন মাইক্রো ক্রেডিট রেগুলেটরী অথরিটি (এমআরএ)। মাইক্রো ক্রেডিট রেগুলেটরী অথরিটির উপ-পরিচালক মোঃ নুরে আলম মেহেদী তদন্ত শেষে ২৭ এপ্রিল এক পত্রে সংস্থার অর্থ সমন্বয়কারী মহানন্দ মন্ডলকে অপসারন করে ১৫মে’র মধ্যে তদন্ত কমিটিকে জানানোর সুপারিশ করেন। ওই কমিটির তদন্তে সংস্থার নিয়ম বহির্ভূতভাবে মহানন্দর বিরুদ্ধে ৮০ লাখ টাকা আত্মসাতসহ সরকারের বিপুল পরিমান রাজস্ব ফাঁকি, নারী কেলেংকারী, স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়মের তথ্য বেরিয়ে আসে। তদন্তে সংস্থার চেয়ারম্যান সুধীর অধিকারী ও নির্বাহী পরিচালক ডাঃ সঞ্জিব কুন্ডুর স্বেচ্ছাচারীতার প্রতিবাদ করায় অনেক কর্মকর্তাকে অপসারণ করার সত্যতা উঠে আসে।
×