ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

রাণীনগরে কৃষক ধানের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না!

প্রকাশিত: ০১:৪১, ১৪ মে ২০১৬

রাণীনগরে কৃষক ধানের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না!

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ॥ নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার কৃষক উঠতি বোরো ধানের ন্যায্য মূল পাচ্ছেননা। সরকার ঘোষিত ৯২০ টাকা মন ধান রাণীনগরে কৃষকরা বিক্রি করছেন ৬৮০ থেকে ৭শ’ টাকা মন (৪০ কেজি) দরে। ফলে প্রতিমন ধানে প্রায় ২শ’ থেকে ২৫০ টাকা হারাচ্ছেন কৃষকরা। এক্ষেত্রে সরকারীভাবে এখানে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানোর দাবী করছেন কৃষকরা। সারাদেশে কৃষকদের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে সরকার ২৩ টাকা কেজি দরে ধান এবং ২৮ টাকা কেজি দরে গম ক্রয় করার ঘোষনা দেন। এই ঘোষনা মোতাবেক রাণীনগর উপজেলায় সরকারীভাবে ২ হাজার ৬ শ’ ৫২ মেট্রিকটন ধান ও ২ শ’ ৪৮ মেট্রিকটন গম সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ক্রয় করা হচ্ছে জানিয়েছেন খাদ্য কর্মকর্তা । রাণীনগর কৃষি কর্মকর্তা বলছেন, এবার ওই উপজেলায় প্রায় ১৯ হাজার ১শ’ ১০ হেক্টর জমিতে প্রায় ১ লাখ ২৬ হাজার ৪শ’ ১৪ মেট্রিকটন ধান উৎপাদন হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিমন ধান উৎপাদনে কৃষকের খরচ হয় প্রায় ৮শ’ থেকে ৮২০ টাকা পর্যন্ত । প্রতি বিঘা জমিতে ধান উৎপাদন হয়েছে ১৮ থেকে ২২ মন । যা বর্তমান বাজার মূল্যে বিক্রি করলে প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে কৃষকদের । প্রখর রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফসল ফলানোর পর এমন লোকসানের কারনে হতাশ হয়ে পরেছেন এখানকার কৃষকরা। অনেকেই এনজিও অথবা কোন ব্যাংক বা সমিতি থেকে সুদের ওপর ঋন নিয়ে কিম্বা বাড়ির গরু, ছাগল, হাঁস-মূরগী বিক্রি করে লাভের আশায় ধানের আবাদ করলেও আবাদে লোকসান হওয়ার কারনে নতুন করে সুদের জালে জড়িয়ে পরছেন তারা। নি¤œ ও মধ্যবিত্ত শ্রেনীর বর্গা চাষী কৃষকরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন বলে জানা গেছে। উপজেলার জেঠাইল গ্রামের কৃষক শাহিন আলম, একডালা দক্ষিনপাড়া গ্রামের আতিয়ার রহমান, কালীগ্রাম কসবাপাড়ার আব্দুর রাজ্জাক শেখ ও কুজাইল গ্রামের আদর্শ কৃষক সাইফুল ইসলাম জানান, এবার সার, কীটনাশক প্রয়োগ, পানি সেচের দাম এবং বিশেষ করে ধান কাটার মজুরি বেশি হওয়ায় বোরো ধান উৎপাদনে খরচ বেশি হয়েছে । বর্তমান বাজার দরে ধান বিক্রি করার কারনে প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা লোকসান হচ্ছে। অথচ সরকার ঘোষিত মূল্যে বাজারে ধান বিক্রি করতে পারলে বেশ কিছুটা পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হতো। তাই সরকারীভাবে এই উপজেলায় ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা আরো বৃদ্ধি করার দাবি জানান কৃষকরা ।
×