ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

‘নারীর প্রতি আচরণ সম্পর্কে পত্রিকার রিপোর্ট অবাস্তব’

ট্রাম্প-নিউইয়র্ক টাইমস দ্বন্দ্ব

প্রকাশিত: ০৬:২৪, ১৭ মে ২০১৬

ট্রাম্প-নিউইয়র্ক টাইমস দ্বন্দ্ব

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান মনোনয়নপ্রত্যাশী ডোনাল্ড ট্রাম্প নারীদের প্রতি তার আচরণ সম্পর্কে নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় প্রথম পাতায় প্রকাশিত রিপোর্টের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছেন। ট্রাম্প গত চার দশক ধরে নারীদের সঙ্গে অশোভন যৌন সম্পর্ক স্থাপনে চেষ্টা করেছিলেন বলে ওই রিপোর্টে অভিযোগ করা হয়। খবর ইয়াহুনিউজ ও সিবিএসনিউজের। ট্রাম্প রবিবার সকালে টুইট করেন, নিউইয়র্ক টাইমস আমার ও নারীদের হেয়প্রতিপন্ন করতে যে অবাস্তব লেখা বের করেছে, তাতে প্রত্যেকেই হাসছেন। তিনি টুইটারে আরও বলেন, আমরা যাদের সাহায্য করেছিলাম এমন অনেকের নাম আমি টাইমসকে দিয়েছি, কিন্তু পত্রিকাটি তা ব্যবহার করতে অস্বীকার করে। কিন্তু ‘ক্রসিং দ্য লাইন হাউ ডোনাল্ড বিহেভড উইথ উইমেন ইন প্রাইভেট’ শীর্ষক লেখাটির অন্যতম রিপোর্টার মাইকেল বারবারো রিয়াল এস্টেট মোসলের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেন। বারবারো টুইটারে লেখেনÑ সেটি এক বাস্তবে ভুল টুইট। আমরা অবশ্যই তার অফিস থেকে প্রস্তাবিত নারীদের সাক্ষাতকার নেই এবং তাদের কথা উদ্ধৃত করি। নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, এর রিপোর্টাররা রিয়াল এস্টেট, মডেলিং ও সুন্দরী প্রতিযোগিতায় ট্রাম্পের সঙ্গে বা পক্ষে কাজ করেছিলেন এমন কয়েক ডজন নারীর সাক্ষাতকার নেন। এ রিপোর্টে নারীদের পেশাগতভাবে ওপরে উঠিয়েছিলেন, অথচ তাদের প্রতি খোলাখুলিই অসম্মান দেখিয়েছিলেন এমন এক ব্যক্তির কখনও কখনও স্ববিরোধী ছবিই ফুটে ওঠে। সুন্দরী প্রতিযোগিতা শিল্পে জড়িত কোন কোন নারী জানান, ট্রাম্প কখনও কখনও প্রতিযোগীদের অশোভন উপায়ে আদর করেন। এক সাবেক সুন্দরী প্রতিযোগী বলেন, মিস ইউএসএর মালিক প্রতিযোগীর ঠোঁটে চুমু দিয়ে তাকে স্বাগত জানান। ১৯৯৭ সালের মিস ইউটাহ টেম্পল ট্যাগার্ট পত্রিকাকে বলেন, তিনি সরাসরি আমার ঠোঁটে চুমু দেন। আমার মনে হলো, হায় ঈশ্বর, কি বিরক্তিকর। তিনি সেই সময়ে মারলা ম্যাপলসের সঙ্গে বিবাহিত ছিলেন। তিনি অন্য কয়েক মেয়েকেও চুমু দিয়েছিলেন বলে আমার ধারণা। ট্রাম্প অভিযোগ করেন যে, পত্রিকাটি অনুচিতভাবে তাকে অপদস্থ করছে, অথচ প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের যৌন কেলেঙ্কারিময় আমলে হিলারি ক্লিনটনের আচরণকেই বাদ রাখছে। তিনি টুইট করেন, নিউইয়র্ক টাইমস কেন বিল ও হিলারি ক্লিনটন ও নারীদের নিয়ে আসল কথা লিখতে ব্যর্থ হচ্ছে। মিডিয়া একেবারেই অসৎ। আরেক প্রতিযোগী ২০০৯ সালের মিস ক্যালিফোর্নিয়া, ক্যারি প্রেজিন এক স্মৃতিকথায় লেখেন যে, এক প্রতিযোগিতায় আমাদের উদ্বোধনী নম্বরযুক্ত পোশাক পরে ট্রাম্পের সামনে স্টেজে দাঁড়াতে বলা হয়। সেই পোশাক ছিল আমাদের সুইমস্যুটের মতোই সংক্ষিপ্ত। জবাবে বলেন যে, তিনি প্রেজিনের বর্ণনামতো, এক ঘটনায় ট্রাম্প মিস আলামবামাক প্রশ্ন করেন, এখানে সবচেয়ে সুন্দরী নারী কে? যখন ওই নারী মিস আরকানসাসকে ‘মিষ্ট’ বলে দেখতে পান, তখন ট্রাম্প তাকে ধমক দেন। ট্রাম্প বলেন, সে মিষ্ট কিনা তা নিয়ে আমার মাথা ব্যথা নেই। সে কি কামোদ্দীপিত? ট্রাম্প প্রতিযোগীদের দেখে যাওয়ার পর কোন কোন মেয়ে স্টেজের পেছনে গিয়ে কাঁদছিল বলে প্রেজিন লিখেছেন। কারণ তারা প্রতিযোগিতা আসলে শুরু হওয়ার আগেই অকৃতকার্য হওয়ায় মুষড়ে পড়ে। ট্রাম্প নিউইয়র্ক টাইমসের কাছে সুন্দরী প্রতিযোগিতায় ওই সব ঘটনা আদৌ ঘটার কথা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, অপরিচিতদের ঠোঁটের সঙ্গে তার ঠোঁট মিলালে তিনি অস্বস্তিই বোধ করতেন। তিনি প্রেজিনের বর্ণিত উপায়ে স্টেজে তার প্রতিযোগীদের মূল্যায়ন করতেন কিনাÑ এ বিষয়ে ট্রাম্প বলেন, তিনি কখনও সেটি করতেন না, কারণ এতে তারা আহত হতো। ট্রাম্প বলেন, বছরের পর বছর ধরে অনেক কিছুই বানানো হয়েছে। আমি সব সময়েই নারীদের খুবই সম্মানের চোখে দেখেছি। আর নারীরাই আপনাদের তা বলবে।
×