ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বীরোচিত বরণ মেসি নেইমার সুয়ারেজের

প্রকাশিত: ০৬:৪৮, ১৭ মে ২০১৬

বীরোচিত বরণ মেসি নেইমার সুয়ারেজের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ গ্রানাডার মাঠে শনিবার রাতেই উৎসব করেছে বার্সিলোনা। তবে সেই উৎসবে যেন প্রাণ ছিল না! কেননা স্প্যানিশ লা লিগার চ্যাম্পিয়ন বার্সার ফুটবলাররা যে ছিলেন নিজ শহর ছেড়ে অন্য জায়গায়। পরের দিন তাই মেসি-নেইমার-সুয়ারেজদের বরণ করে নিতে মুখিয়ে ছিলেন ন্যুক্যাম্পের হাজার হাজার ভক্ত-সমর্থকরা। রবিবার লা লিগার ২০১৫-১৬ মৌসুম আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়েছে। শেষ দিনে ম্যাচগুলোতে মালাগা ৪-১ গোলে লাস পালমাসকে, এস্পানিওল ৪-২ গোলে এইবারকে, রায়ো ভায়োকানো ৩-১ গোলে লেভান্তেকে, রিয়াল বেটিস ২-১ গোলে গেটাফেকে ও স্পোর্টিং গিজন ২-০ গোলে পরাজিত করে ভিয়ারিয়ালকে। শেষ ম্যাচের জয়ে অবনমন এড়িয়েছে ডি গিজন। ৩৮ ম্যাচে ৩৯ পয়েন্ট নিয়ে ১৭তম স্থান পেয়েছে দলটি। এবারের চ্যাম্পিয়ন দল বার্সিলোনার কোচ লুইস এনরিকে একসময় খেলেছিলেন ডি গিজনে। তাইতো দলটি অবনমন এড়াতে পারায় তাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। এবার লা লিগা থেকে প্রথম বিভাগে নেমে গেছে শেষ তিনটি দল লেভান্তে, গেটাফে ও রায়ো ভায়োকানো। লীগের শেষদিনে বিজয়ী বীরদের বরণ করে নিতে কাতালান রাজ্যে নেমেছিল লাখো মানুষের ঢল। সকাল থেকে রাত অবধি ভক্ত-সমর্থকরা নেচে-গেয়ে চ্যাম্পিয়নদের বরণ করে নেন। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় ছাদখোলা বাসে সিউটাট এসপোর্টিভো থেকে যাত্রা শুরু করে দুইঘণ্টা পর ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে পৌঁছায় পুরো বার্সিলোনা দল। এ সময় বার্সিলোনার জার্সি গায়ে, প্রিয় দলের পতাকা হাতে রাস্তায় নেমে আসে কাতালানবাসী। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদকে আশা দেখিয়ে ট্রফি জেতায় কাতালান সমর্থকরা আরও খুশি। একজন প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, এটি অসাধারণ। রিয়ালকে শেষ পর্যন্ত আশা দেখিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বাদই আলাদা। আরেকজন বলেন, লা লিগায় বার্সিলোনা সেরা এটি আরেকবার প্রমাণ হয়েছে। সবাইকে অভিনন্দন। বিশেষ করে লিওনেল মেসিকে। সুয়ারেজ বেশি গোল করলেও মেসির অবদানই বেশি। ভক্তদের ভালবাসার জবাব দিতে চ্যাম্পিয়ন বার্সার ফুটবলাররা খোলা বাসে করে প্রদিক্ষণ করেন। বাসটির চারিদিকে চ্যাম্পিয়ন লেখা লোগো ছিল। বাসটিতে কাতালানদের সব ফুটবলাররা হাত নেড়ে সমর্থকদের ভালবাসার জবাব দেন। এ সময় মেসি-সুয়ারেজ-নেইমাররা তাদের স্বাক্ষর করা জার্সি ভক্তদের উদ্দেশ্যে ছুড়ে দেন। ট্রফি নিয়ে এই উল্লাস ছিল দেখার মতো। এদিকে দুর্দান্ত একটি মৌসুম কাটানো লুইস সুয়ারেজ পিচিটি ট্রফি জয়ের পাশাপাশি ইউরোপিয়ান গোল্ডেন স্যুও জিতে নিয়েছেন। প্রথমবারের মতো লা লিগার সেরা গোলদাতার পুরস্কার পিচিটি ট্রফি ও দ্বিতীয়বারের মতো ইউরোপের লীগগুলোয় সেরা গোলদাতার পুরস্কার ইউরোপিয়ান গোল্ডেন স্যু জয়ের গৌরবে ভাসছেন উরুগুইয়ান সুপারস্টার। এর আগে ২০১৩-১৪ মৌসুমে ইংলিশ ক্লাব লিভারপুলের হয়ে ৩১ গোল করে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর সঙ্গে যৌথভাবে প্রথম গোল্ডেন স্যু জিতেছিলেন সুয়ারেজ। এবার বার্সিলোনার লা লিগা শিরোপা ধরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা সুয়ারেজ ৪০ গোল করে সেরা গোলদাতার এই দুই পুরস্কার নিশ্চিত করেন। বার্সিলোনার জার্সিতে দ্বিতীয় মৌসুমেই অসাধারণ এই কীর্তি গড়া সুয়ারেজ পুরো মৌসুম জুড়েই প্রয়োজনীয় মুহূর্তে অবদান রাখেন। গত এপ্রিলে টানা তিন ম্যাচ হেরে কোণঠাসা হয়ে পড়া দলকে পথ দেখাতে সবচেয়ে বড় অবদান তার। শেষ পাঁচ ম্যাচে দলের ২৪ গোলের মধ্যে একাই ১৪ গোল করেন তিনি। দুর্দান্ত এই পথচলায় মোট ছয়টি হ্যাটট্রিক করেন। ২০১৫-১৬ মৌসুমে ইউরোপের শীর্ষ পাঁচটি লীগে অন্য কেউ তিনটির বেশি হ্যাটট্রিক করতে পারেননি। মেসি ও রোনাল্ডোর পর প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে একইসঙ্গে পিচিটি ট্রফি ও ইউরোপিয়ান স্যু জয়ের অনন্য কীর্তি গড়েছেন সুয়ারেজ। স্পেনের শীর্ষ লীগের সেরা গোলদাতার তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রিয়াল মাদ্রিদের রোনাল্ডো (৩৫) ও তৃতীয় স্থানে মেসি (২৬)। আর গোল্ডেন স্যু জয়ের দৌড়ে ৩৬ গোল করে দ্বিতীয় স্থানে আছেন ইতালিয়ান ক্লাব নেপোলির আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার গঞ্জালো হিগুয়াইন। এর পরের স্থান রোনাল্ডোর।
×