ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ধারণক্ষমতার অর্ধেক মাল নিয়ে বাঘাবাড়ী বন্দরে জাহাজ

যমুনায় নাব্য সঙ্কট

প্রকাশিত: ০৬:৫৬, ১৭ মে ২০১৬

যমুনায় নাব্য সঙ্কট

নিজস্ব সংবাদদাতা, পাবনা, ১৬ মে ॥ বেড়ার মোহনগঞ্জ থেকে দৌলতদিয়া পর্যন্ত যমুনা নদীতে নব্যতা সঙ্কটে রাসায়নিক সার, ক্লিংকার ও জ্বালানি তেলবাহী জাহাজ ধারণক্ষমতার অর্ধেক মাল নিয়ে বাঘাবাড়ী রিভারাইন অয়েল ডিপো ও নৌ-বন্দরে আসছে। আবার জাহাজগুলো একইভাবে অর্ধেক মাল নিয়ে বাঘাবাড়ী বন্দর থেকে ছেড়ে যাচ্ছে। এদিকে বিআইডাব্লিউটিএ ড্রেজিং স্পয়েল নদীতে ফেলায় স্রোতের টানে ভাটিতে পলি জমে আবারও ডুবো চরের সৃষ্টি হচ্ছে। উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় জ্বালানি তেল ও রাসায়নিক সার চাহিদার ৯০ ভাগ বাঘাবাড়ী রিভারাইন অয়েল ডিপো ও নৌ-বন্দর থেকে যোগান দেয়া হয়। এখান থেকে প্রতিদিন ২৭ লাখ লিটার জ্বালানি তেল ও হাজার হাজার বস্তা রাসায়নিক সার সরবরাহ করা হয়। নাব্যতা সঙ্কট দ্রুত নিরসন না হলে এ অঞ্চলে সেচ নির্ভর বোরো আবাদ ব্যাহত হতে পারে বলে বন্দর কর্তৃপক্ষ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন । ভারত তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রে নদে বহুসংখ্যক জলবিদ্যুত ও সেচ প্রকল্প নির্মাণ করে পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করছে। এদিকে গত ক’দিন ধরে অপ্রত্যাশিতভাবে তিস্তার পানি প্রবাহ এক হাজার কিউসেকে নেমে এসেছে। ফলে যমুনা নদীতে নাব্যতা সঙ্কট দেখা দিয়েছে। তিস্তা নদীতে পানি প্রবাহ না বাড়লে যমুনায় নাব্যতা সঙ্কট আরও প্রকট আকার ধারণ করবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। বাঘাবাড়ী নৌবন্দর কর্তৃপক্ষ জানান, স্বাভাবিকভাবে রাসায়নিক সার ও পণ্যবাহী জাহাজ চলাচলের জন্য নদীতে ১০ ফুট পানির গভীরতা প্রয়োজন। বাঘাবাড়ী থেকে দৌলতদিয়া পর্যন্ত ৪৫ কিলোমিটার নৌ-পথের মোহনগঞ্জ, পেচাকোলা, হরিরামপুর, কল্যাণপুর, চরসাফুলা, চরশিবালয়, নাকালী ও রাকশাসহ ১০টি পয়েন্টে পানির গভীরতা কমে ৭ থেকে ৮ ফুটে দাঁড়িয়েছে। সরু হয়ে গেছে নৌ-চ্যানেল। যমুনা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে বিআইডব্লিউটিএ ড্রেজিং করে পলি নদীতেই ফেলছে। ফলে স্রোতের টানে পলিমাটি ভাটিতে গিয়ে আবারও ডুবো চরের সৃষ্টি হচ্ছে। বাঘাবাড়ী বন্দরমুখী রাসায়নিক সার ও জ্বালানি তেলবাহী জাহাজ মাঝেমধ্যেই যমুনার ডুবোচরে আটকা পড়ছে। আটকে পড়া জাহাজের রাসায়নিক সার, ক্লিংকারসহ অন্যান্য পণ্য অর্ধেক খালাস করে ছোট ছোট নৌকায় করে বাঘাবাড়ী বন্দরে আনা হচ্ছে। এতে ব্যবসায়ীদের জাহাজ প্রতি ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা অতিরিক্ত ব্যয় হচ্ছে। এ কারণে বাঘাবাড়ী বন্দরের মালামাল পরিবহনে জাহাজ মালিকরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। বপিসি’র বাঘাবাড়ী রিভারাইন অয়েল ডিপোর যমুনা কোম্পানির ডেপুটি ম্যানেজার মোঃ আব্দুল মজিদ জানিয়েছেন, বাঘাবাড়ীতে পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা তিনটি তেল কোম্পানির ডিপোতে পর্যাপ্ত পরিমাণ জ্বালানি তেল মজুদ আছে। আরও প্রায় এক কোটি লিটার ডিজেল ভর্তি ১৯টি জাহাজ বন্দরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে এসেছে। নাব্যতা সঙ্কটে জাহাজগুলো অর্ধেক লোডে বাঘাবাড়ী ডিপোতে আসছে।
×