ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর সম্প্রসারণের উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০৬:০৮, ১৯ মে ২০১৬

বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর সম্প্রসারণের উদ্যোগ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘জাতীয় জাদুঘরের স্টোরে অনেক জিনিস পড়ে আছে কিন্তু গ্যালারির অভাবে তার ২০ ভাগের একভাগও প্রদর্শন করা যাচ্ছে না। বিদেশে সাইড মিউজিয়াম থাকে যেটা আমাদের দেশে নেই। এসব বিবেচনা করে আমরা অল্প কিছুদিনের মধ্যে জাতীয় জাদুঘর সম্প্রসারণের কাজ শুরু করছি। জাতীয় জাদুঘরের পাশাপাশি আর একটি নতুন জাদুঘরের পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। আশা করি প্রাকৃতিক ইতিহাস সংরক্ষণ ভিত্তিক এই নতুন জাদুঘরটি অতি অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের মানুষকে উপহার দিতে পারব। জাদুঘর এখন আর শুধু মৃত বস্তুর সমাহার নয়, এটা এখন জীবন্ত ইতিহাস। তবে সমাজের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ না থাকলে জাদুঘর মৃততেই পরিণত হয়। খুব শীঘ্রই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জাদুঘরের প্রত্যক্ষ যোগাযোগের ব্যবস্থা করা হবে। জাদুঘরে বৈচিত্র এসেছে। মুক্তিযুদ্ধ, গণহত্যা, গাছপালা, সুচিত্রা সেন, শচীন দেব বর্মণ এমনকি প্রজাপতিদের নিয়েও জাদুঘর হচ্ছে। এগুলো বিভিন্ন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর উদ্যোগে গড়ে উঠছে। আমাদের ইতিহাস অনেকটা মাটির নিচেও চাঁপা পড়ে আছে। ধীরে ধীরে আবিষ্কারও হচ্ছে এগুলো, বুধবার সকালে আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এ কথা বলেন। ‘আমাদের সাধ আছে সাধ্য নাই’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এ সমস্ত কাজের সঙ্গে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগসূত্র গড়ে উঠুক এটাই আমরা চাই। পর্যাপ্ত অর্থ হয়ত এতে বরাদ্দ করা সম্ভব হয় না। তা সত্ত্বেও জাদুঘর সম্প্রসারণের প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়া ভার্চুয়াল মিউজিয়ামের কাজেও আমরা হাত দিয়েছি, যাতে ঘরে বসে মানুষ জাদুঘর পরিদর্শন করতে পারবে। আমরা মনে করি জাদুঘর আরও বেশি বিজ্ঞানসম্মত করার প্রয়োজন। যার ফলে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরাও চলতে পারব। জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এ সেমিনারের আয়োজন করে জাতীয় জাদুঘর ও আইকম বাংলাদেশ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক সচিব এম আজিজুর রহমান। সেমিনারে ‘জাদুঘর ও সাংস্কৃতিক দৃশ্যপট’ শীর্ষক বক্তব্য উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতœতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর সুফী মুস্তাফিজুর রহমান। জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের প্রফেসর আবু সাঈদ এম আহমেদ। শুরুতে জাতীয় জাদুঘর দিবস উপলক্ষে প্রকাশিত সুফিনিয়রের মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা। এরপর স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইকম বাংলাদেশ কমিটির চেয়ারপার্সন জাহাঙ্গীর হোসেন। সুফী মুস্তাফিজুর রহমান ‘জাদুঘর ও সাংস্কৃতিক দৃশ্যপট’ শীর্ষক বক্তব্যে পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার, বাগেরহাটের ষাটগম্ভুজ, মহাস্তানগড়, কুমিল্লার ময়নামতি, ওয়ারী বনেশ্বরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সাংস্কৃতিক দৃশ্যপটের বর্ণনা করেন। জাদুঘরের সঙ্গে এগুলোর যোগসূত্রগুলোও তুলে ধরেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এম আজিজুর রহমান বলেন, জাদুঘর বিশেষায়িত সংগ্রহশালা। ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন জাদুঘরে সংগ্রহ ও প্রদর্শন করা হয়ে থাকে। বিশ্বায়নের প্রভাবে পৃথিবীব্যাপী যে পরিবর্তন হচ্ছে তার প্রতিভাস জাদুঘরে লক্ষ্য করা যায়। জাদুঘরে আগত দর্শকের জ্ঞান ভা-ার স্বাভাবিকভাবে সমৃদ্ধ হয়ে থাকে। সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী বলেন, আমাদের জাদুঘর সম্প্রসারণ হচ্ছে। এর গ্যালারির সংখ্যাও বাড়ানো হচ্ছে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে জাদুঘর আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে এগিয়ে যাচ্ছে। ২০১৫ সালের আগে জাদুঘরে দর্শনার্থীর সংখ্যা প্রতিদিন গড়ে ছিল ১৫ শ’, এখন সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে আড়াই হাজারে। শিল্পকলার এক্সপেরিমেন্টাল থিযেটার হলে ‘গওহর বাদশা ও বানেছা পরী’ মঞ্চস্থ : নাগরিক নাট্যাঙ্গনের ২০তম প্রযোজনা ‘গওহর বাদশা ও বানেছা পরী’ নাটক মঞ্চস্থ হয় শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে বুধবার সন্ধ্যায়। দক্ষিণাঞ্চলের লোকগাথা অবলম্বনে পালাটির নাট্যরূপ ও নির্দেশনা দিয়েছেন হৃদি হক। সেই সঙ্গে বানেছা পরী চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। বিশ্বিং বাদশার চক্রান্তে গিলামাইট বনে গহর বাদশার দুর্দশা ও বানেছা পরীর সঙ্গে তার প্রেমের আখ্যান নিয়ে নাটকটির গল্প আবর্তিত। প্রায় ৫০ জনের একটি দল এ নাটকে কাজ করেছেন। নাটকটির কোরিওগ্রাফি করেছেন নৃত্যশিল্পী ওয়ার্দা রিহ্যাব। সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন কামরুজ্জামান রনি। সেট পরিকল্পনা করেছেন সাজু খাদেম এবং আলোক পরিকল্পনায় ছিলেন ঠান্ডু রায়হান।
×