ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গ্রীষ্মেই পাঁচ শতাধিক বাড়ি মেঘনায়

প্রকাশিত: ০৩:৫২, ২০ মে ২০১৬

গ্রীষ্মেই পাঁচ শতাধিক বাড়ি মেঘনায়

হাসিব রহমান, ভোলা ॥ ভোলায় বর্ষার আগেই মেঘনার ভাঙ্গন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। গত দুই সপ্তাহের ভাঙ্গনে সদর উপজেলার রাজাপুর ইলিশা জংশন বাজার এলাকার পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, কৃষিজমি, ফেরিঘাট বিলীন হয়ে গেছে। প্রায় দুই শ’ বছরের পুরাতন জংশন বাজার থেকে এক দেড় শ’ ফুট দূরে এখন নদীর অবস্থান। হুমকির মুখে রয়েছে ওই বাজারের সহস্রাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কয়েক হাজার ঘরবাড়ি, স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসাসহ অন্তত ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ভাঙ্গন আতঙ্কে প্রায় দেড় লাখ লোক চরম উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছে। প্রতিদিনই ইলিশা জংশন, রাজাপুর এলাকার বহু পরিবার শেষ সম্বল ঘরবাড়ি ভেঙ্গে অন্যত্র আশ্রয়ের সন্ধানে চলে যাচ্ছে। এদিকে, ইমারজেন্সি ওয়ার্কের আওতায় পাউবো ১৫ কোটি টাকার বালির বস্তা ফেলে ভাঙ্গন রোধের কাজ শুরু করলেও চার গ্রুপের কাজ একজন ঠিকাদার করায় কাজ চলছে ধীরগতিতে। তার ওপর পাউবোর টাস্কফোর্সের প্রকৌশলী মাছুম বিল্লাহ সময়মতো উপস্থিত না থাকায় দ্রুত ডাম্পিং কাজ হচ্ছে না। এতে বৃহস্পতিবার সকালে ইলিশা জংশনের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা দেখা দেয়। স্থানীয়রা জানিয়েছে, গত দুই মাসের অব্যাহত ওই ভাঙ্গনে প্রায় ৬ কিলোমিটার এলাকার কয়েক হাজার ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থাপনা মেঘনায় বিলীন হয়। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড শুষ্ক মৌসুম পার হয়ে গেলেও ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী কোন পদক্ষেপ নিতে না পারায় এ বছর আবার বর্ষা শুরুর আগেই মেঘনার পানির চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় গত দুই সপ্তাহ ধরে ভাঙ্গনের তীব্রতা বেড়ে যায়। ভাঙ্গনের তীব্রতা এত বেশি যে, মানুষ ঘরবাড়ি সরিয়ে নিতেও পারছে না। গত ১৫ দিনে ভাঙ্গনে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী বালাবাড়ি, ডাক্তারবাড়ি, একটি হ্যাচারি, ইলিশা ফেরিঘাট, মাছঘাটসহ ৫-৬শ’ বসতঘর, কয়েক শ’ এক ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সরেজমিন ইলিশা জংশন এলাকার মেঘনার তীরে গিয়ে দেখা যায়, চারদিকে যেন বিধ্বস্ত এক জনপদ। কেউ ঘর ভাঙছে। কেউ ঘরের মালামাল অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছে। কেউবা আসবাবপত্র নিয়ে রাস্তার পাশে বা অন্যের জমিতে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে।
×