ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এর পরেও বলব, কেকেআরকে প্লে অফে দেখছি : দীপ দাশগুপ্ত

প্রকাশিত: ১৯:৩১, ২০ মে ২০১৬

এর পরেও বলব, কেকেআরকে প্লে অফে দেখছি : দীপ দাশগুপ্ত

অনলাইন ডেস্ক ॥ পরপর দু’টো ম্যাচে বিশ্রী হার। আন্দ্রে রাসেলকে পাওয়া নিয়ে ঘোর অনিশ্চয়তা। টিমের প্লে অফ যাওয়া নিয়ে ভাল রকম আশঙ্কা তৈরি হয়ে যাওয়া। বুঝতে পারছি, কেকেআর সমর্থকদের মনে ঠিক এই মুহূর্তে কী চলছে। বৃহস্পতিবার গুজরাত লায়ন্সের কাছে জঘন্য ভাবে হেরে যাওয়ার পর যা অবস্থা, প্লে অফে যেতে গেলে শেষ ম্যাচ জিততেই হবে কেকেআরকে। ম্যাচ আবার সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে যারা কি না লিগ টেবলে এই মুহূর্তের এক নম্বর। টেনশন, আশঙ্কা এ সব হওয়া খুব স্বাভাবিক। বিশেষ করে যদি গত বছরটা মনে পড়ে যায়। গত বারও শেষ দু’ম্যাচের একটায় জিততে হত নাইটদের। কিন্তু ওরা দু’টোর একটাও পারেনি, টুর্নামেন্টেও আর থাকেনি। কিন্তু আমি বলব, এখনই এত হতাশ হয়ে পড়ার কিছু নেই। বরং আমার মনে হচ্ছে, নাইটদের এর পরেও প্লে অফে চলে যাওয়ার ভাল রকম সম্ভাবনা আছে। সানরাইজার্স এক নম্বর টিম, ভুলে যান। ভুলে যান, ওদের একটা মুস্তাফিজুর রহমান আছে যাকে খেলা প্রায় দুঃসাধ্য হয়ে উঠছে। বরং ক্রিকেটীয় যুক্তিতে আসুন। সেখানেই স্পষ্ট বোঝা যাবে কথাটা কেন বলছি। প্রথমত খেলাটা হবে ইডেনে। আমি ধরে নিচ্ছি উইকেট পুরোপুরি টার্নার যদি না-ও হয়, একটু স্পিনার ফ্রেন্ডলি হলেও সেটা কেকেআরের জন্য যথেষ্ট হবে। হায়দরাবাদ ব্যাটিং লাইন আপ যদি দেখেন, উপরে দু’জন। ওয়ার্নার-শিখর। মাঝে যুবরাজ। এই তিনজনকে যদি তুলে নেওয়া যায়, ওদের হারানো মোটেও অসম্ভব হবে না। ওদের বোলিংও আর আগের মতো শক্তিশালী থাকবে কি? আশিস নেহরা কিন্তু টুর্নামেন্টের বাইরে চলে গিয়েছে। বারিন্দর স্রান আছে, কিন্তু ওকে খেলার মতো ক্ষমতা আছে নাইট ব্যাটসম্যানদের। হায়দরাবাদ বোলিংয়ে বেশির ভাগ পেসারই বাঁ হাতি। যারা ডান হাতি ব্যাটসম্যানের বিরুদ্ধে যতটা ভাল করছে, বাঁ হাতিদের বিরুদ্ধে ততটা নয়। কেকেআরের এখানে সুবিধে। গৌতম নিজে বাঁ হাতি। সাকিব আছে। দরকারে পীযূষ চাওলাকে উপরে পাঠিয়ে দেওয়া যেতে পারে। বরাবর দেখে এসেছি এ রকম চাপের ম্যাচে দারুণ ব্যাট করে গৌতম। জানি না রাসেলকে পাওয়া যাবে কি না। যদি পাওয়া যায়, তো মিটে গেল। যদি না পাওয়াও যায়, হায়দরাবাদকে হারানো অসম্ভব হবে বলে মনে করি না। তবে দু’টো জিনিস খেয়াল রাখতে হবে কেকেআরকে। প্রথমটা হল, এমন বিশ্রী হারের পর নিজেদের মানসিক অবস্থাটা ঠিক রাখা। আইপিএলে এটা প্রায়ই দেখা যায় যে, একটা টিম দারুণ শুরু করল। মাঝামাঝি পর্যন্ত তাদের দেখে মনে হল আর কেউ যাক না যাক এরা প্লে অফ যাবেই। পরে তারাই পরপর কয়েকটা হেরে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেল। কেকেআরের ঠিক সেটাই হয়েছে। ওরা শেষ চারটে ম্যাচের তিনটেয় এমন ভাবে হারল যে, নিজেদের উপর থেকে বিশ্বাস উঠে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট। আমার মনে হয়, কালিস আর আক্রম ব্যাপারটা দেখে নেবে। বৃহস্পতিবার কেকেআর যে এ ভাবে হারল তার পিছনে রাসেলের না থাকাটা বিরাট একটা ফ্যাক্টর হয়ে গেল। রাসেল আসলে দু’জনের কাজ একা করে। ডেথ ওভার থেকে পাওয়ার প্লে— যে কোনও জায়গায় বল করে দেবে। ক্যাপ্টেনকে উইকেট দিয়ে দেবে। আবার ব্যাট হাতেও একা ম্যাচ জিতিয়ে চলে যাবে। আজই যদি টিমে রাসেল থাকত, কে বলতে পারে রানটা ১৫০-১৬০ হত না? ও আর ইউসুফ নীচে থাকলে ওপেনাররা একটু সময় নিয়ে খেলতে পারে। কারণ জানে যে, নীচে রাসেল-পাঠান আছে। রান ঠিক তুলে দেবে। কিন্তু কেউ একজন না থাকলে ওপেনারদের মাথায় চলতে থাকে যে আমাকেও দ্রুত রান তুলতে হবে। প্লাস কেকেআর এ দিন স্মিথকে হিসেবেই রাখেনি। কেকেআর প্ল্যানিং করেছিল ধবল কুলকার্নি নিয়ে। প্রবীণ কুমার নিয়ে। যারা এমন সবুজ পিচে উইকেট নিয়ে যেতে পারে। স্মিথ আসার পর হয়তো ভেবেছিল, এর ওভারেই রানটা তুলে নিতে হবে। একটু হালকা নিয়েছিল বোধহয়। স্মিথ স্রেফ জায়গায় বল ফেলে কাজটা করে গেল। কথায় কথায় দ্বিতীয় জিনিসটা বলা হল না। কেকেআরের মানসিক অবস্থার চেয়েও যেটা বেশি ভাবাচ্ছে আমাকে। টিভি চ্যানেলে দেখলাম, সাইক্লোন ঢুকছে বাংলায়। আর তার দাপটে রবিবারের ম্যাচ যদি আক্রান্ত হয়, তা হলেই মুশকিল। ভাগ্যকে দোষারোপ ছাড়া আর কিছুই তখন করার থাকবে না। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×