ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীতে নদীর পাড় প্রভাবশালীদের দখলে

প্রকাশিত: ০৪:১১, ২১ মে ২০১৬

রাজশাহীতে নদীর পাড় প্রভাবশালীদের দখলে

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ বাগমারা উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ফকিরনী নদীর অনেকটাই এখন প্রভাবশালীদের দখলে চলে গেছে। উপজেলার ভবানীগঞ্জ দিয়ে প্রবাহিত এই নদীটি মিশেছে আত্রাই নদীতে। তবে দখলের মহোৎসবে ক্রমেই কমেছে নদীটির প্রস্থ। গত পাঁচ বছর ধরে ধীরে ধীরে দখল করে নদীর জায়গায় নির্মাণ করা হয়েছে মার্কেট-বিপণিবিতান। স্থানীয়রা জানান, ভবানীগঞ্জ মিশুক স্ট্যান্ডের অদূরে এই নদীর ওপর নির্মিত সেতুর পশ্চিম অংশে নদীপারের কিছু অংশ দখল করে একপাশে বাড়িও তৈরি করা হয়েছে। অন্যপাশে নির্মাণ করা হয়েছে মার্কেট। স্থানীয় প্রভাবশালীরা নদীর জায়গায় মার্কেট নির্মাণ করেছেন। ভবানীগঞ্জের ব্যবসায়ী সিদ্দিকুর রহমান জানান, ২০১১ সালে প্রথমে পিলার পুঁতে জায়গা দখল করা হয়। এরপর ধীরে ধীরে সেখানে মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে। ৫ বছরে নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে তোলা হয় মার্কেটটি। তবে নদীর জায়গা দখল করে মার্কেট নির্মাণ করা হলেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। নদীর জায়গা দখল হয়ে যাচ্ছে বলে সম্প্রতি উপজেলার ইন্দ্রপুর গ্রামের বুলবুল হোসেন নামের এক ব্যক্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছিলেন। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। ফলে মার্কেট নির্মাণ করা নদীটির প্রবাহ কমেছে। নদীটির পাশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাইনবোর্ড আছে। কিন্তু সেই পানি উন্নয়ন বোর্ড দখলদারদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুখলেসুর রহমান জানান, তিনি কিছুদিন আগে যোগদান করেছেন। খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। নওগাঁয় শ্মশান-পুকুর নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ থেকে জানান, পতœীতলা উপজেলার পল্লীতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শ্মশান ও পুকুরসহ দেবোত্তর সম্পদগুলো জবরদখল করছে এলাকার নব্য আওয়ামী লীগাররা! তাদের সহায়তা করছে ওই উপজেলার স্বাধীনতাবিরোধী ও তালিকাভুক্ত রাজাকারের সন্তান আওয়ামী লীগেরই এক প্রভাবশালী নেতা! এমন ঘটনায় এলাকার সংখ্যালঘুরা হতাশার পাশাপাশি চরম উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। জানা গেছে, পতœীতলা উপজেলার দিবর ইউনিয়নের ঘোলাদীঘি মৌজায় ৮ একর ৪১ শতাংশ মালদীঘি পুকুর ও শ্মশান জবরদখল করছে সদ্য অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগে যোগদানকারী রিফিউজি আফছার, সাত্তার, বক্কার, রসুলসহ ওরা ৭ভাই। ওরা ৩মাস আগেও ছিল বিএনপি-জামায়াতের ক্যাডার। এ ব্যাপারে আদালতে একটি মামলাও চলমান রয়েছে। শুধু তাই নয়, তারা রীতিমত ওই মৌজায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শ্রীশ্রী রঘুনাথ জিঁউ মন্দির, শ্রীশ্রী গোপিনাথ জিঁউ মন্দিরসহ মোট ৬ একর ৩৭ শতাংশ জমি জবরদখল করেছে। তারা নিজেদের আওয়ামী লীগার দাবি করে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদারের দেবোত্তর সম্পদগুলো এভাবে জবরদখল অব্যাহত রেখেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। পতœীতলা উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব ও সাবেক কাউন্সিলর গৌতম কুমার দে, মালদীঘি শ্মশান কালীমন্দির কমিটির সভাপতি বিনয় চন্দ্র বর্মন, রঘুনাথ জিঁউ ও গোপিনাথ জিঁউ মন্দির কমিটির সভাপতি রমেন চন্দ্র বর্মন এবং সাধারণ সম্পাদক নীলকান্ত বর্মন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, রিফিউজি আফছার গং বরাবরই স্বাধীনতার বিপক্ষে ছিল। তারা ৩ মাস আগেও জামায়াত-বিএনপির ক্যাডার ছিল। সদ্য অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আগে পতœীতলা উপজেলার রাজাকার পুত্র এক আওয়ামী লীগ নেতার যোগসাজশে স্থানীয় এমপি ও জাতীয় সংসদের হুইপ শহীদুজ্জামান সরকার বাবলুর গলায় ফুলের মালা দিয়ে আফছার গং আওয়ামী লীগে যোগদান করে। এর পর থেকে তারা সংখ্যালঘুদের জমিজমাসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও সম্পদ জবরদখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
×