ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ফেসবুকে বন্ধুত্ব ॥ আটকে মুক্তিপণ আদায় চক্র প্রধান গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৩:৫১, ২২ মে ২০১৬

ফেসবুকে বন্ধুত্ব ॥ আটকে মুক্তিপণ আদায় চক্র প্রধান গ্রেফতার

নিজস্ব সংবাদদাতা, কেরানীগঞ্জ, ২১ মে ॥ কেউ কাউকে চেনেন না। অথচ ফেসবুকে বন্ধুত্ব। আর ওই ‘বন্ধুত্বের’ সূত্র ধরেই বেড়াতে আসার প্রস্তাব দেয়া হয় বন্ধুকে। এরপর ছলে-বলে-কৌশলে তাকে কোন বাসা অথবা ফ্ল্যাটে আটকে রেখে আটক ব্যক্তির স্বজনদের কাছ থেকে আদায় করা হয় মোট অঙ্কের মুক্তিপণ। এমনই একটি চক্রের আস্তানা থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে কেরানীগঞ্জের দুই যুবককে। এদের একজন কলেজছাত্র লিমন এবং অপরজন আমিরুল ইসলাম। নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ার একটি ফ্ল্যাট থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে চক্রের প্রধান আলামিন। শনিবার দুপুরে বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক মনিরুজ্জামান খান। তিনি বলেন, ফেসবুকে বন্ধুত্বের সূত্র ধরে গত ১৩ মে কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়ার বাসিন্দা শহীদ মিয়ার ছেলে রাজধানীর কবি নজরুল সরকারী কলেজের অনার্সের ছাত্র লিমনকে নারায়ণগঞ্জে বেড়াতে আসতে বলে এক দুর্বৃত্ত। লিমন নারায়ণগঞ্জে দেখা করতে গেলে তাকে কৌশলে একটি ফ্ল্যাটে নিয়ে বন্দী করা হয়। এরপর তার পরিবারের কাছে মুক্তিপণ হিসেবে দুই লাখ টাকা দাবি করা হয়। এজন্য একটি বিকাশ নম্বরও দেয়া হয়। পরদিন এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করেন লিমনের বাবা ফজলুর রহমান। এর পরই লিমনকে উদ্ধারে অভিযানে নামে পুলিশ। ১৫ মে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ায় ইব্রাহিমের বাড়ির নিচতলার ফ্ল্যাট থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয় লিমনকে। এ সময় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় আমিরুল ইসলাম নামে আরও এক যুবককে পাওয়া যায়। তাকেও ফেসবুকে বন্ধুত্বের সূত্র ধরে কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ থেকে ডেকে এনে বন্দী করা হয়েছিল। এ সময় গ্রেফতার করা হয় চক্রের প্রধান আলামিনকে। উদ্ধার হওয়া লিমনের বাবা ফজলুর রহমান বলেন, ছেলের মোবাইল দিয়ে আমাকে ফোন করে বলা হয়, আপনার ছেলে নারীঘটিত ঘটনায় ফেঁসে গেছে। তাকে অজ্ঞাত স্থানে আটকে রাখা হয়েছে। দুই লাখ টাকা বিকাশ করে পাঠান। আপনার ছেলেকে মুক্তি দেয়া হবে। নইলে পরিণতি ভাল হবে না। গ্রেফতার হওয়া আলামিনের বরাত দিয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি মনিরুল ইসলাম জানান, চক্রেটিতে পাঁচ সদস্য রয়েছে। এরা ফেসবুকে আকর্ষণীয় নাম দিয়ে ফেক আইডি খুলে বন্ধুত্ব গড়ে তোলে। এর পর ওই ব্যক্তিকে সুবিধামতো জায়গায় ডেকে নিয়ে ব›ীদ করা হয়। স্বজনদের কাছে টাকা চেয়ে ফোন দিতে বলে। ওদের কথা না শুনলে অথবা টাকা দিতে অস্বীকার করলে ভিকটিমের ওপর চলে বর্বর নির্যাতন। নির্যাতনের কারণে স্বজনদের কাছে কান্নাকাটি করে টাকা পাঠাতে অনুরোধ করা হয়। এভাবে তারা কয়েকজনের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে মোটা অঙ্কের অর্থ।
×