বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুুজিবুর রহমানকে হত্যার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদেশ থেকে ফিরে না এলে বাংলাদেশ অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকত। দেশের বন্যা, ঘূর্ণিঝড়সহ সকল ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলায় আমাদের দেশ অনেক পিছিয়ে থাকত। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমানে দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে রোল মডেল।
শনিবার ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে জাতীয় শ্রমিক লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সৈয়দ আশরাফ আরও বলেন, বাংলাদেশ এখন ঘূর্ণিঝড়, বন্যা মোকাবেলায় অনেক এগিয়ে। শেখ হাসিনা সরকার এসকল দুর্যোগ মোকাবেলায় বিশ্বের কাছে রোল মডেল হিসেবে গণ্য হচ্ছে।
দুর্যোগ মোকাবেলায় বিএনপি সরকারের ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের দেশে দুর্যোগ বার বার আসে। কিন্তু বিষয় হলোÑ খালেদা জিয়া কিভাবে দুর্যোগ মোকাবেলা করেন আর শেখ হাসিনা কিভাবে দুর্যোগ মোকাবেলা করেন। ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার দুর্যোগ মোকাবেলায় নিদারুণ ব্যর্থ হয়েছিল। সে সময় প্রায় ৩৮ হাজার লোককে প্রাণ দিতে হয়েছিল। আর ১৯৯৮ সালে ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল। তৎকালীন বিরোধী দলের নেতা খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ওই বন্যায় ৩০ লাখ লোক মারা যাবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে ওই বন্যায় কোন লোক মারা যায়নি। শেখ হাসিনা সফলভাবে দুর্যোগ মোকাবেলা করেছিলেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুলগেরিয়ায় সরকারী সফরে থাকার সময়ও বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু মোকাবেলায় সব সময় টেলিফোন করে খোঁজখবর নিয়েছেন। প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য সরকারী ছুটি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন। মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে ও নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য চাল এবং অর্থ বরাদ্দ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন দৃঢ় পদক্ষেপ এবং প্রস্তুতির কারণেই এ দুর্যোগ মোকাবেলা সম্ভব হয়েছে। এ ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সরকারের ব্যাপক প্রস্তুতি থাকায় তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। মাত্র ৫-৬ জন লোক মারা গেছে।
স্বাধীনতার পূর্বের কথা তুলে ধরে সৈয়দ আশরাফ বলেন, পূর্ব পাকিস্তান আমলে এখনকার মতো কোন দুর্যোগ মোকাবেলায় মানুষকে আগে সচেতন করা যেত না। দেশের মানুষকে নিরাপদ স্থানে নেয়া সম্ভব হয়নি। তখন পূর্ব পাকিস্তানের জন্য একটি হেলিকপ্টারও ছিল না। দেশ স্বাধীন হওয়ার ফলে আমরা দুর্যোগ মোকাবেলায় সক্ষম হচ্ছি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুলগেরিয়া সফরে থাকাকালে দেশটির প্রেসিডেন্ট বলেছেন, বাংলাদেশের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। এ প্রশংসা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিত্ব ও অসাধারণ যোগ্যতার অর্জন।
জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহমুদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেনÑ আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, জাতীয় শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, কার্যকরী সভাপতি ফজলুল হক মন্টু প্রমুখ।
মোসাদের সঙ্গে কাজ করার পুরস্কার আসলামের প্রমোশনÑ ড. হাছান ॥ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ অভিযোগ করেছেন, দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য ইসরাইলী গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে কাজ করার পুরস্কার হিসেবে বিএনপিতে আসলাম চৌধুরীর প্রমোশন হয়েছে। দলের অনেক সিনিয়র নেতাকে উপেক্ষা করে খালেদা জিয়া আসলাম চৌধুরীকে সরাসরি দলের যুগ্ম-মহাসচিব বানিয়েছেন।
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে গণতান্ত্রিক লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি আরও বলেন, মোসাদের এজেন্টের সঙ্গে যখন আসলাম চৌধুরীর বৈঠকের সচিত্র খবর প্রকাশ করা হয় তখন বিএনপির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে তা অস্বীকার করা হয়। কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদে আসলাম চৌধুরী যখন স্বীকার করেন বিএনপি তখন মুখে কুলুপ দেয়। জিজ্ঞাসাবাদে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে আসলাম স্বীকার করেছেন যে, দলীয় হাইকমান্ডের নির্দেশেই তিনি ইসরাইলী প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। আর মোসাদের সে এজেন্টের অবস্থা ‘ঠাকুর ঘরে কে রে আমি কলা খাই না’Ñ সে অবস্থার মতো।
তিনি বলেন, আসলাম চৌধুরী যে কেবল ভারতের বিভিন্ন শহরে ইসরাইলী এজেন্টের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তা নয়, তিনি বিশেষ ব্যবস্থায় ইসরাইল সফরও করেছেন। আসলে নির্বাচন এলেই খালেদা জিয়া ‘খাঁটি’ মুসলমান হয়ে যান। অথচ মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে বড় শত্রু ইসরাইলের সঙ্গে যুক্ত দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। এটাই হচ্ছে খালেদা জিয়ার আসল চরিত্র।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি এএম আজিকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্যে রাখেনÑ সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, আওয়ামী লীগ নেতা হারুনুর রশীদ, এ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান মানিক, এমএ করিম, শাহাদাত হোসেন প্রমুখ।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: