অনলাইন রিপোর্টার॥ ধর্ম অবমাননার অভিযোগে মারধরের পর লাঞ্ছিত নারায়ণগঞ্জের শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে ফেইসবুকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। হুমকির বিষয়ে সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভাপতি শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু।
আজ রবিবার দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এটার ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে। হুমকি যে কেউ যে কাউকে দিতে পারে- এটা ব্যাপার না। কিন্তু আমাদের তৎপরতা আছে।”
তবে নারায়ণগঞ্জের পিয়ার লতিফ হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যামলের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানান শিল্পমন্ত্রী।
আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, “নারায়ণগঞ্জের যে ঘটনা, এখন পর্যন্ত কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি যে ওই শিক্ষক ধর্ম নিয়ে কোনো কটূক্তি করেছেন।”
‘নবী - সাঃ এর কটূক্তির শাস্তি মৃত্যুদণ্ড’ নামে একটি ফেইসবুক পেইজ থেকে ‘আমাদের দাবি শ্যামলকান্তিকে চাপাতি দিয়ে বিজ্ঞানী বানানো হোক’ শিরোনামে একটি ইভেন্ট খোলা হয়েছে, যাতে ৩১ মে তারিখ দেওয়া হয়েছে।
১৯ মে ওই পেইজে এক পোস্টে লেখা হয়েছে, “শ্যামল কান্তি ভক্তের অপরাধ প্রমাণিত। আল-কায়েদা'র মুজাহিদীনরা এই সব কিছু সম্পর্কে অবগত আছেন, এবং তারা বিষয়টা দেখছেন। কিন্তু আমরা চাই, আল-কায়েদা'র মুজাহিদীনদের পাশাপাশি সাধারণ মুমিন মুসলিমরা ইসলাম ও আল্লাহ নিয়ে কটূক্তিকারীদের হত্যায় এগিয়ে আসুক এবং দায়িত্ব পালন অশেষ নেকী হাসিল করুক। এই উদ্দেশ্যে আমরা সকল তাওহীদি জনতাকে শ্যামল কান্তিকে বিজ্ঞানী বানানোর আহব্বান জানাচ্ছি।”
এরপর শনিবার ‘সালাউদ্দিনের ঘোড়া’ নামে এক পেইজে বলা হয়, “শ্যামল কান্তি ভক্ত এখন ঢাকা মেডিক্যালে আছে। কে আছো শ্যামলকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজেই বিজ্ঞানী বানাবে? ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ভেতর বিজ্ঞানী বানালে লাশ পরিবহনের জন্য সরকার ও পুলিশের খরচ অনেক কমে যাবে।”
গত ১৩ মে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার পিয়ার লতিফ হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে একদল লোক মারধোর করে। পরে তাকে কান ধরিয়ে ওঠ-বস করান স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসামন।
দেশ জুড়ে ওই ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবির মধ্যে সরকার গঠিত মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড গঠিত একটি কমিটি এই ঘটনার তদন্ত করে।
তদন্ত প্রতিবেদনে শ্যামল কান্তির বিরুদ্ধে অভিযোগের কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: