ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

দ্রুত টিআরএম না হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে চার লাখ মানুষ

ভবদহ অঞ্চলে ফের জলাবদ্ধতার শঙ্কা

প্রকাশিত: ০৪:০০, ২৬ জুন ২০১৬

ভবদহ অঞ্চলে ফের জলাবদ্ধতার শঙ্কা

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ ফের জলাবদ্ধতার পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছে ভবদহ অঞ্চলের বাসিন্দারা। গত চার বছর ধরে টিআরএম প্রকল্প না থাকায় এ অঞ্চলের মুক্তেশ্বরী, টেকা, শ্রী ও হরি নদীতে পলি পড়ে ভরাট হয়ে গেছে। ভবদহ স্লুইস গেটও পলি পড়ে ভরাট হয়ে গেছে। এ অবস্থায় চলতি বর্ষা মৌসুমে এ অঞ্চলে জলাবদ্ধতার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভবদহ অঞ্চলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হলে যশোরের অভয়নগর, মণিরামপুর, কেশবপুর ও সদর উপজেলার ১৮৪টি গ্রাম এ দুর্যোগের কবলে পড়বে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে ৪ লাখ মানুষ। এ অবস্থায় দ্রুত এ অঞ্চলে টিআরএম (টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট বা জোয়ারাধার) প্রকল্প চালুর দাবি স্থানীয়দের। ভবদহ অঞ্চল ঘুরে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যশোর-খুলনার ২৭ বিলের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র প্রবাহপথ ভবদহ স্লুইস গেটের মুখে পলি জমায় আসন্ন বর্ষা মৌসুমে বিলপাড়ের ১৮৪ গ্রামে স্থায়ী জলাবদ্ধতার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট (টিআরএম) বাস্তবায়ন না হওয়ায় এমন আশঙ্কা করছেন বিলপারের এলাকাবাসী। এর ফলে একদিকে হাজার হাজার হেক্টর মাছের ঘের পানিতে তলিয়ে যাবে, ক্ষতিগ্রস্ত হবে ৪ লক্ষাধিক মানুষ। কথা হয় কালিশাহকুল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুকুমার ম-লের সঙ্গে। বৃদ্ধ ভুবন মল্লিক বলেন, কুচক্রী মহলের কারণে টিআরএম বাস্তবায়ন হলো না। সরকার আর্মি দিয়ে হলেও টিআরএম করানো দরকার ছিল। সূত্রমতে, ১৯৬১ সালে ভবদহ অঞ্চলে মণিরামপুরের আড়পাতা, বিলকপালিয়া, অভয়নগর উপজেলার দামুখালি, ভবানিপুর, দত্তগাতি, বারান্দি, চুমড়ডাঙ্গা ও খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার কাটেঙ্গা, চেঁচোড়ি, বরুণাসহ ২৭ বিলের পানি নিষ্কাশনে স্লুইস গেট নির্মাণ করা হয়। বর্ষা মৌসুমে ২৭ বিলের বৃষ্টির পানি ভবদহের এই স্লুইস গেট দিয়ে নিষ্কাশিত হয়। ১৯৮৬ সালে স্লুইস গেটে পলি জমায় পানি নিষ্কাশিত না হওয়ায় এ অঞ্চলে স্থায়ী জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। ১৯৮৮ সালের ভয়াবহ বন্যায় ভবদহ অঞ্চলের বিলপাড়ের কুলটিয়া, মশিয়াহাটি, মহিষদিয়া, পোড়াডাঙ্গা, সুজাতপুর, ডুমুরতলা, হাটগাছা, সুন্দলীসহ কয়েক শ’ গ্রামের মানুষ অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়ে। স্থায়ী জলাবদ্ধতার শিকার হয়ে বিলে ফসল না হওয়ায় দেখা দেয় চরম খাদ্য সঙ্কট। তখন পানি নিষ্কাশনে এলাকার ভুক্তোভোগীরা আন্দোলন-সংগ্রাম করেন। এ প্রসঙ্গে পাউবোর জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী প্রবীর কুমার গোস্বামী বলেন, বর্তমানে জোয়ার-ভাটা সৃষ্টি না হওয়ায় ভবদহ স্লুইস গেট সংলগ্ন হরিনদী, শ্রীনদী ভদ্রাসহ অসংখ্য খাল পলি জমে ভরাট হয়ে গেছে। এর ফলে জলাবদ্ধতার আশঙ্কা রয়েছে।
×