ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পঞ্চাশ বছরের জন্য গ্যাস সঙ্কটের সমাধান হচ্ছে ॥ অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৬:০১, ২৬ জুন ২০১৬

পঞ্চাশ বছরের জন্য গ্যাস সঙ্কটের সমাধান হচ্ছে ॥ অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ আগামী পঞ্চাশ বছরের জন্য গ্যাস সঙ্কটের সমাধান হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ২০১৯ সালের পর থেকে চাওয়া মাত্র গ্যাসের সংযোগ দেয়া হবে। তিনি বলেন, এই সুযোগ গ্রহণে বিনিয়োগকারীদের এগিয়ে আসা প্রয়োজন। আপনারা প্রস্তুতি নিন, গ্যাস সঙ্কটের সমাধান হয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, সরকারের আয় বাড়াতে আগামী বছর করদাতাদের সংখ্যা ১২ লাখ থেকে বাড়িয়ে ১৫ লাখ করা হবে। আর পরবর্তী দু’বছরে এই সংখ্যা হবে ২১ লাখ। ভ্যাট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা যদি নমনীয় হোন, হিসাবটা রাখেন তাহলে কোন সমস্যা হয় না। ভ্যাট আদায় বাড়াতে সরকারীভাবে পস এবং ইসিআর মেশিন সরবরাহ করা হবে। শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বাংলাদেশ স্টাডি ট্রাস্ট আয়োজিত ‘স্বপ্ন পূরণের বাজেট’ শীর্ষক সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ স্টাডি ট্রাস্টের সভাপতি ও জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত প্রফেসর ইমেরিটাস ড. এ. কে. আবদুল মোমেনের সভাপতিত্বে ওই অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গবর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিন, এনবিআর চেয়ারম্যান মোঃ নজিবুর রহমান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. কামরুল হাসান খান, একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির সহসভাপতি শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, বিআইডিএসের সিনিয়র গবেষণা পরিচালক ড. নাজনীন আহমেদ, পরিচালক (নিউজ) ৭১ টিভি সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, সহসম্পাদক কেন্দ্রীয় উপকমিটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাশেক রহমান। এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ স্টাডি ট্রাস্টের মহাসচিব ডাঃ মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল) ও ট্রাস্টি বোর্ডের অন্য সদস্যরা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির ট্রেজারার ডাঃ নুজহাত চৌধুরী। অর্থমন্ত্রী বলেন, ত্রিশ বছর আগে করদাতার সংখ্যা ছিল ৭ লাখ। এতদিনে সেই সংখ্যা মাত্র ১২ লাখে দাঁড়িয়েছে। তাই আগামী এক বছরের মধ্যে এই সংখ্যা ১৫ লাখে নিয়ে যাওয়া হবে। তিনি বলেন, বাজেট বাস্তবায়নে পাইপ লাইনে থাকা টাকা দ্রুত ছাড় করণে কাজ করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, দেশের যুবকরা কর দিতে চায়। এটা সম্মানেরও। তিনি বলেন, করমেলায় যুবকদের রিটার্ন জমা দেয়া দেখে বুঝা যায় দেশের মানুষ কর দিতে ইচ্ছুক। তিনি বলেন, আগামী বছর থেকে ভ্যাট আইন কার্যকর করা হবে। ড. মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিন বলেন, ১৯৭২ সালের আদলে পরিকল্পনা কমিশনের ক্ষমতায়নে বিকল্প কিছু করা প্রয়োজন। পরিকল্পনা কমিশনের ইডিআর এবং অর্থবিভাগের সমন্বয়ে একটি ডেভেলপমেন্ট কমিটি করা প্রয়োজন হয়ে পড়ছে। এই কমিটি বাজেট বাস্তবায়নে অর্থায়ন থেকে শুরু করে পুরো প্রক্রিয়া নজরদারি করবে। তিনি বলেন, ব্লু ইকোনোমি বাস্তবায়নে বেশি গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। এটা বড় একটি বিষয়। এছাড়া অর্থপাচার প্রতিরোধ, কর ব্যবস্থাপনা ও ভ্যাট আইন বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন তিনি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. কামরুল হাসান খান বলেন, এবারের বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এটা ভাল দিক। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য পৃথক বাজেট চাওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, হাসপাতালটির সেবার মান বাড়ায় চিকিৎসার জন্য রোগীদের বিদেশ যাওয়া অনেক হ্রাস পেয়েছে। তিনি বলেন, আয়কর দেয়া হয়, কিন্তু সেইভাবে মানুষ সরকারী সেবা পায় না। এনবিআরকে এ বিষয়গুলোর প্রতি নজর দেয়া প্রয়োজন। শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী বলেন, জামায়াত-শিবির সারাদেশে পিস স্কুল চালু করেছে। এখানে কি শিক্ষা দেয়া হয় সেটার খোঁজখবর রাখতে হবে। এছাড়া নকল নোট ও গাইড বইয়ের সমালোচনা করেন এই শিক্ষাবিদ। ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, বাজেটে নারীদের জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এটা অনেক কম হয়েছে। জেন্ডার বৈষম্য দূরীকরণে নারী উন্নয়নে আরও বরাদ্দ বাড়ানো প্রয়োজন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, ড. এ. কে. আবদুল মোমেন। তিনি বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্য-আয়ের দেশ হিসেবে গৌরব অর্জন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করা গেলে-বাংলাদেশ হবে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ-স্থিতিশীল-শান্তিময় টেকসই অর্থনীতির দেশ। এই স্বপ্ন পূরণের জন্য প্রয়োজন উন্নত অবকাঠামো, শিক্ষা-দিক্ষা, কলা-কৌশল এবং স্বাস্থ্যসম্মত উন্নতমানবসম্পদ।
×