ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

স্পেন-ইতালি আগুন লড়াই আজ

প্রকাশিত: ০৪:৩০, ২৭ জুন ২০১৬

স্পেন-ইতালি আগুন লড়াই আজ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নিয়তির নির্মম খেলা বুঝি এমনই! ২০১২ সালে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে ফাইনাল মহারণে খেলেছিল স্পেন ও ইতালি। চার বছর আগে ইউক্রেনের কিয়েভে ১ জুলাইয়ের ফাইনালে চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইতালিকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে টানা দ্বিতীয়বার ইউরো শিরোপা ঘরে তুলেছিল স্প্যানিশরা। চার বছর পর ফ্রান্সে চলমান আসরে আবারও দল দু’টি একে অপরের মুখোমুখি সেই একই আসরে। তবে মঞ্চটা আলাদা। এবার প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালেই দেখা হচ্ছে ইতালি ও স্পেনের। আজ রাতেই কাক্সিক্ষত সেই আগুন লড়াই। ফ্রান্সের সেইন্ট-ডেনিসে রাত ১০টায় শুরু হবে কোয়ার্টার ফাইনালের টিকেট পাওয়ার ধুন্ধুমার ম্যাচটি। আজ মধ্যরাতে শেষ ষোলোর শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড ও নবাগত আইসল্যান্ড। ইংলিশরা ম্যাচটি জিততে প্রত্যয়ের কথা জানিয়েছে। তবে আইসল্যান্ডও ছেড়ে কথা বলবে না বলে হুঁশিয়ারি প্রকাশ করেছে। গত দুই আসরের চ্যাম্পিয়ন স্পেনের ব্যর্থতার কারণেই এবার এত আগেই দেখা হয়ে যাচ্ছে দুুই পরাশক্তির। যে কারণে শেষ আটের আগেই বিদায় নিতে হবে একটি দলকে। শক্তিমত্তার দিক দিয়ে এবার ইতালিকেই এগিয়ে রাখছেন বোদ্ধারা। যে কারণে অনেকের ধারণা, এবার বদলা নিতে পারবে চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। স্পেনও বেশ সমীহ করছে আজ্জুরিদের। ‘ডি’ গ্রুপে স্পেন দ্বিতীয় হওয়াতেই ইতালির বিরুদ্ধে খেলতে হচ্ছে তাদের। কেননা ইতালি ‘ই’ গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয়। স্পেন ও ইতালি দু’দলই অবশ্য গ্রুপ পর্বে একটি করে ম্যাচে হারের স্বাদ পেয়েছে। আর জয় পেয়েছে দু’টি করে ম্যাচে। দু’দলের মুখোমুখি হওয়ার মানেই রুদ্ধশ্বাস নান্দনিক লড়াই। ইতিহাস বলে দু’দল সমানে সমান। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে অবশ্য স্পেন এগিয়ে। ৬ নম্বরে। আর ইতালি ১২ নম্বরে। এ পর্যন্ত ৩৪ বার মুখোমুখি হয়েছে দল দু’টি। এতে দু’দলেরই জয় ও পরাজয় ১০টি করে ম্যাচে। ১৪টি ম্যাচ ড্র হয়। চার বছর আগের ফাইনালে যেন ইতালিকে ফুটবল শেখায় স্পেন! ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে ফাইনালে স্পেনের কাছে যেভাবে হেরেছিল সিজার প্রানদেল্লির দল তাতে এমন উপমাই দেয়া হয়েছিল। স্পেনের শৈল্পিক, ছন্দময় পাসিং ফুটবলের কাছে রীতিমতো অসহায় আত্মসমর্পণ করেছিল আজ্জুরিরা। একপেশে ফাইনালে ইতালিকে উড়িয়ে দিয়ে ইউরো শিরোপা ধরে রাখতে সক্ষম হয় স্প্যানিশরা। অপ্রতিরোধ্য ওই জয়ে ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে ঐতিহাসিক ‘ট্রেবল’ জয়ের কৃতিত্ব দেখায় ইকার ক্যাসিয়াসের দল। অর্থাৎ ইউরো-বিশ্বকাপ-ইউরো জয়ী বিশ্বের একমাত্র দল স্পেন। সেই সঙ্গে ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে টানা দুটি ইউরো জয়েরও রেকর্ড গড়ে স্প্যানিশরা। পাশাপাশি ইউরোর সর্বোচ্চ শিরোপা জয়ে (তিনবার) জার্মানির রেকর্ডেও ভাগ বসায়। এবার তাই শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ ভিসেন্টে ডেল বস্কের দলের। আগের আসরে ফাইনালে উঠে ৪৪ বছরের শিরোপা খরা ঘোচানোর স্বপ্ন বুনেছিল ইতালি। কিন্তু চূড়ান্ত মহারণে নাকানি-চুবানি খেয়ে নিদারুণ হতাশ হতে হয় ইতালিয়ান ফুটবলারদের। চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইতালি প্রায় পাঁচ দশক ইউরোতে সাফল্য পায়নি। ১৯৬৮ সালে সর্বশেষ ও একমাত্র ইউরো জয় করে তারা। এবার তাই আজ্জুরিরা ৪৮ বছরের প্রতীক্ষার অবসান ঘটানোর লক্ষ্যে মিশন শুরু করেছে। ৩২ বছর পর ২০০০ সালে ইতালি ফাইনালে পৌঁছলেও ফ্রান্সের কাছে হেরে শিরোপা বিসর্জন দিয়েছিল। স্পেন, জার্মানি, হল্যান্ডের ভিড়ে গতবারও ইতালিকে নিয়ে খুব বেশি উচ্চাশা ছিল না কারো! তার ওপর ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হিসেবে দলটির উপর আঁচড় কাটে ম্যাচ ফিক্সিং বিতর্ক। এরপরও বড় দলের তকমা কাজে লাগিয়ে বুকে স্বপ্ন নিয়ে মিশন শুরু করে জিয়ানলুইজি বুফন বাহিনী। শেষ পর্যন্ত সবাইকে তাক লাগিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নেয়। কিন্তু ট্রফি নির্ধারণী ম্যাচে আবারও হারের বেদনা সঙ্গী হয়। আজকের ম্যাচটি শিরোপা নির্ধারণী নয়। এরপরও ম্যাচটি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে গত আসরের কারণে। ম্যাচটি জিতলে একটা বড় ধাপ পেরুনো হবে। কিন্তু শিরোপা জিততে হলে পাড়ি দিতে হবে আরও লম্বা পথ। প্রতিশোধ নিয়ে সেই পথে আজ্জুরিরা এগুতে পারে কিনা সেটাই দেখার।
×