স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) ২০১৬-১৭ অর্থবছরে জন্য ২ হাজার ৮৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। রবিবার রাজধানীর একটি হোটেলে সংস্থাটির প্রথম নির্বাচিত মেয়র আনিসুল হক সাংবাদিক সম্মেলনে এ বাজেট ঘোষণা করেন। এটি হচ্ছে ডিএনসিসির ২য় বাজেট। অন্যান্য বছরের মতো এবারও হোল্ডিং ট্যাক্স না বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হয়েছে। মেয়র বলেন, এবারের বাজেটের মূল লক্ষ্য হচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনকে ক্লিন সিটি ও গ্রীন সিটিতে রূপান্তর করা। ঘোষিত বাজেটের চেয়ে আরও প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা উন্নয়নে ব্যয় করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। এ অর্থবছরে নিজস্ব উৎস থেকে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯৪৮ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে হোল্ডিং ট্যাক্স বাবদ রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৪৮০ কোটি টাকা। চলতি বছরের বাজেটে উন্নয়ন খাতে সর্বমোট এক হাজার ৫শ’ ৫৯ কোটি ৩১ লক্ষ টাকা মোট বরাদ্দ রাখা হয়েছে। যা মোট বাজেটের প্রায় ৭৫ শতাংশ। গত ২০১৫-১৬ অর্থবছর প্রস্তাবিত বাজেট ছিল ১ হাজার ৬শ’ ১ কোটি টাকা। গত বছরের সংশোধিত বাজেট ছিল ১ হাজার ১০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। মোট বাজেটের প্রায় ৬৩ ভাগ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়া ঢাকার আশপাশের সদ্য ঘোষিত নতুন যোগ হওয়া ৮টি ইউনিয়নকে নতুন ৩টি জোনে ভাগ করবে। এছাড়া নতুন অরও ৮টি ওয়ার্ড করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে বলে মেয়র জানান।
আনিসুল হক লেন, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে নিজস্ব আয়ের অন্যতম খাত হোল্ডিং ট্যাক্স। মোট রাজস্ব আয়ের ৫০ দশমিক ৬ শতাংশ এ খাত থেকে ধরা হয়েছে। এছাড়া মহাখালী ও আমিনবাজারে সিটি কর্পোরেশনের বাজার থেকে সেলামি বাবদ ১৬০ কোটি টাকা ও ট্রেড লাইসেন্স বাবদ ৪৫ কোটি টাকা এবং সম্পত্তি হস্তান্তর বাবদ ১৩৫ কোটি টাকা আয়ের পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে জানান। এছাড়া ট্রেড লাইসেন্স বাবদ ৪৫ কোটি টাকা, সড়ক খনন ফি বাবদ ৪৫ কোটি টাকা, গরুর হাট ইজারা বাবদ ১৯ কোটি টাকা, বিজ্ঞাপন বাবদ ১৫ কোটি, বিদ্যুত বিল বাবদ ডিএনসিসির ১২ কোটি টাকা আয়ের পরিকল্পনা রয়েছে। অন্যদিকে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বাজেটের ব্যয়ের উল্লেখযোগ্য খাতগুলো হলো- কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন, পারিশ্রমিক ও ভাতা ১৩৫ কোটি টাকা, জ্বালানি, পানি ও বিদ্যুত খাতে ৫১ কোটি ৫০ লাখ টাকা, নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ৪৬ কোটি ৯০ লাখ টাকা, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ২৪ কোটি ২৫ লাখ টাকা, মশক নিয়ন্ত্রণে ২৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।
মেয়র বলেন, ডিএনসিসি এলাকাকে গ্রীন সিটি ও ক্লিন সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় সকল কিছুই করা হবে। আমরা পরিষ্কার নগর গড়তে মোট ৭২টি সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস) স্থাপন করা হচ্ছে। যার মধ্যে ৪৪টি এসটিএস স্থাপন প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এছাড়া বাইকগুলোও জমি পাওয়া সাপেক্ষে নির্মাণের প্রস্তুতি চলছে। কর্পোরেশন এলাকায় ১ হাজারটি বিন লাগানো হয়েছে বাকি আরও ২ হাজারটি বিন লাগানোর প্রক্রিয়া চলেছে। ল্যান্ডফিলের যানবাহনে ভেহিক্যাল সিস্টেম স্থাপনের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারি করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মেয়র বলেন, ডিএনসিসির ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক ফুটপাথ ও নর্দমা নির্মাণ ও উন্নয়ন, মার্কেট নির্মাণ অবকাঠামো উন্নয়ন, কবর স্থান উন্নয়ন সড়কে এলইডি টাইপ সোলার স্ট্রিট লাইট স্থাপনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। গত অর্থ বছরে ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭২ কিলোমিটার সড়ক, ৬২ কিলোমিটার উন্মুক্ত নর্দমা বা পাইপ নর্দমা এবং ৬ কিলোমিটার ফুটপাথ সংস্কার ও উন্নয়ন করা হয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে প্রতিটি নর্দমা পরিষ্কার করা হবে বলে জানান।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, আমরা নির্বাচনী ওয়াদার প্রায় প্রতিটি কাজই ইতোমধ্যে শুরু করেছি। নতুন নগর ভবন নির্মাণের চিন্তা করা হচ্ছে। ডিএনসিসি এলাকার ছোট বড় প্রায় সকল প্রকার বিলবোর্ড উচ্ছেদ করা হয়েছে। কোন প্রকার বাজেট ছাড়াই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ৭২টি এসটিএস স্থাপন করে চলছি। আমরা শহরকে যানজটমুক্ত করতে ডিএনসিসি এলাকার মোহাম্মদপুর, গাবতলীসহ ১০টি স্থানকে যানজটমুক্ত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেছি। নতুন ১২টি ইউলুপ তৈরির কাজ হাতে নিয়েছি। প্রকল্পটি বর্তমানে বিআরটি এমআরটির সঠিক বাস্তবায়নের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে রয়েছে। এটি পাস হলেও এসব লুপ তৈরির কাজ হাতে নেয়া হবে। এতে যানজট অনেকাংশে কমে আসবে।
ঢাকাকে সবুজ ঢাকা হিসেবে গড়ে তুলতে ডিএনসিসি এলাকায় মোট
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: