ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

টঙ্গীর জোড়াখুনের পেছনে মাদক বাণিজ্যের ভাগবাটোয়ারার বিরোধ

প্রকাশিত: ০৬:০৮, ২৯ জুন ২০১৬

টঙ্গীর জোড়াখুনের পেছনে মাদক বাণিজ্যের ভাগবাটোয়ারার বিরোধ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ টঙ্গীর এরশাদনগরে চাঞ্চল্যকর জোড়া খুনের মূলে ছিল এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও মাদক বাণিজ্যের ভাগবাটোয়ারা নিয়ে বিরোধ। মঙ্গলবার এ হত্যাকা-ের মূল পরিকল্পনাকারী কামরুজ্জামান কামুসহ পাঁচজনকে আটক করার পর র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে এ তথ্য। এ খুনের ঘটনায় আটককৃত অপর চারজন হলো কামরুজ্জামান কামুর সহযোগী মোঃ আলী (২৬), মোবারক হোসেন (৩৪), মোঃ সাগর (২২) ও নাজমুল ইসলাম (২০)। সোমবার রাতে সাভারের পলাশবাড়ি এলাকা থেকে তাদের আটক করে র‌্যাব-১। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতেই টঙ্গীর এরশাদনগর এলাকা থেকে হত্যাকা-ে ব্যবহৃত রামদা ও চাপাতি উদ্ধার করা হয়। উল্লেখ্য, গত ১৪ মে রাতে টঙ্গীর এরশাদনগর এলাকায় আলাউদ্দিনের ছেলে শরীফ হোসেন ও একই এলাকার হারুন খানের ছেলে জুম্মন মিয়াকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পরদিন সকালে মরদেহ দু’টি উদ্ধার করে মর্গে পাঠায় পুলিশ। নিহত শরীফ হোসেন স্থানীয় শেখ রাসেল শিশু-কিশোর পরিষদের ৪৯ নং ওয়ার্ড সভাপতি ছিলেন। আর নিহত জুম্মান ছিলেন শরীফের সহযোগী। জুম্মান স্থানীয় একটি টুপি কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। এ ঘটনায় নিহত শরীফ হোসেনের মা ইয়ানুর বেগম বাদী হয়ে কামরুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে ১২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনকে আসামি করে টঙ্গী থানায় মামলা দায়ের করেন। এ হত্যার কারণ সম্পর্কে আসামিরা জানান, মাদকের টাকার ভাগাভাগি, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে নিহত শরীফ প্রভাব খাটিয়ে কামুকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছিল। এই হয়রানি থেকে বাঁচতে এবং নিজের আধিপত্য বিস্তার করতে ঘটনার কিছুদিন আগে কামরুল ইসলাম কামু, তার সহযোগী হিরা, নাজমুল, মোহাম্মদ আলী, রাসেল, সাগর এবং শামীমকে নিয়ে শরীফকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এরই অংশ হিসেবে সোনিয়া নামের একটি মেয়েকে দিয়ে ফাঁদ পাতে। এ সম্পর্কে কিলিং মিশনের সদস্য মোবারক জানান, বছর দেড়েক আগে তার মা-বাবাকে নিহত শরীফ মারধর করেছিল। এরই প্রতিশোধ নেয়ার কথা মনে করিয়ে দিয়ে কামরুল ইসলাম কামু ও মোবারক মিলে পরিকল্পনা করে সোনিয়াকে দিয়ে ফাঁদ পাতার। ঘটনার রাতে তারা শরীফের বাসায় গিয়ে মাদক সেবন করে। রাত বারোটার দিকে তারা সবাই শরীফের বাসা থেকে বের হয়ে আসে। পরে তারা মোল্লাবাড়ির নামায় গিয়ে হাজির হয়। তারা পৌঁছার আগেই কামুর সহযোগী হীরা সোনিয়াকে সেখানে নিয়ে আসে। শরীফ সেখানে পৌঁছেই সোনিয়ার সঙ্গে কথা বলতে থাকে। এরই এক পর্যায়ে তাকে অতর্কিত কোপানো শুরু হয়। এ দৃশ্য দেখে শরীফের বন্ধু জুম্মন ও সোনিয়া দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। তখন তাকেও পেছন থেকে ধাওয়া করে হামলা করা হয়। ওদের উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে শরীফ ও জুম্মন ঘটনাস্থলেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
×