নিজস্ব সংবাদদাতা, হবিগঞ্জ, ২৮ জুন ॥ কয়েক দফা ফিরিয়ে দেয়ার পর অবশেষে হবিগঞ্জের বহুল আলোচিত চার স্কুলছাত্র হত্যা মামলার চার্জশীট আমলে নিয়েছে আদালত। একই মামলায় জেলা কারাগারে আটক ৫ আসামির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করা হয়েছে। এছাড়া এই মামলার পলাতক আসামি অটোরিক্সা চালক বিল্লাল হোসেন, উস্তার মিয়া ও বাবুল আহমদকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের জেলা জজ কিরণ শংকর হালদার পুলিশের দাখিলকৃত এই অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে মামলার শুনানির জন্য পরবর্তী তারিখ ২৫ জুলাই বলে আদেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবুল হাসেম মোল্লা মাসুম জনকণ্ঠকে জানান, এই মামলার অন্যতম আসামি রুবেল মিয়ার ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্নের পর ওই পত্র আমলে নিলেন আদালত।
উল্লেখ্য, জেলার বাহুবল উপজেলার সুন্দ্রাটিকি গ্রামের বাসিন্দা ও সুন্দ্রাটিকি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র জাকারিয়া আহমেদ শুভ (৮), তার চাচাত ভাই মনির মিয়া (৭), তাজেল মিয়া (১০) ও মাদ্রাসা ছাত্র ইসমাইল হোসেনকে (১০) চলতি বছরের গত ১২ ফেব্রুয়ারি গ্রামের পার্শ্ববর্তী খেলার মাঠ থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায় ওই কিলিং গ্রুপের প্রধান হোতা আব্দুল আলী বাঘালের নেতৃত্বে অভিযুক্ত আসামিরা। পরবর্তীতে এই কোমলমতি শিশুদের নির্মমভাবে হত্যা করে একই গ্রামের সন্নিকটে অবস্থিত ইসাবিল নামক স্থানের বালির স্তূপের নিচে পুঁতে রাখে অপহরণকারীরা। এদিকে ১৭ ফেব্রুয়ারি এই স্থান থেকে চার ছাত্রের ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
উক্ত ঘটনায় মামলা হলে তার তদন্তের দায়িত্ব পান ডিবি পুলিশের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মুকতাদির হোসেন। তিনি ৪৮ দিন তদন্ত শেষে ৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে নিম্নোক্ত ব্যক্তিদের অভিযুক্ত করে চার্জশীট জমা দেন।
অভিযুক্ত হলেন পঞ্চায়েত সর্দার আব্দুল আলী বাগাল, তার ছেলে জুয়েল মিয়া ও রুবেল মিয়া, ভাতিজা সাহেদ আলী ওরফে সায়েদ, অন্যতম সহযোগী হাবিবুর রহমান আরজু, উস্তার মিয়া, বেলাল মিয়া ও বাবুল মিয়া। তবে চার্জশীটে নানা ত্রুটি থাকাসহ অন্য আরও কয়েকটি কারণে একাধিকবার অভিযোগ পত্রটি আমলে নিতে অপারগতা প্রকাশ করে আদালত।
এছাড়া সিএনজি অটোরিক্সা চালক বাচ্চু মিয়া র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় এবং ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় গ্রেফতারকৃত সালেহ আহমেদ ও বশির আহমেদকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়ার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। অভিযুক্তদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত পলাতক রয়েছেন উস্তার মিয়া, বেলাল মিয়া ও বাবুল মিয়া। এদিকে এই মামলার চার্জশীট গৃহীত হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে নিহতের পরিবারের সদস্যরা।