ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতিবাদে কর্মসূচী

কক্সবাজারে ট্রাফিক পুলিশের চাঁদাবাজি

প্রকাশিত: ০৬:৪২, ২৯ জুন ২০১৬

কক্সবাজারে ট্রাফিক পুলিশের চাঁদাবাজি

এইচএম এরশাদ, কক্সবাজার ॥ ঈদ সামনে রেখে কক্সবাজার ট্রাফিক পুলিশ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন আটকানো- নগদ নারায়ণে ছেড়ে দেয়াসহ চাঁদাবাজিতে লিপ্ত রয়েছে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও গ্রাম থেকে শহরে প্রবেশকৃত গাড়ি অহেতুক আটক করে টাকা আদায়ের অহরহ ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে। চাহিদামতো চাঁদা না দিলে চালক ও মালিকদের নাজেহাল করে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। হয়রানি থেকে বাঁচার জন্য চালক ও মালিকরা আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে মঙ্গলবার সকালে বিভিন্ন কর্মসূচী ঘোষণা করেছে। অভিযোগে জানা গেছে, কক্সবাজার শহর যানবাহন নিয়ন্ত্রণ শাখা ট্রাফিক বিভাগে বর্তমানে ২ ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই), দু’জন সার্জেন্টসহ ১০ জন কনস্টেবল রয়েছে। তারা বিভিন্ন যানবাহন থেকে টোকেনভিত্তিক অন্তত কোটি টাকা চাঁদাবাজি করে আসছে প্রত্যেক মাসে। প্রতিদিন অবৈধ হিসেবে মোটরসাইকেল, সিএনজি, মাইক্রোবাস, কার, ম্যাজিক, চাদের গাড়ি, মাহিন্দ্র, দূরপাল্লার চেয়ারকোচসহ যানবাহন আটক করে। কিন্তু বৈধ কাগজ থাকলেও যতসব ঝামেলা। কাগজপত্র না থাকলেই সব ঝামেলা শেষ। শুধু দিতে হয় টাকা। প্রতিদিন সন্ধ্যার পরপরই শহরের ট্র্রাফিক অফিসে গাড়ির কাগজপত্র বেচাকেনার হাট বসে বলে জানা গেছে। এমনও অভিযোগ রয়েছে, যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলার নকল রসিদ (কেইস সিøপ) ধরিয়ে দেয়া হয়। জরিমানা আদায়ের নামে পুরো টাকাই টিআইদের পকেটস্থ করার অহরহ অভিযোগ রয়েছে। রামু উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের আসকর খিল এলাকার বাসিন্দা সিএনজিচালক মনজুর আলম জানান, তার একটি সিএনজি আছে। সেটি চালিয়ে পরিবারের জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। তিনি জানান, ২৬ জুন একজন মুমূর্ষু রোগী নিয়ে রামু থেকে জেলা সদর হাসপাতালে আসার পথে রাত ১১টার দিকে শহরের ভোলাবাবুর পেট্রোলপাম্প এলাকা থেকে ট্রাফিক সার্জেন্ট মুহিবুল্লাহ গাড়ির কাগজপত্র তল্লাশি করেন এবং গাড়িটি আটক করে পুরনো পুলিশ লাইনে নিয়ে আসে। ২৭ জুন সন্ধ্যার পর গাড়ির কাগজপত্র নিয়ে ট্রাফিক অফিসে দেখা করতে বলেন। মনজুর ২৭ জুন সন্ধ্যার পর মূল কাগজপত্র নিয়ে ট্রাফিক অফিসে গেলে জরিমানা বাবদ ৮ হাজার ৭শ’ টাকা দাবি করা হয়। তিনি দাবিকৃত টাকার কিছুটা কম দিতে চাইলে অশালীন ভাষায় গালমন্দ করে অফিস থেকে বের কওে দেয়া হয়। একই ঘটনা জানালেন ঘোনারপাড়া এলাকার আরেক চালক নুরুল আমিন। গত ২১ জুন সন্ধ্যা সাড়ে ৪টায় তার সিএনজিটি আটক করে। গাড়ির কাগজপত্র নিয়ে ট্রাফিক অফিসে যোগাযোগ করার পরও গত ৬দিন পর্যন্ত কালক্ষেপণ করে জরিমানা হিসেবে ৮ হাজার ৭শ’ টাকা দাবি করে। তবে বৈধ কাগজপত্র থাকার পরেও জরিমানার নামে অবৈধ টাকা আদায়ের ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা ফোন করলে সোমবার সন্ধ্যায় সিএনজিটি ছেড়ে দেন। একই ঘটনার শিকার হয়েছেন, পিএমখালীর চালক আবদুল্লাহ, চালক মানিকসহ অর্ধশত লাইসেন্সধারী চালক। কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে, জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে অভিযোগসহকারে সাক্ষাত, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপি বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান। এ ব্যাপারে ট্রাফিক ইন্সপেক্টর বজলু ও দেলোয়ার চাঁদাবাজির অভিযোগ সত্য নয় দাবি করে বলেন, আমরা সরকারী দায়িত্ব পালন করছি। এখানে কে কী বলছে সেটা আমাদের দেখার বিষয় নয়।
×