ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মহাকাশ স্টেশন বানাচ্ছে বেইজিং!

প্রকাশিত: ১৯:৩৬, ২৯ জুন ২০১৬

মহাকাশ স্টেশন বানাচ্ছে বেইজিং!

অনলাইন ডেস্ক॥ দক্ষিণ চীন সাগরের তলায় আরও একটা ‘গ্রেট ওয়াল অফ চায়না’ বা চীনের প্রাচীর বানাচ্ছে বেইজিং। এছাড়া ভূপৃষ্ঠ থেকে ৩৭০ কিলোমিটার উপরে থাকা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস)-এর আদলে - সমুদ্রের নিচে আরও একটি ‘মহাকাশ স্টেশন’ বানানো হচ্ছে! দক্ষিণ চীন সাগরের তলার সেই ‘মহাকাশ স্টেশনে’ও থাকা ও যাওয়া-আসা করবেন ‘জলচর’ মানুষেরা! শুনলে অবাক হলেও এটাই সত্য যে, দক্ষিণ চীন সাগরের ৩ হাজার মিটার বা ৯ হাজার ৮০০ ফুট নীচে চীন এই ‘মহাকাশ স্টেশন’ বানাচ্ছে। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট থেকে জানা যায়, দক্ষিণ চীন সাগরেই রোবট দিয়ে বানানো হচ্ছে এই ‘গ্রেট ওয়াল’। যার উচ্চতা ও বিস্তারটা হবে একেবারে মাথার উপর উঁচিয়ে থাকা চীনের প্রাচীরের মতোই! মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট আর মহাকাশ থেকে ‘নজরদার’ উপগ্রহগুলোর পাঠানো ছবি জানাচ্ছে, সমুদ্রের তলায় ওই ‘গ্রেট ওয়াল’ বানানো হচ্ছে রোবট আর ড্রোন দিয়ে। সমুদ্রের তলায় ঘাপ্‌টি মেরে লুকিয়ে থাকা শত্রু পক্ষের সাবমেরিনগুলোর অবস্থান আর গতিবিধির ওপর সব সময় নজর রাখার জন্যই বানানো হচ্ছে ওই দুই নম্বর ‘গ্রেট ওয়াল’। আর ওই সমুদ্রের তলাতেই যে ‘মহাকাশ স্টেশন’টি বানাচ্ছে চীন তার কাজ হবে মূলত দু’টি। প্রথমত, সেটি ওই দুই নম্বর ‘গ্রেট ওয়াল’-এর নজরদারির কাজকর্মের ওপর নজর রাখবে। তাকে বেতার তরঙ্গে নির্দেশ পাঠাবে আর সমুদ্রের তলায় থাকা ওই ‘গ্রেট ওয়াল’ থেকে পাঠানো যাবতীয় তথ্য রেকর্ড করবে ও তা বিশ্লেষণ করবে। আর সেই সব গোপন তথ্য পাঠাবে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ‘রেড আর্মি’র কাছে। নাসা ও ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির ‘গ্রাউন্ড স্টেশন’ আর মহাকাশের সুদূরতম প্রান্তের সঙ্গে যে ভাবে যোগাযোগ রাখে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন। আর তার দ্বিতীয় কাজটি হবে, সমুদ্রের তলায় লুকিয়ে থাকা বিভিন্ন খনিজ পদার্থের সন্ধান করা। কারণ, সমুদ্রের অতটা গভীরতায় ওই স্টেশনের ভেতরটাও বানানো হচ্ছে অবিকল আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের আদলে। আর মহাকাশে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনটিও যেমন কক্ষপথে ঘোরার সময় তার অবস্থান বদলায়, তেমনই দক্ষিণ চিন সাগরের তলায় চিন যে ‘মহাকাশ স্টেশন’টি বানাচ্ছে, সেটিও প্রয়োজনে তার অবস্থান বদলাতে পারবে যখন-তখন। তবে প্রধান বিষয় হল, কোন সমুদ্রেরই এতটা গভীরতায় কোন দেশই এখনও পর্যন্ত ‘মহাকাশ স্টেশন’ বা অত বড় প্রাচীর বানানোর সাহস দেখায়নি! আরও তাৎপর্যের বিষয় হল, ওই দু’টি ‘মেগা-স্ট্রাকচার’ বানানোর জন্য চীন যে জায়গাটিকে বেছে নিয়েছে, সেটি হল দক্ষিণ চীন সাগর। যে এলাকার দখলদারি নিয়ে জাপান, ভিয়েতনাম ও ফিলিপাইনের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছে চীন। যার প্রেক্ষিতে আমেরিকাকেও রণতরী পাঠাতে হয়েছে দক্ষিণ চীন সাগরে। দিন কয়েক আগে ঘটা করে চীনের সামরিক কর্তারা প্রকাশ্যেই ওই রোবট আর ড্রোন বানানোর কথা ঘোষণা করেছেন। সাংবাদিকদের ডেকে দেখিয়েছেন ড্রোনগুলো। যেগুলো স্থলে ও জলে আর সমুদ্রের বিভিন্ন গভীরতায় সমান ভাবেই কর্মক্ষম ও পারদর্শী। ওই ড্রোনগুলোতে সাবমেরিন-বিধ্বংসী পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রও থাকবে। থাকবে জল থেকে আকাশে ছোঁড়ার জন্য দূর পাল্লার আন্তর্মহাদেশীয় ব্যালিস্টিক মিসাইলও। তবে শুধুই আশঙ্কা নয়। কিছু আশার কথাও রয়েছে চীনের ওই ‘বাহুবল’ দেখানোর মরিয়া চেষ্টায়। আর তা হল, সমুদ্রের তলায় বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্যেও তা জরুরি হয়ে পড়বে। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
×