ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অবাধে পোনা পাচার ॥ হুমকির মুখে মাছ চাষ

প্রকাশিত: ০৪:০৬, ৩০ জুন ২০১৬

অবাধে পোনা পাচার ॥ হুমকির মুখে মাছ চাষ

নিজস্ব সংবাদদাতা, সান্তাহার, ২৯ জুন ॥ সান্তাহারসহ বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা ও আশপাশ এলাকা থেকে ভারতে ফের অবাধে পাচার হয়ে যা"েছ দেশীয় মাগুর, শিং, চিতল এবং পাঙ্গাশ মাছের কোটি কোটি পোনা। এর মধ্যে পাঙ্গাশ পোনা পাচার হ"েছ সবচেয়ে বেশি। ভারতে বিপুল চাহিদা থাকা সত্ত্বেও বৈধ পথে না দিয়ে চোরাই পথ ব্যবহার করার কারণে সরকার হারা"েছ কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। পক্ষান্তরে হুমকির মুখে পড়েছে দেশ বিখ্যাত আদমদীঘি উপজেলাসহ আশপাশ এলাকার মৎস্য চাষ খাত। পাচারকারীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেশি দামে পোনা কিনে মাছ চাষ করতে হিমশিম খা"েছ মাছ চাষীরা। ফলে হাট-বাজারে বেড়ে যা"েছ খাওয়ার মাছের দাম। জানা গেছে, বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকার পর ফের অবাধে পাচার শুরু হয়েছে সাদা সোনা খ্যাত মৎস্য পোনা। বাংলাদেশ ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষীদের চোখের সামনে দিয়ে দিনে-রাতে অবাধে পোনা পাচার হয়ে যা"েছ বলে মৎস্য চাষীরা দাবি করেছেন। তাঁরা জানান, দেশীয় জাতের মাগুর, শিং ও চিতল মাছের পোনা ভারতে পাচার হয়ে যা"েছ হিলি (আটাপাড়া) সীমান্ত দিয়ে আর পাঙ্গাস পোনা পাচার হ"েছ বেনাপোলের পুটখালী সীমান্ত দিয়ে। অন্যান্য পণ্য আনা-নেয়ার ব্যাপারে ভারতীয় সীমান্তরক্ষীরা কঠোর হলেও মাছের পোনার ক্ষেত্রে তারা ব্যাপক উদার ভূমিকা পালন করে চলেছেন বলে ওই সূত্রে দাবি করা হয়েছে। সূত্র জানান, এর পূর্বে ভারতীয় ক্রেতারা বিনা পাসপোর্টে আদমদীঘিসহ আশপাশ এলাকায় এসে অবাধে পোনা মাছ কেনাকাটা করত। কিš' এবার উল্টো বাংলাদেশী পাচারকারীরা বিনা পাসপোর্টে ভারতের কোলকাতার নয়াহাটি (নওহাটা)তে বসে পোনা পাচার কারবার নিয়ন্ত্রণ করছে। তারা ভারতে পাচার হওয়া পোনা মাছের দাম বাবদ কোটি কোটি নগদ টাকা চোরাইপথে বাংলাদেশে পাঠা"েছ। ফলে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে। মাছচাষীরা জানান, সান্তাহারসহ আদমদীঘি উপজেলা এবং আশপাশ এলাকার বিপুলসংখ্যক পুকুরে উৎপাদন হওয়া ওইসব জাতের মাছের পোনা দেশীয় বাজারে প্রতি এক লাখ পিস ২০-২২ হাজার টাকায় কেনা-বেচা হয়ে থাকে। কিš' গত এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি থেকে পাচার শুরু হওয়ার পর সেই পোনার দাম বেড়ে দ্বিগুণ অর্থাৎ প্রতি লাখ পোনা ৪২-৪৫ হাজার টাকায় ঠেকেছে। পক্ষান্তরে ভারতে এই পোনা বিক্রি হ"েছ প্রতি লাখ ৮৫ হাজার টাকায়। লাভের পরিমাণ দ্বিগুণ হওয়ার কারণে পোনা মাছের ফড়িয়ারা পাচার কারবারে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে বলে মাছচাষীরা জানিয়েছেন। তারা জানান, সান্তাহারসহ আদমদীঘি উপজেলা ও আশপাশ এলাকার প্রায় ৪ হাজার পুকুরে উৎপাদন হওয়া মাছের পোনা ফড়িয়ারা কিনে এনে আদমদীঘি রেলস্টেশনের দক্ষিণ পাশে, পারইল বাজারে, বগারবাড়ি (কান্তা), আবাদপুকুর ও খানপুকুর নামক ¯'ানে হাউজিং করে। দুইদিন বিশ্রাম দেয়ার পর পোনাগুলো ড্রামে ভরা হয়। পরে ট্রাক বোঝাই করে যশোর ও দিনাজপুর মোকামে যাওয়ার নাম করে এলাকা ছেড়ে যায়। এর পর সেগুলো পাচার করার জন্য নিয়ে যায় হয় ওইসব সীমান্তে। ¯'ানীয় থানা পুলিশ ঘটনাটি জানলেও নীরব থাকে রহস্যময় কারণে।
×