ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল ভার্সিটির ২৬১ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা

প্রকাশিত: ০৪:১২, ৩০ জুন ২০১৬

বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল ভার্সিটির ২৬১ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগামী ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরের জন্য ২৬১ কোটি ৩৬ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়। বুধবার বিশ্ববিদ্যায়ের বি-ব্লকের নিচতলায় ডাঃ মিলন মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাজেট সম্পর্কিত এ তথ্য তুলে ধরেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আলী আসগর মোড়ল। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খান উপস্থিত ছিলেন। গত অর্থবছরে বাজেটের পরিমাণ ছিল ২৪২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা (সংশোধিত)। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শহীদুল্লাহ সিকদার, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডাঃ এ.এস.এম জাকারিয়া (স্বপন), রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডাঃ এবিএম আব্দুল হান্নান, প্রক্টর অধ্যাপক ডাঃ মোঃ হাবিবুর রহমান দুলাল, পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান ভূঁঞা, অতিরিক্ত পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) গৌর কুমার মিত্র প্রমুখ। এর আগে সকাল এগারোটায় একই স্থানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬২তম সিন্ডিকেট সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরের বাজেট অনুমোদিত হয়। ওই সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজস্ব বাজেটের পাশাপাশি দ্বিতীয়বারের মতো উন্নয়ন বাজেটও তুলে ধরা হয়। গুরুত্বপূর্ণ ওই সিন্ডিকেট সভায় সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খান। সিন্ডিকেট সভায় বাজেট উপস্থাপন করেন অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আলী আসগর মোড়ল। ঘোষিত বাজেটের মধ্যে (২৬১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের জন্য ১৬৮ কোটি লাখ টাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ৯৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকার বাজেট অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বাজেটে বেতন ও ভাতাদি বাবদ ১৯৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকা, পেনশন বাবদ ১৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, শিক্ষা ও অন্যান্য সাধারণ আনুষঙ্গিক ৩৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, গবেষণায় ২ কোটি ৯৩ লাখ টাকা এবং মূলধন মঞ্জুরি বাবদ ৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আলী আসগর মোড়ল লিখিত বক্তব্যে জানান, ২৬১ কোটি ৩৬ লাখ টাকার মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে অনুদান পাওয়া যাবে ২৩৭ কোটি ৭৯ লাখ টাকা এবং নিজস্ব আয় থেকে ব্যয় নির্বাহের পরিমাণ ধরা হয়েছে ২৩ কোটি টাকা। ফলে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সামগ্রিক ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ৫৭ লাখ টাকা। এই ঘাটতি কাটিয়ে ওঠার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সর্বোত্তম প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বিভাগ থেকে আয় হয়েছে ১৪০.৯১ কোটি টাকা। প্রশাসনিক অনুমোদন গ্রহণ করে বিভাগ ১১৯.৮৮ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। বিভাগ থেকে কেন্দ্রীয় তহবিলে ১৪.৩৯ কোটি টাকা আনয়ন করেছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতালের সিট ভাড়া, ভর্তি ফি ইত্যাদি খাতে মোট ১৪.৩৯ কোটি টাকা আয় হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আলী আসগর মোড়ল লিখিত বক্তব্যে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের যানবাহন রক্ষণাবেক্ষণ ও ক্রয়, বিদ্যুত সেবা, পূর্ত ও সংরক্ষণ, লিনিয়ার এক্সিলেটর (লাইনাক মেশিন), বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যানটেশন ইউনিট, ভবিষ্যত তহবিল ব্যবস্থাপনা, রেসিডেন্টদের পারিতোষিক, জেনারেল ইমার্জেন্সি, সুপার স্পেশালাইজড হসপিটাল, ওয়ান পয়েন্ট চেকআপ সেন্টার ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরেন। অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আলী আসগর মোড়ল আরও বলেন, আমাদের হাসপাতালে নার্সের সংখ্যা অত্যন্ত অপ্রতুল। ইতোমধ্যেই ৯২ জন নতুন নার্স নিয়োগ করা হয়েছে এবং আরও ৪০০ জন নার্সের পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। এছাড়া গত ১৮ বছরের মধ্যে এবারই প্রথম ২১ জন নার্সকে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। ফলে নার্সদের মধ্যে কর্মস্পৃহা বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪৭টি বিভাগ চালু আছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতালে বর্তমানে ১ হাজার ৯০৪টি রোগীর বেড রয়েছে, যা আইপিজিএমআর-এর সময় ছিল ৮শ’টি । বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিষয়ের উপর মোট ৮৯টি কোর্স চালু আছে, যার মধ্যে ৩ হাজার ৩শ’ জন চিকিৎসক উচ্চ শিক্ষায় অধ্যয়নরত। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন দেশের ক্রমবর্ধমান জনগণের চিকিৎসা সেবা প্রদানের লক্ষ্যে নতুন নতুন বিভাগ চালু করছে এবং এই সকল বিভাগ পরিচালনার জন্য দক্ষ জনবল নিয়োগ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু সংখ্যক শিক্ষকদের নিয়োগ ও পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক ৪৬০ জন, চিকিৎসক ৭৫৭ জন, কর্মকর্তা ১৬০ জন, নার্স ৯৩৮ জন এবং কর্মচারী ১৩৯১ জনসহ মোট জনবল ৩৮০৬ জন । নতুন জাতীয় পে-স্কেল-২০১৫ ঘোষণা হওয়ায় ২০১৪-১৫ অর্থবছরের তুলনায় বেতন-ভাতা খাতে ৩০ কোটি ৮৪ লাখ টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ রাখা হয়েছে এবং দৈনিক ভিত্তিক মজুরি হার পরিবর্তন করে ৩য় শ্রেণী ৪০০ টাকা এবং ৪র্থ শ্রেণী ৩৫০ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। সিন্ডিকেট সভায় উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য, সংসদ সদস্য মোঃ মাহবুব আলী, সংসদ সদস্য ডাঃ মোঃ রুস্তম আলী ফরাজী, সংসদ সদস্য ডাঃ মোঃ মোজাম্মেল হোসেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বিমান কুমার সাহা, অতিরিক্ত সচিব গাজী মোহাম্মদ নূরুল কবীর, বিএসএমএমইউ’র উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধাপক ডাঃ মোঃ শহীদুল্লাহ সিকদার, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডাঃ এ.এস.এম জাকারিয়া (স্বপন), বাংলাদেশ মেডিক্যাল এাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি অধাপক ডাঃ মাহমুদ হাসান, বিসিপিএস’র সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ মোঃ সানাওয়ার হোসেন, বিএমডিসি’র সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ মোহাম্মদ সহিদুল্লা, অধ্যাপক কাজী শহীদুল আলম, অধ্যাপক মোঃ নজরুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বেসিক সাইন্স ও প্যারা ক্লিনিক্যাল সাইন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক এম ইকবাল আর্সলান, মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডাঃ এবিএম আব্দুল্লাহ, সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডাঃ কনক কান্তি বড়ুয়া, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ মোঃ ইসমাইল খান, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডাঃ এবিএম আব্দুল হান্নান, সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডাঃ ছয়েফ উদ্দিন আহমেদ, কার্ডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ মোঃ হারিসুল হক প্রমুখ।
×