ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শেয়ার লেনদেনে সিডিবিএলের চার্জ কমছে

প্রকাশিত: ০৪:১৬, ৪ জুলাই ২০১৬

শেয়ার লেনদেনে সিডিবিএলের চার্জ কমছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ শেয়ার কেনাবেচায় সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি ফি কমানো হচ্ছে। দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জসহ ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর দাবির মুখে শেয়ার কেনাবেচায় এ ফি কমানোর উদ্যোগ নিচ্ছে বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এজন্য প্রয়োজনীয় আইন সংশোধনের প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে রয়েছে। কমিশনের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান বলেন, বিদ্যমান আইন অনুযায়ী শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড, বন্ডসহ সব ধরনের সিকিউরিটিজ কেনাবেচায় সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) ফি প্রতি লাখ টাকায় ২৫ টাকা। কোম্পানির শেয়ার মেয়াদি (ক্লোজড-অ্যান্ড) মিউচুয়াল ফান্ড কেনাবেচায় এ হার অর্ধেক কমিয়ে সাড়ে ১২ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বিদ্যমান আইনে এ ফি প্রতি লাখে ২৫ টাকা হলেও বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি নিচ্ছে ১৫ টাকা হারে। তবে শেয়ারবাজারে লেনদেনে সিডিবিএল ফি কমানো হলেও এর উপকার সাধারণ বিনিয়োগকারীরা পাবেন কি-না তা স্পষ্ট নয়। নিয়ন্ত্রক সংস্থার কর্মকর্তারা মনে করেন, এতে বিনিয়োগকারীদের লেনদেন ফি কমানোর সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তবে তা নির্ভর করবে ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকের ওপর। অন্যদিকে কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, শেয়ার বা মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ড কেনাবেচায় বিনিয়োগকারীরা এ থেকে সুবিধা পাবেন না। কারণ প্রতিষ্ঠানগুলো বিনিয়োগকারী ভেদে প্রতি ১০০ টাকার শেয়ার কেনাবেচায় ৩০ পয়সা থেকে ৫০ পয়সা পর্যন্ত লেনদেন ফি নিয়ে থাকে। প্রতি লাখ টাকায় বর্তমান সিডিবিএল ফি ১৫ টাকা। অর্থাৎ দেড় পয়সা। এখন ফি কমানো হলে তা সোয়া পয়সায় নামবে। তারা বলেন, ফি কমানোর পরিমাণ এতই কম যে, তা ব্রোকারেজ ফি কমানোর মতো যথেষ্ট নয়। তবে বড় অঙ্কের ট্রেজারি বন্ড, ইটিএফ এবং স্বল্প মূলধনী বাজারভুক্ত কোম্পানির শেয়ার কেনাবেচায় সুবিধা পাবেন বিনিয়োগকারীরা। বিএসইসির মুখপাত্র জানান, নতুন সংশোধন প্রস্তাবে শেয়ারসহ নানা ইন্সট্রুমেন্টের ক্ষেত্রে ছয়টি ক্যাটাগরি করা হয়েছে। এগুলো হলো- ইক্যুইটি (শেয়ার), স্বল্প মূলধনী কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধিত পৃথক মার্কেটভুক্ত কোম্পানির শেয়ার, এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড (ইটিএফ), করপোরেট বন্ড, বে-মেয়াদী (ওপেন অ্যান্ড) মিউচুয়াল ফান্ড। নতুন সংশোধন প্রস্তাব অনুযায়ী স্বল্প মূলধনী কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধিত পৃথক মার্কেটভুক্ত কোম্পানির প্রতি এক লাখ টাকা মূল্যের শেয়ার কেনাবেচায় সিডিবিএল ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ টাকা। এছাড়া প্রতি লাখ টাকা মূল্যের বে-মেয়াদী মিউচুয়াল ফান্ড লেনদেনে সিডিবিএল ফি ১৫ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। আর সরকারী সিকিউরিটিজ (ট্রেজারি বন্ড, বিল বন্ড ইত্যাদি) কেনাবেচায় প্রতি লেনদেনে ১০ টাকা এবং কর্পোরেট বন্ড কেনাবেচায় প্রতি লেনদেনে ২৫ টাকা সিডিবিএল ফি প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া ইটিএফের মার্কেট মেকারদের লেনদেনে যে কোনো প্রকার সিডিবিএল ফি থেকে অব্যাহতি দেয়ার কথা বলা হয়েছে। একই সুবিধা পাবেন অথরাইজড পার্টিসিপেন্টস (এপি) প্রতিষ্ঠানগুলো। জানা গেছে, গত ২৯ জুন অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় সিডিএস ফি সংক্রান্ত ডিপোজিটরি (ব্যবহারিক) প্রবিধানমালা ২০০৩-এর সিডিউল ৪ সংশোধনের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। শিগগির তা পত্রিকায় প্রকাশ করে জনমত যাচাই করা হবে। আগামী আগস্ট বা সেপ্টেম্বরের মধ্যে তা চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। বিএসইসির মুখপাত্র বলেন, এখন শেয়ার কেনাবেচায় ফি প্রতি লাখে ২৫ টাকা হলেও সিডিবিএল নিচ্ছে ১৫ টাকা। নতুন আইনে নিয়ন্ত্রক সংস্থা তা সাড়ে ১২ টাকা করার প্রস্তাব করেছে। এটি চূড়ান্তভাবে অনুমোদিত হলে সিডিবিএল থেকেও কম ফি আদায় করতে পারবে।
×