ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রাক্ষুসে খিদে! ১৮ মাসের শিশুর ওজন ২২ কেজি!

প্রকাশিত: ২২:০৪, ৬ জুলাই ২০১৬

রাক্ষুসে খিদে! ১৮ মাসের শিশুর ওজন ২২ কেজি!

অনলাইন ডেস্ক ॥ জন্মের পর থেকেই লাফিয়ে বাড়ছিল ওজন। রোগের লক্ষণ বলতে শুধু ছিল খিদে। কোনওভাবেই খাওয়া থামাতে পারত না শিশুটি। খাবার না পেলেই শুরু হত উদ্দাম কান্না। লাগামছাড়া খাওয়ার ফল? জন্মের দেড় বছরের মধ্যেই তার ওজন গিয়ে ঠেকেছে ২২ কেজিতে! অতিরিক্ত ওজনের জন্য সে না পারে চলতে, না পারে বসতে। পুণের বাসিন্দা ওই শিশু শ্রীজিত হিঙ্গানকরের মা রূপালি জানান, জন্মের সময় শ্রীজিতের ওজন ছিল ২.৫ কেজি। ৬ মাস বয়সে তার ওজন দাঁড়ায় ৪ কেজি। আর যখন ১০ মাস বয়স, তার ওজন ১৭ কেজি হয়ে যায়। এই ভাবেই ক্রমে বাড়ছিল তার ওজন। শুধু অত্যধিক খাওয়া ছাড়া আর কোনও লক্ষণ না থাকায় প্রথম দিকে এই বিষয়টির মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকত্ব চোখে পড়েনি বাবা-মার। সমস্যা ছিল একটাই, বয়সের সঙ্গে ওজনের সামঞ্জস্য না থাকায় ১ বছর বয়স হয়ে যাওয়ার পরেও নিজে থেকে বসতে পর্যন্ত পারত না সে। চিন্তিত বাবা-মা শ্রীজিতকে নিয়ে দ্বারস্থ হন চিকিৎসকের। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা যায়, শ্রীজিতের এই রাক্ষুসে খিদের জন্য দায়ী লেপটিন নামে এক হরমোন। শ্রীজিত আসলে এই হরমোন সংক্রান্ত একটি বিরল রোগে আক্রান্ত। তার দেহে লেপটিন নামে হরমোনের অভাব রয়েছে। যার চিকিৎসা এই দেশে নেই। কী কাজ এই লেপটিনের? চিকিৎসকেরা জানান, লেপটিনের প্রভাবে একজন বুঝতে পারেন তাঁর পেট ভর্তি হয়েছে কি না। পেট ভর্তি হয়ে গেলে মস্তিষ্ককে খাওয়া থামানোর সিগন্যাল দেয় এই হরমোন। শ্রীজিতের দেহে এই হরমোনের অভাব থাকায়, কোথায় খাওয়া থামাতে হবে তা বুঝতে পারে না সে। ফলে, সব সময় শুধু খেয়েই চলে। আর অতিরিক্ত খাওয়ার ফলেই লাফিয়ে লাফিয়ে ওজন বেড়ে চলেছে তার। তবে এ দেশে এখনও এর চিকিৎসা সম্ভব হয়নি। ইংল্যান্ড থেকে ওষুধ আনিয়ে চিকিৎসা চলছে শ্রীজিতের। এর আগে কর্ণাটকের রিশা আমারা নামে এক শিশু এই রোগে আক্রান্ত হয়েছিল। মাত্র ৯ মাসে তার ওজন হয়ে গিয়েছিল ১৮ কেজি। কয়েক বছর ধরেই লন্ডনে তার চিকিৎসা চলছে। এই তালিকায় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গও। মুর্শিদাবাদের ‘অতিকায় শিশু’ লোকমান হাকিম মণ্ডল। ১১ মাসের সেই শিশু দিনে আড়াই কিলো ভাত এবং পাঁচ লিটার দুধ খেত। তার ওজন ছিল ২০ কেজি। এই অনন্ত খিদেই তার মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। লোকমানের মৃত্যু অবশ্য হয়েছিল শ্বাসনালীতে খাবার আটকে। তবে শ্রীজিতের মতো তারও হরমোনজনিত সমস্যা ছিল বলেই মনে করেন চিকিৎসকমহল। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×