ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শোলাকিয়ায় দেশে সর্ববৃহৎ ঈদের জামাত ॥বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা

প্রকাশিত: ২৩:১০, ৭ জুলাই ২০১৬

 শোলাকিয়ায় দেশে সর্ববৃহৎ ঈদের জামাত ॥বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা

অনলাইন ডেস্ক॥ কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ময়দানে প্রতিবছরের মতো এবারও দেশের সবচেয়ে বড় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঈদুল ফিতরের এ জামাতে অংশ গ্রহণ করতে দূর দূরান্ত থেকে মুসল্লিরা ভোর থেকেই দলে দলে ঈদগাহ মাঠে আসতে থাকেন। আজ সকাল ১০টায় এ ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের ১৮৯তম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জামাত শুরুর আগে রেওয়াজ অনুযায়ী শর্টগানের ফাঁকা গুলি ছুড়ে নামাজ আরম্ভের ঘোষণা দেয়া হয়। আজকের জামাতে ইমামতি করেন স্থানীয় জামিয়া মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা শোয়াইব। ঐতিহ্যবাহী এ ঈদ জামাতের আগে শোলাকিয়া ঈদগাহ থেকে প্রায় ১০০ গজ দূরে আজিমুদ্দিন স্কুল প্রাঙ্গণে বিষ্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। তবে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। সকাল ১০টায় শুরু হওয়া ঈদ জামাত শান্তির্পূণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলেও জানা গেছে। ঈদগাহের নিরাপত্তায় বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত ছিলেন। স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মাঠে নামাজ আদায় করেন। ঈদ উপলক্ষে ঈদগাহ সংলগ্ন সড়কে বেশ কয়েকটি তোরণ নির্মাণ করা হয়। মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার্থে দু’টি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়। মুসল্লিরা ট্রেন ছাড়াও মাইক্রোবাস, সিএনজি অটোরিকশা, পিকআপ ভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহনে চড়ে ঈদগাহ ময়দানে আসেন। এ মাঠে নামাজ আদায় করলে দোয়া কবুল হয় ও প্রচুর সওয়াব পাওয়া যায়, এমন বিশ্বাস থেকেই প্রতিবছর মুসল্লির সংখ্যা বেড়ে চলেছে। সকাল ৯টার আগেই ঈদগাহ ময়দান কানায় কানায় ভরে যায়। এরপরও মুসল্লিরা আসতে থাকেন। অনেকেই জায়গা না পেয়ে পাশের রাস্তা ও খালি জায়গায় নামাজ পড়েন। এ বছর শোলাকিয়ায় আড়াই লক্ষাধিক মুসল্লি নামাজ আদায় করেছেন বলে ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। শোলাকিয়ায় ঈদের জামাত শেষে দেশ ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। জনশ্রুতি আছে, ১৮২৮ সালে এ মাঠে প্রথম ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। সে অনুযায়ী এ মাঠের রয়েছে প্রায় আড়াইশত বছরের ঐতিহ্য। শোলাকিয়া ঈদগাহের প্রথম বড় জামাতে সোয়া লাখ মুসল্লি অংশ নিয়েছিলেন। এত মুসল্লির অংশগ্রহণের কারণে এ স্থানের নাম হয়েছিল সোয়ালাখি। সেই থেকে উচ্চারণের বিবর্তনে সোয়ালাখিয়া এবং বর্তমানে শোলাকিয়া নামে স্থানটি পরিচিত। পরবর্তী সময়ে এ মাঠের প্রসার ও পরিচিতি ঘটান মসনদ-ঈ-আলা ঈশাখাঁর ষষ্ঠ বংশধর দেওয়ান মান্নান দাদ খান। তিনি ১৯৫০ সালে প্রায় পাঁচ একর জমি শোলাকিয়া ঈদগাহকে ওয়াকফ করে দেন। বর্তমানে মাঠের জমির পরিমাণ প্রায় সাত একর। তিন লক্ষাধিক মুসল্লি একসঙ্গে এ মাঠে নামাজ আদায় করতে পারেন বলে ধারণা করা হয়।
×