ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিলুপ্ত ছিটমহলে ঈদের আনন্দ

প্রকাশিত: ২২:৪১, ৮ জুলাই ২০১৬

বিলুপ্ত ছিটমহলে ঈদের আনন্দ

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ গত বছর (২০১৫) ৩১ জুলাই মধ্য রাতে বিলুপ্ত হয়েছিল ছিটমহল। ৬৮ বছর পর আনন্দ মুখোর পরিবেশে বাংলাদেশের অভ্যান্তরে থাকা ১১১টি ভারতীয় ছিটমহলের বাসিন্দারা নাগরিত্ব ফিরে পায় বাংলাদেশের। সে বছর তারা সর্ব প্রথম কোরবানীর ঈদ পালন করেছিল বাংলাদেশ নাগরিক হিসাবে। এবারো তারা এক মাস সিয়াম সাধনার পর ঈদুল ফিতর পালন করলো বাংলাদেশের নাগরিক হিসাবেই। ছিলনা কোন ভেদাভেদ। তাই ঈদের আনন্দ বৈইছে এসব বিলুপ্ত ছিটমহলে। নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ৪টি বিলুপ্ত ছিটমহলবাসী আজ শুক্রবার জানায় তাদের ছিটমহল পরিচয় মূছে গেছে। তারা বাংলাদেশের নাগরিক হিসাবে মাথা উঁচু করে স্বাধীন চেতনায় ফিরে এসেছি। এ বছর অন্য রকম অনুভূতি নিয়ে ঈদের উৎসব পালন করেছি। কোন ঝুট ঝামেলা ছাড়াই আতœীয় স্বজনরা ঈদে বেড়াতে আসছে।বিলুপ্ত নগর জিগাবাড়ি ছিটমহলের জয়নাল আবেদীন জানালেন তারা আনন্দ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদুল ফিতর উদযাপন করেছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এই চার ছিটমহলের ৫১৯ পরিবার পেয়েছে ২০ কেজি করে বিনামূল্যে চাল। ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করার পর বিলুপ্ত ছিটমহলবাসী আনন্দকে সকলের মাঝে ভাগাভাগি করে নিতে আয়োজন করে নানা কর্মসূচি। সারাদিনেই বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে তারা। তিনি জানান দীর্ঘ বন্দি জীবন থেকে মুক্ত হয়েছি। পেয়েছি নতুন বাংলা।আমরা নতুন বাংলাদেশি হওয়ার আনন্দ ও ঈদের আনন্দ এক করে আমরা বাকি সময়গুলোতেও এই আনন্দ ফুর্তিতে কাটাতে চাই। তিনি বলেন, আমরা মুক্ত হওয়ার পর এই প্রথমবারের মতো আনন্দঘন পরিবেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করলাম। এদিকে নীলফামারীর ডোমার উপজেলা সংলগ্ন কোট ভাজনী বিলুপ্ত ছিট মহলে নতুন ঈদগাঁহ ময়দানের শুভ উদ্বোধন করা হয় ঈদের দিন সকালে। কোট ভাজনীর এই ঈদগা্ ঁময়দানের শুভ উদ্বোধন ঘোষনা করেন ইঞ্জিনিয়ার এসএম রূম্মান। এর আগে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। ঈদগা মাঠের জমিদাতা সিরাজুল ইসলাম মাষ্টারের সভাপতিত্বে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন,সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আজিজুল ইসলাম সরকার। মসজিদ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আলী, সাধারণ সম্পাদক মিলন হক, সহিদুল ইসলাম সরকার, এসএম রওফুল, এসএম রিয়াদ। সেখানে বিলুপ্ত ছিটমহলের নতুন ঈদগাঁ ময়দানে নামাজ আদায় করতে আসা হাজারো ধর্মপ্রিয় মানুষের ঢল নেমেছিল। ঈদের নামাজের ঈমামতি করেন হাফেজ মাওঃ জসিম উদ্দিন। এলাকাবাসী জানান, মরহুম আমেতুল্ল্যা সরকারের ছেলে সিরাজুল ইসলাম মাষ্টার তার নিজস্ব বেশকিছু জমি দান করে বিলুপ্ত ছিটমহল বাসীর সুবিধার্থে বায়তুল রিয়াদ জামে মসজিদ, রওফুন ফোরকানিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। এবার নতুন করে ঈদগাঁহ ময়দান প্রতিষ্ঠা করলেন।
×