ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

মেসিকে ছাড়িয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় রোনালদো

প্রকাশিত: ১৯:৫২, ৯ জুলাই ২০১৬

মেসিকে ছাড়িয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় রোনালদো

অনলাইন ডেস্ক॥ আর এক দিন। একটি ম্যাচ। ইতিহাস গড়তে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর অপেক্ষা এখন শুধু আর একটি জয়ের। ইউরোর শিরোপা লড়াইয়ে কাল স্বাগতিক ফ্রান্সের মুখোমুখি হবে পর্তুগাল। বাংলাদেশ সময় কাল রাত একটায় স্তাদ দো ফ্রান্সে জিতলেই পর্তুগিজ ফুটবলের আজন্মলালিত আক্ষেপ ঘুচিয়ে দিতে পারবেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। এত অসাধারণ সব খেলোয়াড় ফুটবলের অনেক যুগ রাঙিয়ে যাওয়ার পরও এখনো আন্তর্জাতিক শিরোপার উদ্‌যাপনে ভাসা হয়নি পর্তুগালের। সেই আক্ষেপ কাল ঘোচাতে পারবেন পর্তুগাল অধিনায়ক? পারবেন প্রায় এক কোটি জনসংখ্যার দেশটির প্রতিটি মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে? পারলে জাতীয় গৌরবের পাশাপাশি একটা ব্যক্তিগত অর্জনও হয়ে যাবে রোনালদোর। ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে বিখ্যাত দ্বৈরথে প্রতিদ্বন্দ্বীকে ছাপিয়ে যাবেন রিয়াল মাদ্রিদ ফরোয়ার্ড। গোলডটকমের লেখক পিটার স্টনটন লিখেছেন, কাল ইউরোর ট্রফিটা নিয়ে উচ্ছ্বাসে মেতে উঠতে পারলেই ক্যারিয়ারের অর্জনের হিসেবে নিজের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী লিওনেল মেসিকে ছাড়িয়ে যাবেন রোনালদো—জাতীয় দলের হয়ে শিরোপা জয়! ক্লাব ক্যারিয়ারে কারওই সাফল্য কম নয়। মেসির শিরোপা বেশি। কিন্তু রোনালদোর পক্ষেও যুক্তি আছে, ভিন্ন ভিন্ন দলে, ভিন্ন প্রতিযোগিতায় মানিয়ে নিয়েই জিতেছেন পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড। গত এক যুগে মেসি-রোনালদো বিতর্ক এত বেশি হয়েছে, এটি নিয়ে নতুন কিছু বলতে যাওয়াও এখন বাতুলতা। দুজনই বর্তমান সময়ের তো বটেই, ফুটবল ইতিহাসেরও সেরাদের মধ্যে অন্যতম। কিন্তু দুজনের মধ্যে কে সেরা? সেই উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করাও বোকামি। মেসি যদি ড্রিবলিংয়ের রাজা হন, তাহলে গোলমুখে রোনালদোর কার্যকারিতা অতুলনীয়। দলের আক্রমণে বেশি অবদান রাখায় মেসি এগিয়ে থাকলে, আক্রমণে পূর্ণতা এনে দেওয়ায় রোনালদোর ভূমিকা প্রশ্নাতীত। তবে এবারের ইউরোতে রোনালদো দেখিয়ে দিয়েছেন, আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের চেয়ে একটা জায়গায় তিনি অনেক এগিয়ে—সাহস। চাপের মুখে মিইয়ে না পড়া। পোল্যান্ডের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে টাইব্রেকারের আগের ঘটনাটাই তার প্রমাণ। কী দুর্দান্তভাবেই না জোয়াও মুতিনহোকে শট নিতে প্রেরণা জুগিয়েছেন রোনালদো। গত ইউরোর সেমিফাইনালে স্পেনের বিপক্ষে টাইব্রেকারে গোল করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন মুতিনহো। পর্তুগিজ মিডফিল্ডারকে যেভাবে এবার রোনালদো রাজি করালেন, ইউরো জিততে পারলে সেটি পর্তুগিজ রূপকথার অংশ হয়ে যাবে। ‘যদি আমরা হারি...কিছু বলার নেই। এখন সবকিছুই ঈশ্বরের হাতে!’—ভীষণ চাপের সময়টাতে রোনালদোর কথাগুলোই হয়তো প্রেরণা জুগিয়েছে মুতিনহোকে, পর্তুগিজ খেলোয়াড়দের। সেটিই হয়তো কাজ করেছে পর্তুগালের জয়ের পেছনে। ব্যক্তিগতভাবে পারফরম্যান্সের বিচারে ঠিক রোনালদোসুলভ মহিমায় ইউরোটাকে রাঙিয়েছেন রোনালদো, সেটি বলা যাবে না। তবে ঠিকই দলের প্রয়োজনের সময়ে জ্বলে উঠেছেন। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে হাঙ্গেরির বিপক্ষে জোড়া গোল করে (অন্য গোলটি করিয়ে) ড্র এনে দেওয়া, শেষ ষোলোতে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে অতিরিক্ত সময়ের শেষ দিকে কারেসমাকে দিয়ে গোল করানো, বা সর্বশেষ সেমিফাইনালে ওয়েলসের বিপক্ষে গোল করা ও করানো—রোনালদোর ওই কয়েক মুহূর্তের জ্বলে ওঠাতেই তো ফাইনালে এসেছে পর্তুগাল। এখন তুলির শেষ আঁচড়টা দিতে পারলে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের সাফল্যে মেসিকে ছাপিয়ে যাবেন রোনালদো। সব সময়ই বলে এসেছেন, জাতীয় দলের হয়ে একটা ট্রফি খুব বেশি করে জিততে চান। কে না চায়! তবে ৩১ বছর বয়সে এসে হয়তো এর চেয়ে ভালো সুযোগ আর পাবেন না রোনালদো। পর্তুগালকে আনন্দে ভাসানোর সুযোগ, মেসির সঙ্গে ব্যক্তিগত দ্বৈরথে একটু এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ। সূত্র: গোলডটকম।
×