ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

লক্ষ্মীপুরে তরুনীকে পাশবিক নির্যাতন ও গৃহবধূসহ দু’ জনকে হত্যা

প্রকাশিত: ২৩:১২, ৯ জুলাই ২০১৬

লক্ষ্মীপুরে তরুনীকে পাশবিক নির্যাতন ও গৃহবধূসহ দু’ জনকে হত্যা

নিজস্ব সংবাদদাতা, লক্ষ্মীপুর ॥ লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় শুক্রবার দুপুরে পৃথক ঘটনায় দুই নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এরমধ্যে পৌরসভার নতুন বাজার এলাকায় লাকি আক্তার (২৫) নামের এক গৃহবধূকে হত্যার পর বালু চাপা দিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। অন্য ঘটনায় উপজেলার চরবংশী ওয়াপদার খাল থেকে অজ্ঞাত নারীর (১৪) হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে পরবর্তীতে তার পরিচয় পাওয়া গেছে। তার নাম নাসিমা আক্তার (১৪)। পিতার নাম নূর উল্যা। তার গ্রামের বাড়ী লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার পশ্চিম লক্ষ্মীপুর বেঁড়ির মাথায়। এ দু’টি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি। ময়না তদন্তের জন্য লাশ ২টি উদ্ধারের পর বিকেলে সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার গাইয়ারচর গ্রামের হাবিব উল্যার মেয়ে লাকি আক্তারকে দেনায়েতপুর এলাকার দিনমজুর মো. সেলিম ৬ মাস আগে বিয়ে করে। লাকি নতুন বাজার এলাকায় তার বোন সাজু বেগমের সাথে ভাড়া বাসায় থাকতো। বৃহস্পতিবার রাতে লাকির সাথে স্বামীর কথাকাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে স্বামী সেলিম বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। এরপর লাকি তার পেছনে যায়। সকালে স্থানীয় লোকজন তার বাসার পাশে বালুর স্তুপের মধ্যে পুঁতে রাখা অবস্থায় লাকির মৃতদেহ দেখে পুলিশকে খবর দেয়। নিহতের বোন সাজু বেগমের অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর লাকির মৃতদেহটি বালু চাপা দিয়ে রাখা হয়েছে। এ ঘটনার জন্য স্বামীকে গ্রেফতার করে বিচারের দাবি করেন। নিহত লাকীর ছোট বোন পাখি জানান, নিহতের স্বামী সেলিম তাকে হত্যা করেছে। তিনি তার তদন্ত সাপেক্ষে এর সুষ্ঠু বিচার প্রার্থনা করছেন। অন্যদিকে উপজেলার দক্ষিন চরবংশি ইউনিয়নের চরলক্ষ্মী গ্রামের সমিতির হাট এলাকার ওয়াপদার খাল থেকে নাসিমা আক্তার (১৪) নামে তরুণীর হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ । সকালে ঘটনাস্থলে ওই নারীর হাত-পা বাঁধা লাশটি পড়ে থাকতে দেখে তারা পুলিশে খবর দেয়। ধারনা করা হচ্ছে, ঈদের দিন রাতের কোন এ সময় ওই নারীকে নির্যাতনের পর হত্যা করে লাশ ঘটনাস্থলে ফেলে যায়। এর আগে সে একটি শিশুকে নিয়ে লক্ষ¥ীপুর নিজ বাড়ী থেকে রাখালিয়া যায় সন্ধ্যায়। এর পর সে আর ফিরে যায়নি। মা কোহিনূর বেগম অভিযোগ করেন, দূর্বৃত্তরা তাকে তুলে নিয়ে পাশবিক নির্যাতন করে হত্যার পর লাশ খালে ফেলে দেয়। নিহত দু’জনের স্বজন সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ঘাতকদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছেন। রায়পুর থানার এস আই মোশারফ হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ময়না তদন্ত শেষে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তবে ধারণা করা হচ্ছে দু’টি ঘটনাই হত্যাকান্ডের ঘটনা। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে। রায়পুর থানার ওসি লোকমান হোসেন জানান, তদন্ত সাপেক্ষে ও ময়না তদন্ত শেষে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তবে ইতিমধ্যে অপরাধীদের পাকড়াও করার অভিযান শুরু হয়েছে। তিনি জানান, লাকী আক্তারের ঘটনায় ঘাতক স্বামী সেলিমকে একমাত্র আসামী করে রায়পুর থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। তবে শনিবার পর্যন্ত এখনো আসামী গ্রেপ্তার হয়নি। তবে নাসিমা আক্তারের ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। ময়না তদন্ত রিপোর্ট সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
×