ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রকাশিত হলো চিলকোট রিপোর্ট

ইরাক যুদ্ধে ব্রিটেনের অংশগ্রহণ যৌক্তিক সিদ্ধান্ত ছিল না

প্রকাশিত: ০৪:১৬, ১০ জুলাই ২০১৬

ইরাক যুদ্ধে ব্রিটেনের অংশগ্রহণ যৌক্তিক সিদ্ধান্ত ছিল না

ইরাক যুদ্ধ নিয়ে বুধবার লন্ডনে বহুপ্রতীক্ষিত চিলকোট তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে ২০০৩ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ইরাক যুদ্ধে যুক্তরাজ্যের অংশগ্রহণ কোন যৌক্তিক বিবেচনার ভিত্তিতে ছিল না। ইরাক যুদ্ধ তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের জনপ্রিয়তা প্রায় শূন্যের কোটায় নিয়ে আসে। ইরাক যুদ্ধের দায় থেকে তিনি হয়ত কখনই বের হয়ে আসতে পারবেন না। তিনি এর জন্য মামলার সম্মুখীন হতে পারেন। -বার্তা সংস্থা ও ওয়েবসাইটের। প্রতিবেদনে ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ইরাক যুদ্ধ যাওয়ার জন্য ব্লেয়ারকে দায়ী করা হয়েছে। এজন্য তিনি বিচারের মুখোমুখি হতে পারেন। ব্লেয়ারের বিচারের দাবিতে পার্লামেন্টে প্রস্তাব আসতে পারে বলেও ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ভুল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পরিস্থিতি পুরোপুরি যাচাই না করেই ইরাকে হামলা চালিয়ে ব্লেয়ার ব্রিটিশ সেনাবাহিনী ও রাষ্ট্রীয় কোষাগারের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেছেন। সেই সঙ্গে ইরাকসহ ওই অঞ্চলের দেশগুলোতে দীর্ঘমেয়াদী সঙ্কট তৈরি করেছেন। যুক্তরাজ্য ভবিষ্যতে কোন দেশে হামলা কিংবা বড় ধরনের যুদ্ধে লিপ্ত হতে গেলে প্রতিবেদনের বিষয়বস্তু থেকে শিক্ষা নিতে হবে। ইরাক হামলা নিয়ে তদন্ত করতে যুক্তরাজ্যে জন চিলকোটকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। ২০০৯ সালে গঠিত ওই কমিটি দীর্ঘ সাত বছর পর তাদের ঐতিহাসিক প্রতিবেদন প্রকাশ করল। জন চিলকোটের নাম অনুসারেই এ প্রতিবেদনের নাম ‘চিলকোট রিপোর্ট’ রাখা হয়েছে। চিলকোট বলেন, বিচার কিংবা রায় দেয়া তার উদ্দেশ্য ছিল না। ইরাক যুদ্ধে অংশগ্রহণ যৌক্তিক ছিল কি-না এ বিষয়ে সত্য বের করাই ছিল উদ্দেশ্য। ইরাক যুদ্ধ শুরুর আগে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের প্রশাসন ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্রের মজুদ গড়ার অভিযোগ আনেন। সাদ্দাম হোসেনকে বিশ্বশান্তির জন্য হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করে বুশ প্রশাসন। এসব অভিযোগ তুলে প্রশাসন ইরাকে হামলা শুরু করে। যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে তার সঙ্গে যোগ দেয় যুক্তরাজ্যও। বিশ্বের বহু দেশের শান্তিকামী মানুষ এ যুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল। এ যুদ্ধে ১৭৯ জন ব্রিটিশ সৈন্য নিহত হয়। ব্লেয়ার সরকারকে এক হাজার কোটি পাউন্ডের মাসুল গুনতে হয়। যুদ্ধে প্রায় দেড় লাখ ইরাকী নিহত এবং ১০ লাখেরও বেশি ইরাকী গৃহহীন হয়। চিলকোর্ট রিপোর্টে বলা হয়েছে- সাদ্দাম হোসেনকে নিরস্ত্র করতে শান্তিপূর্ণ উপায়গুলো পাশ কাটিয়ে ইরাকে হামলা চালানো হয়েছে। ওই সময়ে ইরাকে হামলা করা ‘শেষ অবলম্বন বা অনিবার্য’ ছিল না। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বেশির ভাগ সদস্যই চেয়েছিল হামলা না চালিয়ে সাদ্দাম হোসেনের প্রতি চাপ অব্যাহত রাখতে।
×