ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পরিচ্ছন্ন অভিযান রোড শোতে অংশ নিল দুই হাজার স্বেচ্ছাসেবী

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ২১ জানুয়ারি ২০১৭

পরিচ্ছন্ন অভিযান রোড  শোতে অংশ নিল দুই হাজার স্বেচ্ছাসেবী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ লাল-সবুজের টি-শার্ট ও মুখে মুখোশ পরা তরুণ-তরুণী। শাহবাগ থেকে বিজয় সরণি পর্যন্ত দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে তারা। হাত চলছে ক্ষণে ক্ষণে। পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ গড়তে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্য নিয়ে রোড শোতে অংশ নিয়ে তারা মুহূর্তেই পরিচ্ছন্ন করে তোলে নগরীর এই গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। প্রতীকী এই রোড শোতে অংশ নেয় ঢাকা ক্লিনের অন্তত ২ হাজার স্বেচ্ছাসেবী। এদের অধিকাংশই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। শুধু তাই নয়, শিশু সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে ফার্মগেটের আনন্দ সিনেমা হলের সামনে এই কর্মসূচীতে অংশ নিতে দেখা গেছে এক মাকেও। আয়োজকদের প্রত্যাশা, মায়ের অনুপ্রেরণায় আগামীর শিশুরা এভাবেই গড়ে তুলবে পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ। একদিন পরিচ্ছন্ন দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সুনাম কুড়াবে বিশ্বে। তাদের মতে, কেবল দেশের মানুষ সচেতন হলেই তা সম্ভব। শুক্রবার বিকালে রাজধানীর কাওরান বাজার সার্ক ফোয়ারার সামনে ‘ঢাকা ক্লিন রোড শো : পরিচ্ছন্নতা শুরু হোক আমার থেকে’ উপলক্ষে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ঢাকা ক্লিন এই রোড শোর আয়োজক। পরিচ্ছন্নতা অভিযানের শুরুতেই জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হয়। পরে একযোগে শাহবাগ থেকে বিজয় সরণি পর্যন্ত দীর্ঘ রাস্তায় তারা প্রতীকী পরিচ্ছন্নতায় অংশ নেয়। রোড শোতে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরিচালক চিত্রশিল্পী মরিুজ্জামান তার বক্তব্যে বলেন, আমরা জানি, এটা আমাদের ক্ষুদ্র প্রয়াস। আসুন নিজ হাতে সবাই নিজের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন করি। নিজে করি। অন্যকে করতে উৎসাহিত করি। সমস্ত ঢাকাবাসী ঢাকা ক্লিনের পাশে এসে দাঁড়াই। সবাই এক হয়ে দেশের জন্য কিছু করি, দেশকে ভালবাসি। পরিচ্ছন্নতা অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করে ঢাকা ক্লিনের প্রধান সমন্বয়ক ফরিদউদ্দিন মিলন বলেন, ঢাকা ক্লিন এক দল তারুণ্যের নাম। এক দল স্বপ্নবাজের নাম। যে তারুণ্য কাজ করে যাচ্ছে পরিচ্ছন্ন দেশ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে। আমাদের প্রত্যয় ভবিষ্যত নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচ্ছন্ন দেশ উপহার দিতে চাই। সারাবিশ্বে পরিচ্ছন্ন দেশ হিসেবে সুনাম কুড়াতে চাই। যারা রাস্তায় দাঁড়িয়েছে তারা যদি পারে আপনিও পারবেন। পরিচ্ছন্নতা শুরু হোক নিজের থেকেই। ঢাকা ক্লিনের প্রধান সমন্বয়ক ফরিদউদ্দিন মিলন জনকণ্ঠকে বলেন, ‘পরিচ্ছন্নতা শুরু হোক আমার থেকে’ এই প্রতিপাদ্যে শুরু হওয়া আজকের রোড শোতে ২ হাজারের অধিক স্বেচ্ছাসেবী অংশগ্রহণ করেছে। নগরীর শাহবাগ থেকে বিজয় সরণি পর্যন্ত দীর্ঘ এই রাস্তায় তারা প্রতীকী পরিচ্ছন্নতায় অংশগ্রহণ করে। আমরা রাস্তায় দাঁড়িয়েছি সচেতনতা সৃষ্টি করার জন্য। আমাদের অনুরোধ কেউ যেন যত্রতত্র ময়লা না ফেলেন। পরিচ্ছন্নতা ও জীবাণুমুক্ত বাংলাদেশ গড়াই আমাদের লক্ষ্য। ফার্মগেটে কথা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাহিম হাসানের সঙ্গে। প্রথমবারের মতো ঢাকা ক্লিনের হয়ে পরিচ্ছন্ন অভিযানে অংশ নেন তিনি। এই তরুণ জনকণ্ঠকে বলেন, দেশের জন্য কিছু করার, সবার মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য নিজ থেকে পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু করেছি। রাস্তায় নেমে এসেছি। আমাদের লক্ষ্য একটাই সবাই পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে সচেতন হোক। কাওরান বাজারে কথা হয় তমালিকা রায়ের সঙ্গে। তিনিও একই ধরনের কথা বলেন। তাদের সবার হাতে ছিল ঝাড়ু। মুখে মুখোশ। পরনে লাল-সবুজের টি-শার্ট। দেশের হয়ে দেশকেই পরিচ্ছন্ন করে চলছিলেন তারা। প্রসঙ্গত ঢাকা ক্লিন সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাসেবী ও অরাজনৈতিক সংগঠন। ২০১৬ সালের ৩ জুন গুটিকয়েক অভিযাত্রীকে নিয়ে এর যাত্রা। সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততায় একটি পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে বর্তমানে দেশের চারটি বিভাগে এর কার্যক্রম চলছে। যাদের হৃদয়ে পরিচ্ছন্ন দেশ গড়ার প্রত্যয় রয়েছে, তারাই সংগঠনের মূল চালিকাশক্তি।
×