ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চালের দাম বাড়ছে, কমেছে পেঁয়াজের

প্রকাশিত: ০৩:১৬, ৯ মার্চ ২০১৮

চালের দাম বাড়ছে, কমেছে পেঁয়াজের

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ একটু একটু করে বাড়ছে চালের দাম। গত এক সপ্তায় চিকন ও মোটা চালে কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে ১-২ টাকা পর্যন্ত। বর্তমান স্বর্না ও চায়না ইরির মতো মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৪-৪৭ টাকায়। অন্যদিকে সাধারণ মানের নাজির ও মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬২ টাকায়। গত এক সপ্তাহের বাজার পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এক্ষেত্রে প্রতিকেজিতে মোটা ও চিকন চালে ১-২ টাকা দাম বেড়েছে। ক্রেতা-বিক্রেতারা বলছেন চালের দাম কিছুটা বাড়ায় বাজারে অস্বস্তি রয়েছে। অপরদিকে, গত সপ্তাহের তুলনায় পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি প্রায় ৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪৫ টাকায়। শাক-সবজির মতো নিত্যপণ্যের দামও বাড়েনি। তবে চিনি কেজিতে ২ টাকা বেড়ে ৫৫-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ভোজ্যতেল, ডাল, আটা, ডিম এবং মাছ-মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। শুক্রবার রাজধানীর কাওরান বাজার, কাপ্তান বাজার, ফার্মগেট কাঁচা বাজার এবং মিরপুর-১ সিটি কর্পোরেশন মার্কেট ঘুরে নিত্যপণ্যের দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। সূত্রমতে, গত দু’সপ্তাহ ধরে চালের দাম বাড়তির দিকে রয়েছে। কখনো দাম স্থিতিশীল আবার কখনো ১-২ টাকা করে বাড়ছে। বাজারের এই আচরণ নিয়ে সন্তুষ্ট নন ভোক্তারা। সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার বাজার করতে এসে অনেকেই চালের দাম না কমায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। ক্রেতারা বলছেন, গ্রামে ১০ কেজিতে চাল বিক্রির পাশাপাশি শহরে খোলা বাজারে (ওএমএস) বিক্রি কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। সাধারণত সরকারী উদ্যোগে চাল বিক্রি শুরু হলে অতীতে এই নিত্যপণ্যটির দাম কমার প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। কিন্তু এবার ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে। চালের দাম তো কমছেই না উল্টো একটু একটু করে দাম বাড়ছে। পুরান ঢাকার কাপ্তান বাজারের চাল বিক্রেতা নূরল ইসলাম জনকণ্ঠকে বলেন, আমন মওসুম শেষ হওয়ার পর এখন ধাপে ধাপে চালের দাম বাড়ছে। গত এক সপ্তাহে কাপ্তান বাজারে প্রতিকেজি মিনিকেটের দাম বেড়েছে ১-২ টাকা করে। এর সঙ্গে অন্য চালের দামও বেড়েছে। এই বাজারে মিনিকেট প্রতিকেজি ৬২ থেকে ৬৪ টাকা, বিআর আটাশ ৫০ টাকা, মোটা চাল (স্বর্ণা) ৪৪ থেকে ৪৭ টাকা, জিরা শাইল ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকারী বিক্রি কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে শীঘ্রই চালের দাম কিছুটা কমতে পারে। সরকারী সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যমতে, সরু চাল ৬০-৭০, মাঝারি মানের চাল ৪৮-৫৬ এবং মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৩-৪৬ টাকায়। এছাড়া উত্তম মানের নাজির ও মিনিকেট ৬৫-৭০, সাধারণ মানের পাইজাম ও লতা ৪৮-৫২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা পর্যায়ে। এদিকে এক সপ্তাহের ব্যবধানে আমদানি ও দেশী পেঁয়াদের দাম কেজিতে অন্তত ৫ টাকা কমেছে বলে বিক্রেতারা জানিয়েছেন। কাওরান বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা মনির জনকণ্ঠকে বলেন, গত শুক্রবার দেশী ও ভারতীয় পেঁয়াজের পাল্লা (৫ কেজি) ২০০ টাকা থেকে ২১০ টাকার মধ্যে ছিল। তবে এই সপ্তাহে দেশী পেঁয়াজের পাল্লা ১৮০ টাকায় নেমেছে। ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। তবে টিসিবির তথ্যে শুক্রবার প্রতিকেজি ৩৫ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি হওয়ার কথা বলা হয়েছে। সেই হিসাবে গত এক মসে পণ্যটির দাম কমেছে ১৯ শতাংশ। সরবরাহ ঘাটতির কারণে গত নবেম্বর মাসে পেঁয়াজের দাম প্রতিকেজি ১২০ টাকা হয়েছিল। ভারতীয় পেঁয়াজের দামও বেড়ে একশ টাকার কাছাকাছি চলে যায় তখন। পেঁয়াজের দাম কমলেও আমদানি রসুনের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে এখন ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে কারওয়ান বাজারে। এছাড়া কারওয়ান বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম আগের মতোই প্রতিকেজি ১২৫ থেকে ১৩০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। ফার্মগেট বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম প্রতিকেজি ১৩৫ টাকা। এছাড়া বাজারে নতুন আসা পটল, করলা, উচ্ছে, ঢেঁড়শের দাম গত সপ্তাহের মতোই চড়া দামে বিক্রি করা হচ্ছে। কারওয়ান বাজারে এসব সবজির দাম প্রতিকেজি ৬০ টাকা থেকে ৭০ টাকার মধ্যে। কাপ্তান বাজারে ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে করলা ও পটল। প্রতি ডজন ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ফার্মের মুরগির ডিম। মাছ ও মাংসের বাজার অপরিবর্তিত রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। বাজারে ৭০০ গ্রাম ওজনের মাঝারি মানের একটি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৫শ থেকে ৬শ টাকায়। রুই কাতলের দাম আকার ভেদে পার্থক্য রয়েছে। চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৬০০ টাকায়। এছাড়া বাজারে দেশীয় মিঠা পানির পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। খাসি ও গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে আগের দামে।
×