ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ঘরে বাইরে সব স্থানেই এখন পুরুষের সাথে তাল মিলিয়ে কাজ করছেন নারীরা। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে কিংবা ধুলা-বালিতে ত্বক নষ্ট হচ্ছে।। কিন্তু অধিকাংশ কর্মব্যস্ত নারীরাই নিজের ত্বকের প্রতি খেয়াল রাখার সময়টুকু পান না। ফলে তাড়াতাড়ি বুড়িয়ে যান কিংবা ব্রন সমস্যায় ভো

কর্মজীবীরা নিন বাড়তি যত্ন শাহীনা আফরোজ

প্রকাশিত: ০৫:২২, ১২ মার্চ ২০১৮

 কর্মজীবীরা নিন  বাড়তি  যত্ন শাহীনা আফরোজ

পানি পান করুন অধিকাংশ অফিসেই দেখা যায় নারীরা খুব কম পানি পান করেন। অফিসের সময়টাতে প্রচুর পানি পান করা উচিত। আমাদের শরীরের ৭০% পানি। তাই পানির অভাব হলে সেটা ত্বকের উপরে প্রভাব ফেলে। পানি শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের করতে সহায়তা করে। কম পানি পানের কারণে ব্রণের সমস্যা কিংবা ত্বক শুষ্কতার সমস্যা দেখা দেয়। . অতিরিক্ত মেকআপ নয় কর্মক্ষেত্রে অনেকেই ভারী মেকআপ করেন কর্মক্ষেত্রের মেকআপ হওয়া উচিত হালকা। মুখে কোনও ফাউন্ডেশন ব্যবহার না করে ত্বককে পরিচ্ছন্ন রাখুন। নিজেকে পরিপাটি করে রাখলে কম মেকআপেও আকর্ষণীয় দেখাবে আপনাকে। ভারী মেকআপ করলে রোমকূপগুলো বন্ধ হয়ে থাকে। এতে ব্রণের সমস্যা বেড়ে যায়।। . পরিচ্ছন্নতা নানান ঝক্কি ঝামেলা পার করে রিকশা কিংবা বাসে চড়ে অফিসে যাওয়ার পর অনেকেই হাত ধুতে ভুলে যান। হাত না ধুয়েই কাজে ব্যস্ত হয়ে গেলে বেখেয়ালে হাতের জীবাণুগুলো ত্বকে লেগে যাবে। এতে ত্বকে নানান সমস্যা হতে পারে। তাই অফিসে পৌছানোর সাথে সাথেই এবং অফিস থেকে ফিরে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন এবং পৌঁছানোর দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। ফেস প্যাক সপ্তাহে অন্তত তিনদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ফেস প্যাক লাগিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এক্ষেত্রে খুব সহজে ব্যবহার করা যায় মুলতানি মাটি, চন্দন কিংবা অ্যালোভেরা। প্রতিদিন ঘুমানোর আগে অ্যালোভেরা জেল মুখে লাগিয়ে ঘুমাতে পারেন। এতে ত্বক ময়েশ্চারাইজ হবে। . স্ক্র্যাবিং কর্মজীবী নারীদের যেহেতু বাইরে ছুটোছুটি করতে হয়। তাই ত্বক স্ক্র্যাবিং করা জরুরি। ত্বকের মৃত কোষ দূর করার জন্য এবং ত্বকের উপরের ধুলাবালির আস্তরণ দূর করতে সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার স্ক্র্যাবিং করা জরুরী। চট জলদি স্ক্র্যাবিং এর জন্য চমৎকার দুটি ঘরোয়া উপাদান হলো চালের গুড়া কিংবা বেকিং সোডা। স্ক্র্যাবার দিয়ে কিছুক্ষণ ত্বক ম্যাসাজ করে ঠা া পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এরপর ভালো কোনও ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। . কিছুক্ষণ হাঁটুন কর্মজীবী নারীদের দিনের অধিকাংশ সময় কাটে চেয়ারে বসে থেকে। ফলে স্বাভাবিক রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়। তাই প্রতিদিন অফিসে যাওয়ার সময় কিংবা ফেরার সময়ে জ্যামে বসে না থেকে কিছুক্ষণ হাটার অভ্যাস করুন। এতে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে, অতিরিক্ত মেদ কমবে এবং ত্বক ভালো থাকবে। তবে রোদ থাকলে হাটার সময় ছাতা এবং সানগ্লাস ব্যবহার করতে হবে। দিন শেষে নিজের জন্য অল্প একটু সময় বরাদ্দ রাখলেই ত্বককে সুন্দর এবং বলিরেখা মুক্ত রাখা সম্ভব। নাহলে কাজের চাপে খুব সহজেই বুড়িয়ে যাবেন আপনি। তাই এখন থেকে নিয়মিত ত্বকের যতœ নিন। তাহলে শত ব্যস্ততার মাঝেই নিজেকে সতেজ এবং উজ্জ্বল রাখতে পারবেন। সুস্থ জীবন-যাপনের জন্য প্রয়োজন সঠিক পুষ্টি উপাদান। নারীদের বিভিন্ন বয়সে পুষ্টি চাহিদা বিভিন্ন হয়। তাই প্রতিটি কর্মজীবী নারীকে প্রয়োজনীয় চাহিদা অনুযায়ী খাবার গ্রহণ করতে হবে। সঠিক পুষ্টি উপাদান যেমন কোষ্ঠকাঠিন্য, বদহজম, অ্যালার্জি, আর মাথাব্যথার মতো রোগকে দূরে ঠেলে দেয় তেমনি সুন্দর চুল, ত্বক ও স্বাস্থ্য উপহার দেয়। যা খাবেন: সারাদিন প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে । পানির মাধ্যমেই অক্সিজেন ও বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান সম্পূর্ণ শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং দূষিত বর্জ্য পদার্থ শরীর থেকে বের হয়ে যায়। সারাদিনে অতিরিক্ত ক্যাফেইন যুক্ত খাবার যেমন চা, কফি, চকোলেট খাওয়া ঠিক নয়। সকালের নাশতা কখনও বাদ দেয়া যাবেনা। সকালের নাশতা খুব বেশি ভারিও নয়, এতে হজমের জন্য শরীরে প্রচুর শক্তির অপচয় হয়। ফলে ঝিমুনি ও দুর্বল বোধ হয়। সকালের নাশতায় যেকোনো একটি ফল খাওয়া যেতে পারে। ফল হজমশক্তি বাড়িয়ে মস্তিষ্কে গ্লুকোজ সরবরাহ করে যা সারাদিন মানুষকে কর্মক্ষম রাখে। খাবারের তালিকায় শর্করা জাতীয় খাবার যেমন ভাত, রুটির পরিমাণ কম রেখে শাকসবজি ও সালাদের পরিমাণ বেশি রাখতে হবে। প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় আমিষ জাতীয় খাবার থাকতে হবে। আমিষের সবচেয়ে ভালো উৎস হচ্ছে ডাল, ডিম, মাছ, মাংস, বাদাম। যারা নিরামিষভোজী তারা আমিষের ঘাটতি পূরণের জন্য কয়েক প্রকারের ডাল একসঙ্গে মিশিয়ে রান্না করে খেতে পারেন। প্রতিদিন আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে। আঁশযুক্ত খাবার রক্তের চর্বি নিয়ন্ত্রণ করে, হৃদরোগ ও ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। আঁশযুক্ত খাবার হচ্ছে তাজা ফলমূল, শাকসবজি, লাল চাল ও লাল আটা। খুব বেশি প্রক্রিয়াজাত ও ভাজা পোড়া খাবার একেবারেই নয়। ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবারের খুব ভালো উৎস হল দুধ ও শাকসবজি। রাতের খাবার হবে খুব হালকা। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার কমপক্ষে দু’ঘণ্টা আগে রাতের খাবার শেষ করতে হবে। সারাদিনে অন্তত ৩০ মিনিট যে কোনো হালকা ব্যায়াম বা হাঁটাচলা করার অভ্যাস করতে হবে। এতেই নারী থাকবে ফিট, আর সুস্থ থেকে সবার দেখভালও করতে পারবেন খুশি মনে।
×