ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

তত্ত্ববধায়ক সরকারের স্বপ্ন কোন দিন পূরণ হবে না ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০০:২৭, ১৩ মার্চ ২০১৮

তত্ত্ববধায়ক সরকারের স্বপ্ন কোন দিন পূরণ হবে না ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী

নিজস্ব সংবাদদাতা, ভোলা ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, আগামী নির্বাচন হবে অংশ গ্রহণমূূলক। যারা তত্ত্ববধায়ক সরকারের কিংবা সহায়ক সরকারের স্বপ্ন দেখেন তাদের সেই স্বপ্ন কোন দিন পূরন হবে না। সংবিধান অনুসারে এই সরকারের অধিনেই নির্বাচন হবে। ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে যে রকম নির্বাচন হয় বাংলাদেশেও সেই রকম নির্বাচন হবে। মঙ্গলবার দুপুরে ভোলার শিবপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের সদস্য সংগ্রহ উপলক্ষে রতনপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এসব কথা বলেছেন। এদিকে আওয়ামী লীগের এই সমাবেশকে ঘিরে এলাকায় সাধারন মানুষের মধ্যে ব্যাপক সারা পড়েছে। দলীয় নেতকর্মীর সাথে সাধারন মানুষ সকাল থেকে মিছিল ঢোল বাদ্য বাজিয়ে সমাবেশে উৎসব মুখর পরিবেশে অংশ নেয়। এক পর্যায়ে স্কুলের মাঠ ছাড়িয়ে রাস্তায় রাস্তায় জন¯্রােত দেখা যায়। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ তার বক্তব্যের শুরুতে নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় নিহতের ঘটনায় শোক প্রকাশ করেন। বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আগামী নির্বাচন হবে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের অধিনে। প্রধানমন্ত্রী থাকবেন শেখ হাসিনা। অন্তর্বতিকালীন সরকার দৈনন্দিন কাজ করবে। নির্বাচন করবে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন হবে অবাদ এবং নিরপেক্ষ। কেউ যদি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ না করে আমাদের কিছু করার নাই। বিএনপি আবার ক্ষমতায় এলে একজনও ঘরবাড়িতে থাকতে পারবে না উল্লেখ কর বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর সাধারণ মানুষের উপর অনেক অত্যাচার নির্যাতন করেছে। তারা কতো নিষ্ঠুর গবাবি পশু জবাই করে খেয়েছে। পশ্চিম ইলিশায় ১২টি গরু পুড়িয়ে মেরেছে। লালমোহনে পানির মধ্যে ঝাপ দিয়ে গর্ভবতি মাও সম্ভ্রম রক্ষা করাতে পারেন নি। মালেকের দুটো চোখ উপড়ে ফেলেছে। তার অপরাধ সে আওয়ামী লীগের কর্মী। আমার গাড়ি ভাংচুর করেছে। আমাকে রক্তাক্ত করেছে। আমার বাড়িতে হামলা করেছে। আমি বোরহানউদ্দিন যাবার পথে মোবা মেরেছে। গুলি করেছে। আমাকে একটি খুনের মামলায় আমাকে গ্রেফতার করা হল। আমাকেসহ আমার আত্মীয় স্বজনদেরকে আসামী করা হল। অথচ যে মারা গেছে তাকে আমি চিনিও না। আমি একজন মন্ত্রী ছিলাম। অথচ কাশিমপুর করাগারে আমাকে ফাঁসির আসামির মত ফ্লোরে শোয়ালো। কাশিমপুর কারাগার থেকে কুষ্টিয়া কারাগারে পাঠানো হলো। যাওয়ার পথে ফেরিতে দেখি গাড়িতে পতাকা উড়িয়ে যাচ্চে। জিজ্ঞেস করলাম এটা কারগাড়ি। বলা হল এটা সমাজকল্যাণমন্ত্রী মুজাহিদীর গাড়ি। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা আমার হাতে হাতকরা আর রাজাকার আলী আহসান মুজাহিদী তার গাড়িতে পতাকা। মন্ত্রী আরও বলেন, স্বাধীনতার পর ৩৩ মাস আমি জেলে ছিলাম। তিন মাস সূর্যের আলো দেখিনি। এরশাদের আমলে আমাকে জেলে নেয়া হল। প্রথম খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে আমাকে কারাগারে নিয়েছে। আবার ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে আমাকে আবারও কারাগারে পাঠিয়েছে। আমার ও আমার নেতাকর্মীদের উপর অনেক অত্যাচার নির্যাতন করা হয়েছে। বিএনপির আমলে আমার একজন কর্মীকে মারতে পারলে বিএনপি কর্মীকে ২ টন গম দেয়া হত। আমার নেতাকর্মীরা কেউ এলাকায় থাকতে পারেনি। বাড়িঘরে থাকতে পারেনি। এই বিএনপি আবার ক্ষমতায় আসলে পারলে কাউকে বাড়িঘরে থাকতে দিবে না। মন্ত্রী ভোলার বিভিন্ন উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে বলেন, বিগত কোন সরকারের আমলেই ভোলার নদী ভাঙন ঠেকাতে পারেনি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ভোলা নদী ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। মেঘনার ভাঙনরোধে ২ হাজার কোটি টাকার কাজ হচ্ছে। আওয়ামী লীগের সভাপতি মো: সেলিমের সভাপতিত্বে অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ভোলা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মমিন টুলু,সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদও আওয়ামী লীগের সভাপতি মো: মোশারেফ হোসেন, সাধারন সম্পাদক নজরুল ইসলাম গোলদার, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সম্পাদক জহুরুল ইসলাম নকিব,এনামুল হক,সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো: ইউনুস, মইনুল হোসেন বিপ্লব, শিবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন, সদর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল ইসলাম প্রমুখ। এছাড়াও বিকালে ভোলা সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নতুন সদস্য সংগ্রহ সমাবেশে বাণিজ্যমন্ত্রী প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।
×