ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কুমিল্লার মানুষ পোড়ানো মামলায় জামিন ছাড়া মুক্তি মিলছে না খালেদার

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ১৪ মার্চ ২০১৮

কুমিল্লার মানুষ পোড়ানো মামলায় জামিন ছাড়া  মুক্তি মিলছে না খালেদার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় কারাগারে আটক বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে বয়স, শারীরিক অসুস্থতাসহ চার যুক্তিতে জামিন দিলেও শীঘ্রই তিনি মুক্তি পাচ্ছেন না। এখনও জিয়া এতিমখানা মামলাসহ আরও একটি মামলায় আইনী প্রক্রিয়ার কয়েকটি ধাপ পেরিয়ে আসতে হবে। কুমিল্লায় নাশকতায় একটি মামলায় তাকে জামিন পেতে হবে। তা না হলে তিনি মুক্তি পাবেন না। এদিকে মঙ্গলবার চেম্বার জজ বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী হাইকোর্টের জামিন বহাল রেখেছেন। আজ বুধবার আপীল বিভাগের পুর্নাঙ্গ বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। আপীল বিভাগের কার্যতালিকায় মামলাটি এক ও দুই নম্বরে রাখা হয়েছে। এদিকে এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে নাশকতার মামলায় বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া জামিন না নিলে খালাস (মুক্তি) পাওয়ার কোন অবকাশ নেই। কুমিল্লায় যে গাড়ি পোড়ানোর মামলা, মানুষ হত্যার মামলা এবং সেই সমস্ত মামলায় তাকে প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এসব মামলায় তিনি আসামি। এখন কাস্টডি ওয়ারেন্ট দেয়ার অর্থই হলো সেই মামলাতেও তিনি এখন অবরুদ্ধ আছেন ধরতে হবে। সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহম্মেদ বলেছেন, এ্যাটর্নি জেনারেল যা বলেছেন তা সঠিকভাবে ধরে নিতে হবে। ওনার সঙ্গে আমি একমত পোষণ করছি। অন্যদিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদিন বলেছেন, কুমিল্লার বিষয়ে অতিদ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। কুমিল্লার মামলায় জামিন নিতে হবে ॥ এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে নাশকতার মামলায় বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া জামিন না নিলে খালাস (মুক্তি) পাওয়ার কোন অবকাশ নেই। মঙ্গলবার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মত দেন। ২৮ মার্চ খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির হওয়ার কথা রয়েছে, কিন্তু তার আইনজীবীরা বলছেন এ মামলায় (অরফানেজ মামলা) জামিন হওয়ার কারণে খালেদা জিয়ার মুক্তি পেতে আর কোন বাধা নেই সেই ক্ষেত্রে আপনি কি বলবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে এ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘না না, কুমিল্লায় যে গাড়ি পোড়ানোর মামলা, মানুষ হত্যার মামলা এবং সেই সমস্ত মামলায় তাকে প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এসব মামলায় তিনি আসামি। এখন কাস্টডি ওয়ারেন্ট দেয়ার অর্থই হলো সেই মামলাতেও তিনি এখন অবরুদ্ধ আছেন ধরতে হবে। তিনি সেই মামলায় জেলে আছেন বলে ধরতে হবে। কাজেই ওই মামলাতে তাকে জামিন না নিয়ে খালাস হওয়ার কোন অবকাশ নেই বলে আমি মনে করি।’ ২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ভোরে চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় হরতাল-অবরোধের সময় কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী আইকন পরিবহনের একটি বাসে পেট্রোল বোমা মারলে ৮ জনের মৃত্যু হয়। এ অভিযোগে দায়ের করা মামলায় চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই নুরুজ্জামান হাওলাদার বিএনপি-জামায়াতের ৫৬ জনের নাম উল্লেখ করে, আরও ১৫ থেকে ২০ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি দেখিয়ে মামলা করেন। মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করা হয়। তদন্ত শেষে ওই বছরের ৬ মার্চ কুমিল্লার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে খালেদা জিয়াসহ মোট ৭৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। মামলা চলাকালে ৩ জনের মৃত্যু হয়। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করছি ॥ বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির এ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন জনকণ্ঠকে বলেছেন, অতি দ্রুত কুমিল্লার মামলায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অন্যদিকে তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়ার জামিন ঠেকাতে সরকার ও দুদক একাকার হয়ে গেছে। তারা ঐক্যবদ্ধভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে তারা জামিন আদেশের বিরুদ্ধে আপীল করেছেন। বেগম খালেদা জিয়াকে দীর্ঘসময় কারাগারে রাখার জন্যই জামিনের বিরুদ্ধে আপীল করা হয়েছে। আজ পুর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি ॥ জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার সাজায় কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিতের যে আবেদন করা হয়েছে, আজ বুধবার তার শুনানি হবে আপীল বিভাগে। রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের আলাদা দুটি আবেদন শুনে চেম্বার জজ বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী কোন আদেশ না দিয়ে বিষয়টি শুনানির জন্য আপীল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এবং দুদকের পক্ষে খুরশীদ আলম খান শুনানি করেন। অন্যদিকে খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন এজে মোহাম্মদ আলী।
×