ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সুমন্ত গুপ্ত

জয়বাংলা কনসার্ট

প্রকাশিত: ০৬:৪২, ১৫ মার্চ ২০১৮

জয়বাংলা কনসার্ট

সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিট। স্টেডিয়ামের বড় রঙিন পর্দায় চলছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের সেই ঐতিহাসিক ভাষণ। ১৮ মিনিটের সে ভাষণে সাড়া দিলেন স্টেডিয়ামে থাকা হাজার হাজার তরুণ-তরুণী। বঙ্গবন্ধুর ভাষণের সঙ্গে সমস্বরে তাঁরা বলে উঠলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ ‘জয়বাংলা’ স্লোগানটি উচ্চারিত হচ্ছিল মঞ্চে, স্টেডিয়ামে উপস্থিত হাজারো দর্শকের কণ্ঠে। মহান মুক্তিযুদ্ধ এই স্লোগান যেমন সারাদেশের মানুষকে এক সূত্রে গেঁথেছিল, তেমনি প্রতিটি সঙ্কটে এবং জাতির অর্জনেও যেন এই স্লোগান পুরো জাতিকে একতাবদ্ধ করে। এ প্রত্যয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেয়া ঐতিহাসিক ৭ মার্চ ভাষণ উপলক্ষে ‘জয়বাংলা’ কনসার্টের আয়োজন করে ইয়াংবাংলার সেক্রেটারিয়েট সেন্টার ফর রিসার্চ এ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)। চতুর্থবারের মতো চলা ইয়াংবাংলার এই আয়োজনে উপস্থিত ছিল এ প্রজন্মের সম্ভাবনাময় মুখগুলো। দেশাত্মবোধে নিজের চেতনকে আরও একবার ঝালিয়ে নিতে কনসার্টকে দারুণভাবে স্বাগত জানায় তরুণ প্রজন্ম। জয়বাংলা কনসার্টের এবারের আয়োজনে পর্যায়ক্রমে দেশাত্মবোধক ও নিজেদের ব্যান্ডের গান নিয়ে উপস্থিত হয় পাওয়ার সার্জ, আর্বোভাইরাস, শূন্য, নেমেসিস, ক্রিপটিক ফেইট, লালন, চিরকুট এবং আর্টসেল। কনসার্টে মহান মুক্তিযুদ্ধের উত্তাল দিনগুলোতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে থেকে সম্প্রচারিত মুক্তির প্রেরণা জাগানিয়া বেশকিছু গানও পরিবেশন করা হয়। গত সপ্তাহে সন্ধ্যায় রাজধানীর বনানী আর্মি স্টেডিয়ামে ‘জয়বাংলা কনসার্ট ২০১৮ ’-তে দেখা মিলল এক বিরল দৃশ্যের। বিকেল থেকেই রাজধানীর তরুণ প্রজন্ম মেতে থাকে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র্র্রের গানসহ আটটি ব্যান্ডের রক ধাঁচের গানে। বিকেল সাড়ে তিনটায় কনসার্ট শুরু হয় সমবেত সঙ্গীত ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে’ গানটি পরিবেশনের মাধ্যমে। এরপর ব্যান্ড দল ‘পাওয়ার সার্জ’ পরিবেশন করে রক মিউজিকের সঙ্গে ফিউশন ‘মাগো ভাবনা কেন’সহ আরও পাঁচটি গান। আর্বোভাইরাস গেয়ে শোনায় ‘আমরা করব জয়’, ‘জ্বালো আগুন জ্বালো’, ‘হারিয়ে যাও’ ছাড়া আরও দুটি গান। শূন্য ব্যান্ড শোনায় ‘চলো আজ ফিরে যাই গোধূলির ওপারে’, ‘শোনো জনগণ’, ‘জয়বাংলা বাংলার জয়’সহ আরও তিনটি গান। এরপর ব্যান্ড দল নেমেসিস আতশবাজির ঝলক দিয়ে গান শুরু করে। তখন সন্ধ্যা। স্টেডিয়ামের বড় মঞ্চ থেকে নেমে আসে ধোঁয়া। থাকে লেজার শো। নেমেসিস গায় ‘রক্ত দিয়ে নাম লিখেছি’। ব্যান্ড দল ক্রিপটিক ফেইট রক, মেটাল ও ফিউশন ধাঁচের পাঁচটি গান পরিবেশন করে। এরপর ব্যান্ড দল লালন, চিরকুট ও আর্টসেল গান পরিবেশন করে। আর্বোভাইরাস গেয়ে শোনায় ‘আমরা করব জয়’আর্বোভাইরাস গেয়ে শোনায় ‘আমরা করব জয়’ গানটি। কনসার্টে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র এবং গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর রিসার্চ এ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) ট্রাস্টি রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি এবং বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ খান বিপু। আয়োজনের শুরুতেই তারা বলেন, ‘শুধু গান নয় এই কনসার্টের মাধ্যমে আমরা তরুণদের মাঝে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসের বার্তা পৌঁছে দিতে চাই। ঐতিহাসিক ৭ মার্চ সম্পর্কে তরুণদের অবগত করতে চাই।’ উল্লেখ্য, ২০১৫ সাল থেকে প্রতি বছর জয়বাংলা কনসার্টের আয়োজন করে আসছে বাংলাদেশের তরুণদের অন্যতম বড় প্লাটফর্ম ইয়াংবাংলা। ৭ মার্চের গুরুত্ব সম্পর্কে তরুণ প্রজন্মকে জানানোর উদ্দেশ্যেই আয়োজিত হয় এই কনসার্ট। এ ছাড়াও কনসার্টের বড় অংশজুড়ে থাকে মুক্তিযুদ্ধ। প্রতিবছর কনসার্টে প্রতিটি ব্যান্ড স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের একটি গান নতুন করে পরিবেশন করে থাকে।
×