ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গা নারীকে বিয়ে করে কারাগারে!

প্রকাশিত: ০১:৩৫, ১৬ মার্চ ২০১৮

রোহিঙ্গা নারীকে বিয়ে করে কারাগারে!

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গা নারীকে বিয়ে করার সাজা ভোগ করে কাঁদছে আবদুল হাকিম নামে এক বাঁশ ব্যবসায়ী। রোহিঙ্গা নারী বিয়ে করার অপরাধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ওই ব্যক্তিকে ৪ মাসের সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে। শুক্রবার তাকে সাক্ষাত করতে গিয়ে তার এক নিকট আত্মীয় জানান, জেল হাজতে দেখতে গেলে ক্রন্দনে তার কোন কথাই বুঝতে পারিনি। শুধু বলছে, কেন এমন হল! রোহিঙ্গা নারী বিয়ে করা নিষেধ জেনেও কেন বিয়ে করতে গেলাম ইত্যাদি। জানা গেছে, রামু পূর্ব ধেছুয়া গ্রামের নুর আহমদের পুত্র আবদুল হাকিম বাঁশের ব্যবসা করে ভালই রোজগার করছিল। সুখে চলছিল তার সংসার। ছিলনা কোন কিছুর অভাব। দলে দলে রোহিঙ্গা আসার পর তার বাঁশ ব্যবসা আরও চাঙ্গা হয়ে উঠে। ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের শেড নির্মাণে ঠিকাদারের কাছে বাঁশ সরবরাহ করে প্রচুর টাকা আয় করে আবদুল হাকিম। বাঁশ সরবরাহের বাহনায় উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিরে সবসময় যাতায়াত করতেন তিনি। সেই সুবাধে ওই ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নারী রেহেনা বেগমের সঙ্গে তার প্রেমের গভীর সখ্যতা গড়ে উঠে। ঘন ঘন যাওয়া আসা করলেও ক্যাম্পে বাঁশ সরবরাহকারী হিসেবে অন্য রোহিঙ্গারা তাঁকে চেনে। অনেক সময় রাতেও প্রশাসনের অগোচরে থেকে যায় রোহিঙ্গা নারী রেহেনা বেগমের কক্ষে। রোহিঙ্গা নারীর পেমে পড়ে তার প্রথম স্ত্রী হাসিনা আক্তার ও সন্তানদের খোঁজ নেয়া এক প্রকারে দূরে সরিয়ে দেয়। তার ঘরে প্রথম স্ত্রীর ৭ সন্তান-সন্ততি রয়েছে। প্রথম মেয়েকে বিয়েও দেন তিনি। প্রথম স্ত্রীর মনে সন্দেহ হলেও স্বামী ব্যবসায়ী, হয়ত লেনদেনের কারণে ঘরে আসতে পারছেনা বলে সন্তানদের প্রবোধ দেন। এদিকে এক পর্যায়ে প্রথম স্ত্রীর অনুমতি না নিয়ে আইন বহির্ভূতভাবে রোহিঙ্গা ললনা রেহেনাকে বিয়ে করে ফেলেন তিনি। বুধবার রাতে রোহিঙ্গা শিবির থেকে রেহেনাকে নিয়ে গোপনে পালানোর সময় বেরসিক ক্যাম্প পুলিশ তাকে হাতে-নাতে ধরে ফেলে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করা হলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাকে ৪ মাসের সাজা প্রদান করেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট একরামুল ছিদ্দিক জানিয়েছেন, একদিকে তিনি প্রথম স্ত্রীর অনুমতি নেননি, অপরদিকে রোহিঙ্গা নারীকে বিয়ে করা স্থানীয়দের জন্য নিষিদ্ধ থাকা সত্বেও ওই ব্যক্তি আইন অমান্য করেছে। রোহিঙ্গা নারীকে বিয়ে করার অপরাধে তাকে ৪ মাসের সাজা প্রদান করা হয়েছে।
×