ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

এশিয়ান গেমস হকি বাছাইপর্বের ফাইনাল বাংলাদেশের বাধা আজ ওমান

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ১৭ মার্চ ২০১৮

 এশিয়ান গেমস হকি বাছাইপর্বের ফাইনাল  বাংলাদেশের বাধা আজ ওমান

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এই আসরে বরাবরই বাংলাদেশের রেকর্ড উজ্জ্বল। প্রতিবারই চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নাম লেখা হয়েছে লাল-সবুজবাহিনীর। এবারও তারাই ফেভারিট। তবে কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে দেয়ার মতো বিষয়ও আছে। আর সেই চিন্তার নাম হচ্ছে ওমান, যারা কিনা স্বাগতিক। আজ রাত সোয়া ১০টায় সুলতান কাবুস স্পোর্টস কমপ্লেক্সের টার্ফে ফাইনালে তাদের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। ফাইনাল ম্যাচ মানেই বাড়তি চাপ। কিন্তু বিস্ময়কভাবে দারুণ নির্ভার বাংলাদেশ দল। দলের সবাই আছে ফুরফুরে মেজাজে। কারণ আসল চাপটা ছিল ফাইনালে ওঠার। সেই লক্ষ্য পূরণ হয়েছে মাহবুব হারুনের শিষ্যদের। ফাইনালে নাম লেখাতে তাদের বাধা ছিল শ্রীলঙ্কা। তাদের বিরুদ্ধে ৩-২ গোলের ঘাম ঝরানো জয়ে অবশেষে ফাইনালে উঠেছে লাল-সবুজবাহিনী। অপর সেমিতে স্বাগতিক ওমান ৮-০ গোলে বিধ্বস্ত করে থাইল্যান্ডকে। আগামী ১৭ মার্চ ফাইনালে ওমানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। ফাইনালের আগে ‘এ’ গ্রুপে বাংলাদেশ ৫-০ গোলে থাইল্যা-কে, ৫-১ গোলে হংকংকে এবং ২৫-০ গোলে আফগানিস্তানকে হারায়। অপরাজিত গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিতে ওঠে। সেমিতে ৩-২ গোলে হারায় শ্রীলঙ্কাকে। পক্ষান্তরে ওমান ‘বি’ গ্রুপে চাইনিজ তাইপেকে ৪-৩ গোলে, শ্রীলঙ্কাকে ৫-১ গোলে এবং কাজাখস্তানকে ৩-০ গোলে হারিয়ে অপরাজিত গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয় এবং শেষ চারে ওঠে। সেমিতে তারা থাইল্যান্ডে ৮-০ গোলে বিধ্বস্ত করে ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। বাংলাদেশ টুর্নামেন্টে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি দলীয় গোল (৩৮) করেছে। আর সবচেয়ে কম গোলও (৩) হজম করেছে (সবচেয়ে বেশি গোল হজম করেছে আফগানিস্তান, ৬৭টি)। আর ওমান করেছে ২০ গোল, হজম করেছে ৪ গোল। গুরুত্বপূর্ণ ফাইনালের আগেরদিন (শুক্রবার) বাংলাদেশ দল সকালে প্রায় দেড় ঘণ্টার মতো অনুশীলন করে। এরপর টিম হোটেলে চলে যান জিমি-চয়নরা। দলকে চাঙ্গা করতে দুপুরের খাবারের পর শিষ্যদের নিয়ে ঘুরতে বের হন (শপিং মলে বা কোন দর্শনীয় স্থানে ঘুরতে যাবার কথা) বাংলাদেশের কোচ। এরপর বিকেলে স্থান নির্ধারণী ম্যাচ দেখতে যায় বাংলাদেশ জাতীয় হকি দল। ফাইনালের আগে এভাবেই ফুরফুরে মেজাজে ছিল বাংলাদেশ দল। উল্লেখ্য, ওমানের সঙ্গে সর্বশেষ সাক্ষাতে (ওয়ার্ল্ড হকি লীগে) বাংলাদেশ হেরেছিল ৫-৪ গোলে, তাও আবার নিজেদের টার্ফে। আজকের ফাইনালটা তাই বাংলাদেশের জন্য বদলার ম্যাচই। তবে তা নিয়ে ভাবিত নয় দল। বরং নিজেদের প্রমাণ করাটাই বড় অসীমদের কাছে। কৌশিকের ইনজুরিটা একটু সমস্যা হতে পারতো। তবে ফাইনালে খেলতে কোন বাধা নেই তার। ইনজুরি তেমন কোন সমস্যা হবে না বলেই জানা গেছে। পরিবেশ আর স্বাগতিক হওয়ার সুবিধা ওমানের পক্ষে থাকলেও ফাইনালে জয়ের স্বপ্নই দেখছে বাংলাদেশ দল। এ প্রসঙ্গে গোলরক্ষক অসীম গোপ বলেন, ‘আমাদের জয়ের কোন বিকল্প নেই। কারণ শনিবার আমাদের ফাইনাল। আমরা ম্যাচ বাই ম্যাচ ভাল খেলছি, এটাই আমাদের পরিকল্পনা ছিল। আমি আমার পজিশন থেকে শতভাগ দেবার চেষ্টা করব। অন্যরাও তাই। টার্ফে আমাদের খেলতে হবে। কিন্তু সেমিতে আম্পায়ার অনেক ঝামেলা করেছে। এটা নিয়ে ভয়ে আছি। আমাদের লড়াইটা সবার বিরুদ্ধেই।’ ওমানের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের মনোভাব ইতিবাচক। কোচের জন্য সুখকর বিষয়Ñ দলটা শৃঙ্খলার মধ্যেই আছে। ওমানের সঙ্গে বাংলাদেশের একটা ভাল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ হবে আশা করছে দলের সবাই। তবে ওমানকে কঠিন দল হিসেবেই মানছে বাংলাদেশ। কারণ পূর্বের তুলনায় অনেক এগিয়েছে তারা। তাহের জামানের মতো কোচের তত্ত্বাবধানে নিজেদের প্রস্তুত করেছে স্বাগতিক দলটি। থাইল্যান্ডের সঙ্গে সেমিতে তারা জয় পেয়েছে ৮-০ গোলে। সেটা তাদের জন্য ভাল। তারপরও বাংলাদেশ এগিয়ে থাকছে পিসি স্পেশালিস্টদের নিয়ে। যদিও আগের ম্যাচে ফিল্ড গোল নষ্ট করেছেন নাইম, জিমি, মিলন। সেটি কোচের জন্য একটু চিন্তার বিষয়। তবে চাপ নেই। ফাইনালে নির্ভার খেলবে বাংলাদেশ। কারণ সব চাপ ছিল ফাইনালে ওঠার। সে চাপ শেষ। এখন লক্ষ্য নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখার। এ প্রসঙ্গে অসীম বলেন, ‘দলের ওপর কোচের আস্থা আছে। কারণ দলটা ধারাবাহিকভাবে ভাল করছে। তাই কোচের আস্থা আছে। সর্বশেষ ওমানের সঙ্গে আমাদের স্মৃতিটা সুখকর না। জিতে প্রমাণ করতে হবে যে আমরাই সেরা।’ এখন পর্যন্ত এই আসরে বাংলাদেশ এবং ওমানই অপরাজিত আছে। তবে আজ একটি দলকে হারের স্বাদ পেতেই হবে। সেই দলটি কোন দল হবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।
×