স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ ইয়াবাসহ এক যুবককে আটক করার অভিযোগ এনে তাকে ছেড়ে দেয়ার জন্য তার বিধবা মায়ের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে এএসআই কর্তৃক ঘুষগ্রহণের বিষয়টি নিয়ে সর্বত্র ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য ঘুষখোর দারোগা আমিনুল ইসলাম স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন। ঘটনাটি জেলার উজিরপুর মডেল থানার।
আজ শনিবার সকালে উপজেলার শিকারপুরের মুন্ডপাশা গ্রামের মৃত মোশারফ খানের স্ত্রী রেবা বেগম জানান, বৃহস্পতিবার রাতে থানার দারোগা আমিনুল ইসলাম তার পুত্র শামিম খানকে (৩০) আটক করে তার দেহতল্লাশী করে। ওইসময় আমিনুলের কাছে কিছু না পেয়েও তাকে (বিধবা রেবা) জানানো হয় শামিমের কাছে ৫০পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট পাওয়া গেছে।
রেবা বেগম আরও জানান, থানার এএসআই আমিনুল ইসলাম তার পুত্র শামিমকে ছেড়ে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে মোটা অংকের টাকা উৎকোচ দাবি করেন। হতদরিদ্র হওয়ায় ছেলের মুক্তির দর কষাকষিতে শেষপর্যন্ত দারোগা আমিনুলের সাথে তার পাঁচ হাজার টাকার চুক্তি হয়। সে অনুযায়ী টাকা সাথে না থাকায় উৎকোচ আদায়কারী দারোগা আমিনুল ইসলাম তার ব্যবহৃত মোবাইলে ০১৭১০-৭৮৮৯৭৫ (বিকাশ) নাম্বারটিতে দ্রুত টাকা পাঠানোর তাগিদ দিয়ে বিষয়টি গোপন রাখার শর্ত দেয়। সে অনুযায়ী শামিমের মা তার নিকট আত্মীয় ফল ব্যবসায়ী জলিল খানকে সাথে নিয়ে ওই বাজারের বিকাশ ব্যবসায়ী রুবেল খানের দোকান থেকে পাঁচ হাজার টাকা এএসআই আমিনুলের ব্যবহৃত ওই বিকাশ নাম্বারটিতে পাঠিয়ে দেন। ঘুষগ্রহণ করেও শামিমকে ছেড়ে না দিয়ে শুক্রবার দুপুরে জেলহাজতে প্রেরণ করেন দারোগা আমিনুল ইসলাম। এরপর থেকেই অসহায় বিধবা রেবা বেগম দারোগার ঘুষগ্রহণের বিষয়টি প্রকাশ করেন।
বিকাশে উৎকোচ আদায়ের অভিযোগ অস্বীকার করে উজিরপুর মডেল থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আমিনুল ইসলাম জানান, তার বিকাশে শুক্রবার পাওনা পাঁচ হাজার টাকা পাঠিয়েছেন মুন্ডপাশা গ্রামের কাজী আমিরুল ইসলাম রিয়াজ। তবে রিয়াজ সাংবাদিকদের কাছে বলেন, দারোগা আমিনুল ইসলাম ফোন করে তাকে বিষয়টি শিখিয়ে দিয়েছেন। আমিনুলের বিকাশ নাম্বারে সে কোন টাকা পাঠাননি।
এ ব্যাপারে উজিরপুর মডেল থানার ওসি শিশির কুমার পাল জানান, ওই বিধবা নারীর কাছ থেকে এএসআই আমিনুলের আদায়কৃত উৎকোচের টাকা ফেরত দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: