ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি বাংলাদেশের অবস্থানকে আরও বেশি শক্তিশালী করবে

প্রকাশিত: ০৪:৩২, ১৮ মার্চ ২০১৮

উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি বাংলাদেশের অবস্থানকে আরও বেশি শক্তিশালী করবে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ উন্নয়নশীল দেশের প্রাথমিক স্বীকৃতি বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের অবস্থানকে আরও বেশি শক্তিশালী করবে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। তারা বলছেন, এর মধ্য দিয়ে বৈদেশিক বিনিয়োগে আস্থার জায়গায় এখন বাংলাদেশ। বিশ্লেষকরা মনে করেন, গত কয়েক দশকে বেড়েছে মাথাপিছু আয়, কমেছে দারিদ্র্যের হার, শক্তিশালী হয়েছে অর্থনৈতিক অবস্থানও। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে তলাবিহীন ঝুড়ির তকমা নিয়ে পথ চলা শুরু দক্ষিণ এশিয়ার দেশ বাংলাদেশের। এরপর আর্থ সামাজিক উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলতে পেরুতে হয় বিভিন্ন বাধা বিপত্তি। মাত্র ১২৯ ডলার মাথাপিছু আয় দিয়ে পথচলা শুরু। এখন তা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬১০ ডলারে। কমেছে দারিদ্র্য সীমার হার। অর্থনৈতিকভাবেও শক্ত অবস্থানে বাংলাদেশ। জনগণের জীবনযাত্রার মানও হয়েছে উন্নত। যার আন্তর্জাতিক প্রাথমিক স্বীকৃতি এখন উন্নয়ন শীল দেশের তালিকায় বাংলাদেশ। তাই সাধারণ মানুষের স্বপ্ন উন্নত দেশের পথে আগামীতে হাঁটবে বাংলাদেশ। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, আন্তর্জাতিক এই অর্জন বহির্বিশ্বে শুধুমাত্র দেশের ভাবমূর্তিই উজ্জ্বল করবে। পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও দরকষাকষিতে বাংলাদেশ সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে। উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি অর্জনের বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশর এই অগ্রগতি বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়াতেও সাহায্য করবে বলে মনে করেন বিশ্ব ব্যাংকের বাংলাদেশে নিযুক্ত অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন। জাতিসংঘ থেকে উন্নয়নশীল দেশের প্রাথমিক স্বীকৃতি পেলেও স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের চূড়ান্ত স্বীকৃতি পেতে বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হবে ২০২৪ সাল পর্যন্ত। দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্বের কারণেই বাংলাদেশের এ সম্মান শুধু উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়াই নয় ‘বাংলাদেশ একটি বিস্ময়।’ স্বল্পোন্নতসহ বিশ্বের সব দেশের জন্যই বাংলাদেশ একটি উদাহরণ এবং সাফল্যের মাইল ফলক। এমনটাই জানিয়েছেন জাতিসংঘসহ উন্নয়ন নীতিমালা বিশেষজ্ঞরা। শুক্রবার জাতিসংঘ বাংলাদেশ মিশনে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পত্র হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তারা বলেন, স্বপ্নজয়ের আকাক্সক্ষা আর দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্বের কারণেই বাংলাদেশ এ সম্মান অর্জন করেছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকীর দিনটি আরও একটি কারণে বাঙালীর কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। কয়েক দশক স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায় থাকার পর বাংলাদেশ স্থান পেয়েছে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায়। জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন সংস্থার অধীনে ৪ দিনব্যাপী পর্যালোচনা বৈঠক শেষে শুক্রবার উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের মর্যাদা লাভের সুখবরটি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়। বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধির হাতে এ স্বীকৃতিপত্র তুলে দেন জাতিসংঘের কমিটি ফর পলিসি ডেভেলপমেন্টের প্রধান রোনাল্ড মোরেলাস। অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের উর্ধতন কর্মকর্তারা বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার পথেই দেশে এগিয়ে চলেছে।’ এ সময়, দেশে দারিদ্র্যের হার ১৪ শতাংশের নিচে নেমে আসায় সুদৃঢ় নেতৃত্বের প্রশংসা করেন জাতিসংঘের কর্মকর্তারা। তারা বলেন, জাতিসংঘের দেয়া ২০৩০ সালের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সুদৃঢ় ভিত্তি তৈরি করেছে বাংলাদেশ। এ সময়, সিপিডি প্রধান রোনাল্ড মোলেরাস বলেন, ‘এ উন্নয়নের ধারাকে এগিয়ে নিতে অবশ্যই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে হবে।’
×