ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নেপাল ট্র্যাজেডি

নিহত প্রিয়কের বাড়িতে ইউএস-বাংলা প্রতিনিধি দল

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ১৮ মার্চ ২০১৮

নিহত প্রিয়কের বাড়িতে ইউএস-বাংলা প্রতিনিধি দল

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ নেপালে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত ফারুক হোসেন প্রিয়কের স্বজনদের সমবেদনা জানাতে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি প্রতিনিধি দল শনিবার শ্রীপুরে নিহতের গ্রামের বাড়ি গেছে। এসময় তারা নিহতের পরিবারকে জানান, সোমবারের (১৯মার্চ) পর বলা যাবে নিহতদের লাশগুলো কবে দেশে আসবে। নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গত সোমবার (১২ মার্চ) ইউএস-বাংলার বিমান দুর্ঘটনায় শ্রীপুরের নগর হাওলা গ্রামের ফারুক হোসেন প্রিয়ক ও তার শিশু সন্তান প্রিয়ংময়ী তামাররা নিহত হন। একই ঘটনায় প্রিয়কের স্ত্রী এ্যালমুন নাহার এ্যানি এবং প্রিয়কের মামাত ভাই স্থানীয় ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান ও মেহেদীর স্ত্রী সাঈদা কামরুন নাহার স্বর্ণা আহত হন। শুক্রবার আহত তিন জনকে দেশে ফিরিয়ে আনা হলেও নিহতদের লাশ ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। নিহত ফারুক হোসেন প্রিয়কের স্বজনদের সমবেদনা জানাতে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের পক্ষে কোম্পানীর নির্বাহী পরিচালক এয়ার কমোডর (অব) গোলাম তাওহীদ ও জনসংযোগ কর্মকর্তা কামরুল হাসান শ্রীপুরে নিহতের গ্রামের বাড়ি যান। তারা প্রায় ঘণ্টা খানেক প্রিয়কের বাড়িতে অবস্থান করেন। এ সময় প্রিয়কের মা ফিরোজা খাতুন বাড়িতে ছিলেন না। তিনি বিমান বিধ্বস্তে আহত হয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন প্রিয়কের স্ত্রী এ্যানি, প্রিয়কের মামাত ভাই মেহেদী হাসান ও মেহেদীর স্ত্রী স্বর্ণাকে দেখতে গিয়েছিলেন। এসময় ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তারা মেহেদী হাসানের বাবা তোফাজ্জল হোসেন, এ্যানির বাবা (প্রিয়কের শ্বশুর) সালাহ্ উদ্দিন মাহমুদ খসরুর সঙ্গে কথা বলেন এবং সমবেদনা জানান। ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম নিহতদের স্বজনদের জানান, নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত প্রিয়ক ও তার ছোট্ট শিশুকন্যা প্রিয়ংময়ী তামাররার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে এসেছি। ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমান দুর্ঘটনায় হতাহত সকল যাত্রী, পাইলট ও ক্রুদের বাড়িতে গিয়ে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ পর্যায়ক্রমে সমবেদনা জানাবে। তিনি আরও বলেন, ওই দুর্ঘটনায় আহত সবার যাবতীয় সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করবে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ। তিনি জানান, নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গত সোমবার (১২ মার্চ) ইউএস-বাংলার বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনতে কিছুটা বিলম্ব হতে পারে। তবে আগামী সোমবারের (১৯ মার্চ) পর বলা যাবে লাশগুলো কবে দেশে আসবে। প্রিয়কের চাচাত ভাই লুৎফুর রহমানসহ স্বজনরা জানান, পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতটি দেখা ও বিদেশ ভ্রমণের জন্য গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার নগর হাওলা গ্রামের আলোকচিত্রী এফএইচ প্রিয়ক ওরফে ফারুক হোসেন তার তিন বছরের একমাত্র সন্তান প্রিয়ংময়ী তামাররা ও স্ত্রী আলমুন নাহার এ্যানিকে নিয়ে ইউএস বাংলার উড়োজাহাজে চড়ে গত সোমবার (১২ মার্চ) নেপালের উদ্দেশে রওনা হন। একই বিমানে চড়ে ফারুকের মামাত ভাই ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান অমিত ও অমিতের স্ত্রী সাঈদা কামরুন্নাহার স্বর্ণা আক্তারও নেপাল যাচ্ছিলেন। তাদের পাঁচ দিনের সফর শেষ করে শুক্রবার দেশে ফিরে আসার কথা ছিল। কিন্তু তাদের সেই আনন্দ সফর পরিণত হয়েছে বিষাদে। সোমবার বিমান বিধ্বস্ত হয়ে নেপালেই নিহত হন ফারুক ও তার মেয়ে প্রিয়ংময়ী। শুক্রবার প্রিয়কের স্ত্রী এ্যানী, মেহেদী ও মেহেদীর স্ত্রী স্বর্ণাকে দেশে ফিরিয়ে এনে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। তবে ফিরে আসেনি প্রিয়ক ও তার শিশু কন্যা প্রিয়ংময়ী।
×