ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বে বছরে ৮৮ লাখ লোক যক্ষ্মায় আক্রান্ত হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ১৮ মার্চ ২০১৮

বিশ্বে বছরে ৮৮ লাখ লোক যক্ষ্মায় আক্রান্ত হচ্ছে

নিখিল মানখিন ॥ দেশে যক্ষ্মা শনাক্তে গতি বেড়েছে। যক্ষ্মা দ্রুত ও কার্যকর উপায়ে শনাক্তের জন্য আরও দশটি জিন এক্সপার্ট মেশিন সংযুক্ত করা হয়েছে। এনটিপির মাধ্যমে কফে জীবাণুযুক্ত যক্ষ্মারোগীর চিকিৎসার সাফল্যের হার ৯৪ শতাংশ। ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে যক্ষ্মারোগীর সংখ্যা বাড়ছে। দ্রুত নগরায়ন, ঘনবসতি, শিল্পাঞ্চল, বিপুল মানুষের চাপের কারণে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। দেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় ঢাকা বিভাগে যক্ষ্মারোগী শনাক্তে তুলনামূলক উচ্চহার এ পরিস্থিতির সাক্ষ্য দিচ্ছে। যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে প্রধান চ্যালেঞ্জ ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মা । শনাক্তকরণে জটিলতা শিশুদের যক্ষ্মার ক্ষেত্রে এখনও প্রধান চ্যালেঞ্জ । জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ পূর্ণ মেয়াদের চিকিৎসায় যক্ষ্মা সম্পূর্ণ ভাল হয়। তিন সপ্তাহের বেশি কাশি যক্ষ্মার প্রধান লক্ষণ। অবহেলা না করে কফ পরীক্ষা করাতে হবে। বিশেষজ্ঞরা জানান, যক্ষ্মা একটি সংক্রামক রোগ, যা মাইক্রোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস নামক অতি সূক্ষ্ম জীবাণুর মাধ্যমে সংক্রমিত হয়। প্রধানত ফুসফুসই যক্ষ্মা জীবাণু দ্বারা সর্বাধিক আক্রান্ত হয়। যক্ষ্মা জীবাণু দেহের অন্য অংশকেও আক্রান্ত করে যক্ষ্মা রোগ তৈরি করতে পারে। ফুসফুসের যক্ষ্মায় আক্রান্ত কফে জীবাণুযুক্ত রোগী যদি বিনা চিকিৎসায় থাকে, তবে বছরে প্রায় ১০ থেকে ১৫ জনকে যক্ষ্মার জীবাণু সংক্রমিত করে। জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত সকল ব্যক্তিই যক্ষ্মা রোগে ভোগে না। যে সকল ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তারাই প্রধানত যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হয়। তাই প্রতিটি রোগীর দ্রুত রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা শেষ করা জাতীয়, আঞ্চলিক ও বিশ্বের যক্ষ্মা প্রতিরোধের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপায়। বিশ্বে প্রতিবছর ৮.৮ মিলিয়নের বেশি লোক যক্ষ্মায় আক্রান্ত হচ্ছে। ১.৪ মিলিয়ন লোক প্রতিবছর যক্ষ্মায় মারা যায়। ২২ দেশে বিশ্বের মোট যক্ষ্মা রোগীর শতকরা ৮০ ভাগ বাস করে। মোট যক্ষ্মা রোগীর শতকরা ৪০ ভাগ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে বাস করে। জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচীর বিশেষজ্ঞরা জানান, যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে এ সময়ে প্রধান চ্যালেঞ্জ ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মা বা এমডিআর যক্ষ্মা। এমডিআর যক্ষ্মার অন্যতম প্রধান কারণ যক্ষ্মায় আক্রান্ত রোগীর অনিয়মিত ওষুধ সেবন। এমডিআর যক্ষ্মার ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেক বেশি। এর চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদী, জটিল ও ব্যয়বহুল। স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, পুষ্টিহীনতা, শহরের বস্তি, ভাসমান এবং নগর ও মহানগরীর বিপুল জনগোষ্ঠী যক্ষ্মা কর্মসূচীর সফলতাকে বাধাগ্রস্ত করছে। এনটিপির ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কনসালট্যান্ট ডাঃ মজিবুর রহমান বলেন, যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে এখন আমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মা। এছাড়া আগামী দিনে যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে তা হলো কফে জীবাণুযুক্ত ফুসফুসের যক্ষ্মা, ফুসফুসবহির্ভূত যক্ষ্মা, শিশু যক্ষ্মা শনাক্তরণে সমস্যা ও দারিদ্র্যের কারণে যক্ষ্মার প্রকোপ বৃদ্ধি।
×