ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

দিনাজপুরে মোবাইলের আলো জ্বালিয়ে চলছে রোগীর অপারেশন

প্রকাশিত: ০১:১৩, ১৯ মার্চ ২০১৮

দিনাজপুরে মোবাইলের আলো জ্বালিয়ে চলছে রোগীর অপারেশন

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর ॥ টানা পাঁচদিন বিদ্যুৎবিহীন দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডসহ গাইনী বিভাগের প্রসবকালীন কক্ষ। গত ১৪ মার্চ থেকে বিদ্যুৎ নেই। বাধ্য হয়েই সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত অন্ধকারে থাকছেন রোগীরা। আর বিদ্যুতের অভাবে মোবাইলের লাইট জ্বালিয়ে চলছে রোগীর অপারেশন। হাসপাতালের মহিলা রোগীরা জানান, রাতে ভুতুড়ে অন্ধকারের কারণে তারা ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে থাকেন। শিশুরা অন্ধকারে ভয়ে কান্নাকাটি করে। দিনে প্রচন্ড গরমে রোগীদের নাভিশ্বাস ওঠে। এভাবেই অবর্ণনীয় দুর্ভোগে ৫ দিন ধরে চলছে বিরামপুর হাসপাতালের মহিলা ও শিশু ওয়ার্ড। বিরামপুর পৌর এলাকার বাবুল হোসেন জানান, তার স্ত্রী বিলকিস বেগম প্রসব বেদনা নিয়ে গত শনিবার বিকালে বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। বিদ্যুৎ না থাকায় রাতে হাসপাতালের স্টাফরা তার স্ত্রীকে গাইনী বিভাগের প্রসবকালীন অন্ধকার কক্ষে নিয়ে যান। অবস্থা বেগতিক দেখে অন্যান্য স্টাফরা মোবাইলের লাইট জ্বালিয়ে কিছুটা হলেও অন্ধকার দূর করেন। পরে তার একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। হাসপাতালের এই অবস্থার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাহাদত হোসেন বলেন, ‘হাসপাতালে বর্তমানে সংস্কার কাজ চলছে। পৃথক দুই ঠিকাদার কাজ পাওয়ায়, দুই পক্ষের সমন্বয়ের অভাবে অনেক ভোগান্তি হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘দিনাজপুরের তাজ ট্রেডার্সের শ্রমিকরা গ্রিলের দরজা ফিটিংয়ের সময় গত বৃহস্পতিবার (১৫ মার্চ) বিদ্যুৎ লাইন ফল্ট হয়ে মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। অপরদিকে ইলেকট্রিক ও পানির লাইন ঠিকাদারের লোকজন ওই মেরামত কাজ না করেই পালিয়ে গেছে। তিনি যোগাযোগ করেও তাদেরকে কাজে ফেরাতে পারছেন না।’ দিনাজপুরের তাজ ট্রেডার্সের সাইট ম্যানেজার প্রাণ কুমার বলেন, ‘বিদ্যুতের লাইন ইলেকট্রিক ও পানির লাইন ঠিকাদারের লোকজন নষ্ট করে গেছে।’ ইলেকট্রিক ও পানির লাইন ঠিকাদারের ইলেকট্রিশিয়ান তপু রায় বলেন, ‘ওই লাইন তাজ ট্রেডার্সের গ্রিল লাগাতে গিয়ে তারাই নষ্ট করে ফেলেছে।’ দিনাজপুর স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী শামীম আহমেদ জানান, দুই ঠিকাদারের কাজে সমন্বয়হীনতার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। তবে তিনি লাইন মেরামতের জন্য আলাদা বিদ্যুৎ মিস্ত্রি পাঠিয়েছেন। দিনাজপুরের সিভিল সার্জন ডা. মওলা বক্স চৌধুরী জানান, তিনি রবিবার (১৮ মার্চ) বিষয়টি জানতে পেরেছেন। এই ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন।
×