ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ইন্ডিয়ান ওয়েলসে নওমি ওসাকার বাজিমাত

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ২০ মার্চ ২০১৮

ইন্ডিয়ান ওয়েলসে নওমি ওসাকার বাজিমাত

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শেষ পর্যন্ত বাজিমাত করলেন নাওমি ওসাকাই। দুর্দান্ত খেলেই ইন্ডিয়ান ওয়েলসের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করলেন তিনি। রবিবার টুর্নামেন্টের ফাইনালে জাপানের অবাছাই নাওমি ওসাকা ৬-৩ এবং ৬-২ গেমে পরাজিত করেন রাশিয়ার ২০তম বাছাই দারিয়া কাসাতকিনাকে। সেইসঙ্গে জাপানের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ইন্ডিয়ান ওয়েলসের শিরোপা নিজের শোকেসে তুললেন ওসাকা। অথচ, অবাছাই হিসেবেই ইন্ডিয়ান ওয়েলসে মিশন শুরু করেছিলেন নাওমি ওসাকা। ইতিহাসের মাত্র চতুর্থ অবাছাই খেলোয়াড় হিসেবে ইন্ডিয়ান ওয়েলসের ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। তার আগে সর্বশেষ এই কীর্তি গড়েছিলেন কিম ক্লাইস্টার্স। ২০০৫ সালে অবাছাই খেলোয়াড় হিসেবে ইন্ডিয়ান ওয়েলসের ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিলেন কিম ক্লাইস্টার্স। দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় পর অবাছাই খেলোয়াড় হিসেবে ইন্ডিয়ান ওয়েলসের ফাইনালে উঠেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করলেন নাওমি ওসাকা। বর্তমান বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের ৪৪ নম্বর খেলোয়াড় নাওমি ওসাকা এদিন প্রতিপক্ষকে হারাতে সময় নেন মাত্র ৭০ মিনিট। এমন জয়ের পর দারুণ রোমাঞ্চিত নাওমি ওসাকা। তবে দারিয়া কাসাতকিনার বিপক্ষে ম্যাচের আগে থেকে সতর্ক ছিলেন তিনি। এ প্রসঙ্গে ম্যাচের শেষে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে জাপানী তারকা ওসাকা বলেন, ‘আমি ফাইনালের আগে থেকেই জানতাম যে, প্রতিটি পয়েন্টের জন্যই লড়াই করবে সে। তাই আমি বিচলিত ছিলাম না মোটেও। বরং কোর্টে তার বিপক্ষে সবসময়ই সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছি আমি।’ জাপানে জন্মগ্রহণ করেছিলেন নাওমি ওসাকা। কিন্তু তিন বছর বয়স থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন তিনি। যে কারণেই আমেরিকা-জাপানের দ্বৈত নাগরিক ওসাকা। কাসাতকিনাকে পরাজিত করার পর ওসাকা বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে ফাইনাল ম্যাচে যে খুব হিট করব সেরকম কোন পরিকল্পনা ছিল না আমার। আমি বরং চেয়েছিলাম সে কী করে? তার কার্যক্রম দেখেই সিদ্ধান্ত নেয়ার পরিকল্পনা নিয়ে কোর্টে নামি আমি।’ ওসাকার মতো দারিয়া কাসাতকিনাও প্রথমবারের মতো ইন্ডিয়ান ওয়েলসের ফাইনালের টিকেট কাটেন এবার। ওসাকা-কাসাতকিনা উভয়েরই বয়স একুশের কম। এর ফলে একটা রেকর্ডও হয়ে গেল তাদের। ১৭ বছরের মধ্যে এবারই প্রথম ফাইনালে খেলা দুই খেলোয়াড়েরই বয়স একুশের নিচে। তাদের আগে ২০০১ সালে একুশ বছরেরও কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে ফাইনাল খেলেছিলেন কিম ক্লাইস্টার্স এবং সেরেনা উইলিয়ামস। আমেরিকান টেনিসের জীবন্ত কিংবদন্তি সেরেনা উইলিয়ামস এবছরও অংশ নিয়েছেন এই টুর্নামেন্টে। কিন্তু খুব বেশিদূর এগুতে পারেননি বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের সাবেক এই শীর্ষ তারকা। টুর্নামেন্টের তৃতীয় পর্ব থেকেই ছিটকে যান তিনি। তাও আবার বড় বোন ভেনাস উইলিয়ামসের কাছে হেরে। গত বছর অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে সর্বশেষ কোন মেজর শিরোপা জয়ের স্বাদ পেয়েছিলেন সেরেনা উইলিয়ামস। এরপর সন্তান জন্ম দেয়ার কারণে ১৪ মাস কোর্টের বাইরে ছিটকে পড়েছিলেন তিনি। এই সময়ে দ্বৈতে খেললেও মহিলা এককে প্রতিযোগিতামূলক কোন ম্যাচ খেলেননি সেরেনা উইলিয়ামস। দীর্ঘ বিরতির পর এই ইন্ডিয়ান ওয়েলস দিয়েই কোর্টে ফিরলেন কৃঞ্চকলি। তবে মজার ব্যাপার হলো, ইন্ডিয়ান ওয়েলসে যখন সেরেনা উইলিয়ামস প্রথমবারের মতো অংশ নেন তখন জন্মই হয়নি দারিয়া কাসাতকিনার। অথচ, এবার সেই টুর্নামেন্টেরই ফাইনাল খেললেন রাশিয়ান তারকা। শুধু তাই নয়, ২০ বছরের এই তরুণী টানা দুই টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেললেন। এর আগে দুবাইয়েও ফাইনাল খেলেছিলেন তিনি। তবে ইন্ডিয়ান ওয়েলসের ফাইনালের মতো বড় মঞ্চে কিছুটা বিচলিত ছিলেন কাসাতকিনা। তবে শিরোপাজয়ী ওসাকাকেই কৃতিত্ব দিলেন রাশান তারকা। এ বিষয়ে ম্যাচের শেষে তিনি বলেন, ‘আমার চেয়ে অনেক বেশি ভাল খেলেছে ওসাকা। তাই যোগ্য খেলোয়াড় হিসেবেই টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতেছে সে। তবে অবশ্যই ম্যাচের শুরুতে আমরা উভয়ই কিছুটা বিচলিত ছিলাম। এর মূল কারণ এখন পর্যন্ত খেলা এটাই আমার সবচেয়ে বড় ফাইনাল।’
×