ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

গরিবরাও আইনী সহায়তা পেতে পারে- সেটা তাদের বোঝাতে হবে ॥ ড. কামাল

প্রকাশিত: ০৬:৩২, ২০ মার্চ ২০১৮

গরিবরাও আইনী সহায়তা পেতে পারে- সেটা তাদের বোঝাতে হবে ॥ ড. কামাল

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘অন্যায় অধিকার রোধ এবং অন্যায়ের প্রতিকার করার উদ্দেশে আইনের ব্যবহার করতে হবে। আইনের মাধ্যমে মানবাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। সর্ব সাধারণের জন্য আইনী সহায়তা নিশ্চিতকরণে তরুণ আইনজীবীদের এগিয়ে আসতে হবে।’ সোমবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নবাব নওয়াব আলী সিনেট ভবনে ‘জেন্ডার, অধিকার ও মতপ্রকাশ: বড় শহরসমূহে ন্যায়বিচারে অভিগম্যতা’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান। দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনটি যৌথভাবে আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুষদ ও ব্লাস্ট। ড. কামাল হোসেন বলেন, দিন দিন শহরের বস্তিবাসীর সমস্যাগুলো ব্যাপক আকারে দেখা দিচ্ছে। আইনী সহায়তা নেয়ার ক্ষেত্রে তারা সচেতন নয়। তারা মনে করে আইন শুধু অভিজাত শ্রেণীর লোকদের জন্য। এক্ষেত্রে তরুণ আইনজীবীরা দায়িত্ব নিয়ে আইনের বিষয়ে সচেতন করতে পারে। গরিব লোকজনও যে আইনের সহায়তা পেতে পারে সেটা তাদের জানাতে হবে। কীভাবে আইনের সহায়তা নিতে হয় সেটাও তাদের বোঝাতে হবে। বর্তমানে তরুণ আইনজীবীদের অনেকে মানবাধিকার কর্মকা-ে এগিয়ে আসছে। এটি একটি বড় অগ্রগতি। তিনি আরও বলেন, কাউকে চাকরিচ্যুত করার ক্ষেত্রে আইনের সকল বিষয় ঘেঁটে দেখতে হবে। হাজার হাজার শ্রমিককে ছাঁটাই করা অন্যায়। শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবি আসতেই পারে। এর জন্য সমাধানের জন্য আলোচনা করা যেতে পারে। তবে এভাবে ছাঁটাই করা আইয়ুব খানের মার্শাল ল’র চেয়ে ভিন্ন কিছু নয়। তাদের যৌক্তিক দাবি তারা উপস্থাপন করতে পারে। এক্ষেত্রে তাদের আইনী সহায়তা দিতে হবে। আইনের অমানবিক প্রয়োগ থেকে শ্রমিকদের বাঁচাতে হবে। সম্মেলনের প্রথম দিনে মোট চারটি সেশন অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনে সার্বিক সহযোগিতা করেছে কিংডম অব নেদারল্যান্ডস এ্যাম্বাসি। সকাল নয়টায় শুরু হয়ে প্রথম দিনের কার্যক্রম বিকেল পাঁচটায় শেষ হয়। সকাল নয়টায় আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোঃ রহমত উল্লাহর সভাপতিত্বে ‘দ্য কনসেপ্ট অব দ্য সিটি: মিটিং জাস্টিস নিডস এ্যান্ড গ্যাপস’ শীর্ষক প্রথম সেশন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন- সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন, কিংডম অব নেদারল্যান্ডস এ্যাম্বাসির এ্যাম্বাসেডর লিওনি মার্গারেতা কুয়েলিনায়ের, গ্লোবাল লিগ্যাল এমপাওয়ারমেন্ট নেটওয়ার্ক এর সিনিয়র উপদেষ্টা মারলন জে. ম্যানুয়্যাল, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট-এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর সারা হোসেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. ফেরদৌস জাহান এবং ব্লাস্ট’র পরামর্শক ব্যারিস্টার ফারিয়া আহমাদ। ‘জেন্ডার এ্যান্ড এ্যাকসেস টু দ্য জাস্টিস ইন দ্য সিটি’ শীর্ষক দ্বিতীয় সেশন অনুষ্ঠিত হয় বেলা ১১টায়। ব্লাস্ট’র প্রধান আইন উপদেষ্টা ও সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগের সাবেক বিচারপতি নিজামুল হকের সভাপতিত্বে দ্বিতীয় সেশনে বক্তব্য রাখেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. বোরহান উদ্দিন খান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের ডেপুটি কমিশনার ফরিদা ইয়াসমিন, ন্যাশনাল লিগ্যাল এইড সার্ভিস সেন্টারের ডেপুটি পরিচালক আবেদা সুলতানা, নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের কো-অর্ডিনেটর ড. বিলকিস বেগম, মাদারীপুর লিগ্যাল এইড এ্যাসোসিয়েশনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর ইব্রাহিম মিয়া এবং মহাখালীর কুনিপাড়ার নুরুন নাহার নওরিন। সেশনের শেষ পর্যায়ে প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। দুপুর দুইটায় শুরু হয় ‘এ্যাকসেস টু হেল্থকেয়ার, লিভলিহুড এ্যান্ড শেল্টার’ শীর্ষক তৃতীয় সেশন।
×