ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকা-বরিশাল বিমান রুটে বাড়ছে যাত্রী, বাড়ছে ফ্লাইট

প্রকাশিত: ০৬:৪৩, ২০ মার্চ ২০১৮

ঢাকা-বরিশাল বিমান রুটে বাড়ছে যাত্রী, বাড়ছে ফ্লাইট

খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল ॥ ঢাকা-বরিশাল বিমান রুট এখন পুরোপুরি লাভজনক হয়ে উঠেছে। বর্তমান সরকারের সময়ে তৃতীয় সমুদ্রবন্দরসহ দক্ষিণাঞ্চলে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠায় যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিমান সংস্থাগুলোও এখন ঢাকা-বরিশাল রুটের ব্যাপারে অনেক মনোযোগী। এখন প্রবাস থেকেও সিডিউল মিলিয়ে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীরা ঢাকা হয়ে সরাসরি বরিশাল বিমানবন্দরে আসা যাওয়া করছেন। ফলে অনেক সময় সাশ্রয়ী হচ্ছে। অথচ লোকসানের অজুহাতে ২৩ বছরে একাধিকবার বিমান সার্ভিস গুঁটিয়ে নেয়া হয়েছিল। সূত্র মতে, গ্রীষ্মকালীন শিডিউল অনুযায়ী আগামী ২৫ মার্চ থেকে ইউএস-বাংলা সপ্তাহে চার দিন ও বিমান বাংলাদেশ তিন দিন ফ্লাইট চালাবে। অর্থাৎ শুক্রবার ছাড়া সপ্তাহের অন্য ছয় দিনই ঢাকা-বরিশাল রুটে বিমানে যাতায়াতের সুযোগ থাকছে। ঘোষিত সিডিউল অনুযায়ী ইউএস-বাংলা সপ্তাহে শনি, সোম, বুধ ও বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটে ফ্লাইট পরিচালনা করবে। অন্যদিকে বিমান বাংলাদেশ রবিবার বেলা ১১টা ২৫ মিনিটে, মঙ্গলবার দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে এবং বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে তাদের ফ্লাইট চালাবে। নতুন সিডিউলে বাংলাদেশ বিমানের সর্বনিম্ন একমুখী ভাড়া ২৭০০ টাকা। ইউএস-বাংলা’র সর্বনিম্ন ভাড়া ৩৬০০ টাকা। এর মধ্যে যারা আগে টিকেট ক্রয় করবেন তাদের জন্য সর্বনিম্ন ভাড়ায় এবং যাত্রার দিন এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে ভাড়াও পর্যায়ক্রমে বাড়তে থাকবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। বিমান বাংলাদেশের বরিশাল ব্যবস্থাপক মোঃ গোলাম মোস্তফা জানান, চলতি অর্থবছরের চার মাস বাকি থাকলেও তারা এই রুটে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ২০ ভাগ অতিরিক্ত রাজস্ব আয় করেছেন। তিনি আরও বলেন, বরিশাল বিমানবন্দরে রানওয়েতে লাইটিংয়ের ব্যবস্থা নেই। এজন্য দিনের আলো থাকতে থাকতেই তাদের ফ্লাইট পরিচালনার কাজ শেষ করতে হয়। সন্ধ্যার পর একটি ফ্লাইটের চাহিদা থাকলেও রানওয়েতে লাইটিংয়ের ব্যবস্থা না থাকায় তাদের পক্ষে এ সময় ফ্লাইট চালানো সম্ভব হচ্ছে না। ইউএস-বাংলার বরিশাল স্টেশন ম্যানেজার সাইফুর রহমান জানান, বিমানের আসনের চেয়ে যাত্রী সংখ্যা বেশি। তাই গ্রীষ্মকালীন নতুন সিডিউলে ফ্লাইট সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। ইউএস-বাংলা কর্তৃপক্ষ সপ্তাহের প্রতিদিনই এ রুটে ফ্লাইট চালানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ঢাকা-বরিশাল রুটের যাত্রীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, তারা এয়ারলাইন্সের সার্ভিসে সন্তুষ্ট। কিন্তু তাদের মতে বিমানবন্দরের পরিবেশ অত্যন্ত নাজুক। টয়লেটসহ অন্যান্য সকল সুবিধা খুবই নিম্নমানের। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল বিমানবন্দরের উন্নয়নের ব্যাপারে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ চরম উদাসীনতা দেখিয়ে চলেছে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন যখন এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন তখন কিছু উন্নয়ন কাজ শুরু হয়। কিন্তু সস্প্রতি তার দফতর বদল হওয়ায় সেসব উন্নয়ন কাজ থমকে গেছে। সম্প্রতি সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যানসহ প্রধান ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বিমানবন্দর পরিদর্শন করলেও এসব কাজের সামান্যতম অগ্রগতি নেই। বরিশাল মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি নিজাম উদ্দিন জানান, নির্মাণাধীন তৃতীয় সমুদ্র বন্দরের বিবেচনায় এ বিমানবন্দরের উন্নয়নে কর্তৃপক্ষ চরম উদাসীনতা দেখাচ্ছে। তিনি বলেন, চেম্বারের সভাপতি হিসেবে কর্তৃপক্ষের কাছে এখানকার ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে বারবার দাবি জানিয়েও সুফল মিলছে না। বিমানবন্দরে দিবা-রাত্রি যাতে যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী বিমান ওঠানামা করতে পারে সে লক্ষ্যে সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে এ অঞ্চলে বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এজন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
×